Site icon Bangla Gurukul [ বাংলা গুরুকুল ] GOLN

সে কহে বিস্তর মিছা | ভাব-সম্প্রসারণ | ভাষা ও শিক্ষা

সে কহে বিস্তর মিছা | ভাব-সম্প্রসারণ | ভাষা ও শিক্ষা , ভাবসম্প্রসারণ মানুষ কখনো কখনো অল্প কথায় মনের ভাব প্রকাশ করে । এই ভাবকে ঠিক রেখেই এর সম্প্রসারণ করতে হয় । ভাবসম্প্রসারণ অনেকটা ভাবার্থের বিপরীত । কোনো পদ্যাংশ বা গদ্যাংশের ভেতর একটি গূঢ় তাৎপর্য অত্যন্ত স্বপ্নায়তনে থাকে । তাকে বিস্তৃতভাবে প্রকাশ করার নামই ভাবসম্প্রসারণ। ইংরেজিতে এটিকে Amplification বা Explanation of idea বলে ।

সে কহে বিস্তর মিছা, যে কহে বিস্তর

বাচাল ব্যক্তি সচরাচর বেশি মিথ্যা বলে। আর যে কম কথা বলে, তাকে মিথ্যাও কম বলতে হয়। সত্যের মধ্যে কোনো গোপনীয়তা নেই। যা ঘটে তা বিকৃত না করে অকপটভাবে প্রকাশ করলে মিথ্যার আশ্রয় নিতে হয় না। কিন্তু আসল জিনিস লুকিয়ে কিংবা কোনো বিষয়ের ভাব-সত্যকে আড়াল করে বলতে গেলে অনেক কথা বলতে হয়। আর অতিরিক্ত কথা বলতে গেলেই মিথ্যার আশ্রয় নিতে হয়। যে বেশি কথা বলে আমরা তাকে বাচাল বলি। আমাদের সমাজজীবনে এরূপ বেশি কথা বলা লোকের সংখ্যা নেহাত কম নয়। এরা সমাজে আছে বলেই সমাজের বিভিন্ন সমস্যা আরও জটিল আকার ধারণ করে। বাচাল ব্যক্তিরা প্রচুর কথা বলে।

 

 

যে-কোন বিষয়েই কথা বলতে গেলে তারা যুক্তিতর্কের পরোয়ানা না করে অনর্গল বলতে থাকে। অনেক সময় নিজের সুবিধার জন্যে কিংবা নিজের কথার সত্যতা প্রমাণের জন্য মিথ্যার আশ্রয় নেয় এবং ছোট্ট একটি বিষয়কে অতিরঞ্জিত করে বর্ণনা করে তাকে সত্যে পরিণত করার চেষ্টা করে। নানাভাবে ছলচাতুরী করে নিজেকে অপরের কাছে জাহির করে স্বার্থ উদ্ধার করে। এদের এ স্বভাব সম্পর্কে অনেকেই জানলেও তারা কিছুই বলে না। অথচ এদের যদি সামাজিকভাবে আমরা সংশোধন না করি, তবে এদের কারণে সমাজে বিশৃঙ্খলতা লেগেই থাকবে।

 

 

সুতরাং আমাদের উচিত যে বেশি কথা বলে তার কথায় গুরুত্ব দেয়ার আগে তা পর্যাপ্ত যাচাই বাছাই করা। তাহলেই এদের বক্তব্য থেকে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। বস্তুত যে কোনো বিষয়ে খুব বেশি কথা বললে তার অন্তঃসারশূন্য রূপটিই প্রকট হয়ে ওঠে। কর্মের ভাণ্ডার যাদের শূন্য; নিষ্ঠা, সাধনা, শ্রমে যারা বিমুখ; যাদের জ্ঞান কম, তারাই যে-কোনো বিষয়কে অতিরঞ্জিত করে বর্ণনা করে। এতে করে মানুষের মধ্যে সন্দেহেরই উদ্রেক হয়। কেননা সত্যকে কখনো বাড়িয়ে বলার প্রয়োজন হয় না। যে প্রকৃতই গুণী তার প্রকাশ হয় বিনীত, পরিমিত ও রুচিশীল।

 

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

সে কখনো বেশি কথা বলে নিজেকে জাহির করার চেষ্টা করে না। উপরন্তু মিতভাষী ব্যক্তিকে বাধ্য হয়ে মিথ্যে বলতে হলেও মিতভাষণের কারণে তার মিথ্যের পরিমাণও হয় কম। অল্প কথা বলে মিথ্যাকে পরিহার করলে নিজের এবং দশের উভয়েরই মঙ্গল। পক্ষান্তরে বিস্তর কথা কেবল বিস্তর সমস্যারই সৃষ্টি করে। সুতরাং বিস্তর কিছু বলা বা করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

আরও দেখুন:

Exit mobile version