বিদ্যার সাধনা শিষ্যকে নিজে অর্জন – ভাব-সম্প্রসারণের একটি নমুনা তৈরি করে দেয়া হল। আগ্রহীরা এখন থেকে ধারণা নিয়ে নিজের ভাষায় নিজস্ব ভাষণ তৈরি করবেন। নানা ধরনের বিষয় ভাব-সম্প্রসারণের উপজীব্য হতে পারে। মানব-প্রকৃতির বিচিত্র দিক, ঈশ্বরানুভূতি, প্রকৃতির রূপ-রস ও মহিমা এবং সৃষ্টি-রহস্য ইত্যাদি অজস্র বিষয় ভাব-সম্প্রসারণের জন্যে প্রদত্ত গদ্যাংশে বা পদ্যাংশে থাকতে পারে। অনেক সময় মূল ভাবটি রূপক বা প্রতীকের আড়ালে থেকে যায়। সেসব ক্ষেত্রে রূপক-বিশ্লেষণ বা প্রতীক উন্মোচন করে আসল বক্তব্যটি বুঝিয়ে বলতে হবে।
বিদ্যার সাধনা শিষ্যকে নিজে অর্জন
শিক্ষার পূর্ণতার দিকে অগ্রসর হতে হলে মানুষকে নিজস্ব প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে এবং সুশিক্ষিত হওয়ার জন্যে স্বশিক্ষা বা নিজে নিজে শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। শিক্ষা সম্পূর্ণভাবেই অর্জন সাপেক্ষ। শিক্ষালাভের জন্যে বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ধাপে ধাপে এগিয়ে শিক্ষার্থিগণ সেসব প্রতিষ্ঠান থেকে ডিগ্রি অর্জন করে এবং শিক্ষিত হিসেবে পরিচিত হয়।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষাগুরু প্রতিটি ছাত্রের জন্যে পথপ্রদর্শক। শিক্ষক ছাত্রের ভাবী জীবনের স্রষ্টা। শিক্ষক ছাত্রের ভবিষ্যৎ জীবন গঠনের পবিত্র দায়িত্ব গ্রহণ করেন। কিন্তু ছাত্র যদি শিক্ষাগুরুর নির্দেশ, আদেশ, উপদেশ পালন না করে তাহলে তার জীবন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। শিক্ষক শিক্ষা দান করেন এবং কীভাবে শিক্ষা অর্জন করতে হবে তার পথ নির্দেশ করে দেন। কিন্তু ছাত্র যদি সে শিক্ষা গ্রহণ না করে তাহলে শিক্ষকের কিছু করার থাকে না। শিক্ষাগুরু তাঁর শিষ্যকে ভালো-মন্দ, সত্য- মিথ্যা ও ন্যায়-অন্যায়ের পার্থক্য বুঝিয়ে দিয়ে তাকে ঠিক পথ দেখিয়ে দেন।
শিষ্য সে পথ অনুসরণ করে জীবনকে সার্থক করে তুলবে এটাই কাম্য। বস্তুত জ্ঞানকে আত্মস্থ করার জন্যে আত্মপ্রয়াসের কোনো বিকল্প নেই। শিক্ষার পরিধি অনেক বড়। ‘দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত শিক্ষালাভের সময়।’ তাই যথেষ্ট জ্ঞান অনুশীলন ব্যতীত কেউ সুশিক্ষিত হতে পারে না। অনেক স্বশিক্ষিত ব্যক্তি প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি ছাড়াও দেশ ও জাতি তথা বিশ্বমানবের কল্যাণের জন্যে অনেক কিছু করে গেছেন। দৃষ্টান্তস্বরূপ- সক্রেটিস, এরিস্টটল, প্লেটো, নিউটন, গ্যালিলিও, কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নজরুল ইসলাম প্রমুখের নাম উল্লেখ করা যেতে পারে। তাঁরা বিদ্যার সাধনায় নিজেদের সুশিক্ষিত হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন বলেই মরেও অমর হয়ে আছেন।প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শেষে যথার্থ জ্ঞানার্জনের জন্যে জ্ঞানের রাজ্যে বিচরণ করতে হয়। সুশিক্ষার জন্যে নিজের উদ্যোগের প্রয়োজন হয়। সেজন্যে সারাজীবন ধরে মানুষের জ্ঞান সাধনা চলে।
আরও দেখুন: