কলেজে বাংলা নববর্ষ উদযাপন আয়োজিত অনুষ্ঠানমালার বিবরণ দিয়ে প্রতিবেদন | প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন | ভাষা ও শিক্ষা

কলেজে বাংলা নববর্ষ উদযাপন আয়োজিত অনুষ্ঠানমালার বিবরণ দিয়ে প্রতিবেদন | প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন | ভাষা ও শিক্ষা কোনো প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব প্রশাসনিক কাঠামো, কার্যাবলি, ঘটনা বা অবস্থা যাচাই করে সে সম্পর্কিত তথ্য, তত্ত্ব, উপাত্ত তুলে ধরে যে বিবরণী প্রণয়ন করা হয়, তাকেপ্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন বলে। এই ধরনের প্রতিবেদন কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক আদিষ্ট হয়ে লেখা হয়।

কলেজে বাংলা নববর্ষ উদযাপন আয়োজিত অনুষ্ঠানমালার বিবরণ দিয়ে প্রতিবেদন

 

তারিখ : ১৫ / ০৪ / ০৯.

বরাবর

অধ্যক্ষ,

…সরকারি কলেজ,

কুমিল্লা।

বিষয় : কলেজে বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানমালার বিবরণ দিয়ে প্রতিবেদন।

মহোদয়,

আপনার প্রদত্ত ১৪ এপ্রিল ২০০৯ তারিখের স্মারক নং কুসক- ২২/০৯ পত্রের আদেশক্রমে কলেজে বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানমালার একটি প্রতিবেদন আপনার সদয় অবগিতর জন্য পেশ করছি। বাংলা নববর্ষ বাঙালির জাতীয় জীবনে আজ গণমুখী ও সর্বজনীন উৎসবে রূপ নিয়েছে। আমাদের চিন্তা-চেতনা, বোধ- বুদ্ধি, জীবন বিশ্বাস ও ঐতিহ্যের আবহে নববর্ষ আনন্দ ও উৎসবের দিন। নববর্ষ বাঙালির উৎসবের ধারাবাহিকতায় আনন্দে মেতে ওঠার নতুন দিন। বাংলা নববর্ষ জাতীয় জীবনের সবচেয়ে বড় গণমুখী, সার্বজনীন উৎসব।

 

কলেজে বাংলা নববর্ষ উদযাপন আয়োজিত অনুষ্ঠানমালার বিবরণ দিয়ে প্রতিবেদন

 

এদিনেচিরচেনা অতি আপন ঐতিহ্যের ছোঁয়ায় বাংলার হাটে মাঠে ঘাটে, শহরে বন্দরে মহা আনন্দে মেতে উঠে সকল মানুষ। এমনি করেই আনন্দে মেতে উঠেছিল … কলেজের শিক্ষার্থীরা। প্রতি বছরের মতো এবারও কলেজ নববর্ষের সূর্যোদয় লগ্নে সুর মূর্ছনার মধ্য দিয়ে নববর্ষকে বরণ করে নেয়। এ উপলক্ষে কলেজের ছাত্র সংসদের উদ্যোগে এক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানমালা—

শোভাযাত্রা ॥ ভোর ৫:৩০টা ॥ স্থান- কলেজ প্রাঙ্গণ ॥

পান্তা ও দেশজ ফলমূল ভোজ । সকাল ৭:০০টা বর্ষবরণ-এসো হে বৈশাখ ॥ বৈশাখী গান ও নৃত্য পরিবেশনা ॥ ৭:৩০ ॥ আলোচনা সভা ॥ জাতীয় জীবনে নববর্ষের প্রভাব ॥ ৯.০০

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ॥ ১0.00 ॥

শহর প্রদক্ষিণ ও বৈশাখী মেলায় অংশগ্রহণ এবং সমাপণী ॥ ১১.00 ॥

 

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

বিবরণ

ভোর না হতে ‘এসো হে বৈশাখ’ শিরোনামে বিভিন্ন ধরনের পোস্টার, ফেস্টুন নিয়ে শিক্ষার্থীরা কলেজ প্রাঙ্গণে হাজির হতে শুরু করে। একাদশ শ্রেণির মেয়েরা পরেছিল লালপেড়ে সাদা শাড়ি, ছেলেদের পোশাক ছিল বাহারি পাঞ্জাবি, অপরদিকে দ্বাদশ শ্রেণির মেয়েরা হাতের বিচিত্র কারুকাজ করা শাড়ি ও খোঁপায় গুঁজেছিল ফুল, ছেলেরা সাদা পাঞ্জাবি। ৪

বর্ষবরণ উৎসবে ‘এসো, এসো, এসো হে বৈশাখ’, ‘হে নতুন দেখা দিক’ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে ভোরে শুরু হয় বাংলা নববর্ষ উদযাপনের আনুষ্ঠানিকতা। অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন বাংলা সাহিত্যের শিক্ষক জনাব মফিজুল ইসলাম। তিনি তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন— ‘নববর্ষ সমগ্র মানুষের কাছে নবজীবনের দ্বার উন্মোচিত করে দিক। নতুন বছর যেন মুষ্টিমেয় ধনীর ভোগবিলাসের সঙ্কীর্ণ উল্লাসে পরিণত না হয়; দারিদ্র্য লাঞ্ছিত পীড়িত মানুষের নিষ্ফল বিলাপে যেন পৃথিবী বিষণ্ণ না হয়ে ওঠে; যুদ্ধদীর্ণ বিশ্বের পাশবশক্তির তাণ্ডব যেন শান্তির শুভশক্তির কাছে পরাভূত হয়।

আজ নববর্ষের এই শুভক্ষণে, আসুন, কবিকণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে আমরা বলি, ‘যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ, / প্রাণপণে পৃথিবীর সরাবো জঞ্জাল, / এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাবো আমি / নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার। এছাড়া, আলোচনা-সভায় জাতীয় জীবনে পহেলা বৈশাখের ভূমিকা সম্পর্কে আলোচনা করেন বিশিষ্ট্য কবি ও সাহিত্যিকগণ!

 

কলেজে বাংলা নববর্ষ উদযাপন আয়োজিত অনুষ্ঠানমালার বিবরণ দিয়ে প্রতিবেদন

 

তারপরই শুরু হয় বৈশাখী গান ও নৃত্যানুষ্ঠান। রবীন্দ্রনাথের “এসো হে বৈশাখ, এসো এসো’ গানটি দলীয় নৃত্যেপরিবেশন করা হয়। নজরুলের কয়েকটি দেশাত্মবোধক গানও শিল্পীরা পরিবেশন করে। দলীয় ও একক গানের সুরের

দোলায় হলভর্তি শ্রোতৃমণ্ডলী আনন্দে উদ্বেল হয়। মুহুর্মুহু করতালি দিয়ে তারা সঙ্গীত শিল্পীদের উৎসাহিত করে। সকালের অনুষ্ঠান শেষে সকল শিক্ষার্থী স্থানীয় বৈশাখী মেলায় অংশগ্রহণ করে। আম্রকাননের ছায়াস্নিগ্ধ পরিবেশে শাখী মেলায় অংশ বৈশাখী মেলার আয়োজন অত্যন্ত সুন্দর হয়ে উঠেছিল। বাঁশ, বেত ও পাটের তৈরি নানা গ্রামীণ ঐতিহ্যভিত্তিক জিনিসপত্র, স্বদেশি খাবার, নানা ধরনের পিঠাপুলি, রকমারি খেলনাসামগ্রী, নাগরদোলা, পুতুলনাচ, সার্কাস, ম্যাজিক ইত্যাদির অভূতপূর্ব আয়োজনে অত্যন্ত বর্ণাঢ্য উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছিল। দীর্ঘদিন পর এমন প্রাণবন্ত অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পেরে ছাত্র-ছাত্রী মুগ্ধ হয়েছিল। মেলায় অংশগ্রহণের মধ্য দিয়েই আয়োজিত অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘটে। সবদিক বিচারে বর্ষবরণের সকল অনুষ্ঠান সার্থক হয়েছে। বিনীত প্রতিবেদক / আপনার বিশ্বস্ত

দ্বাদশ শ্রেণি, বিজ্ঞান বিভাগ … কলেজ, কুমিল্লা।

আরও দেখুন:

Leave a Comment