দ্বিগু সমাস ও অব্যয়ীভাব

দ্বিগু সমাস, অব্যয়ীভাব সমাস, সমাস নির্ণয় – নিয়ে আলোচনা হবে আজ। আমাদের ভাষা ও শিক্ষা সিরিজের সমাস পাঠের একটি পাঠ।

দ্বিগু সমাস | অব্যয়ীভাব সমাস | সমাস নির্ণয় | ভাষা ও শিক্ষা

দ্বিগু সমাস

যে সমাসে সংখ্যাবাচক শব্দ পূর্বে বসে সমাহার বোঝায় এবং পরপদের অর্থই প্রাধান্য পায় তাকে “দ্বিগু সমাস বলে। যেমন: নব রত্নের সমাহার – নবরত্ন, সপ্ত অহের সমাহার – সপ্তাহ ইত্যাদি।

সমাহার (সমষ্টি) বা মিলনার্থে সংখ্যাবাচক শব্দের সঙ্গে বিশেষ্য পদের যে সমাস হয় তাকে দ্বিগু’ সমাস বলে। যেমন- ত্রি (তিন) কালের সমাহার – ত্রিকাল ,  তে (তিন) মাথার সমাহার – তেমাথা, শত অব্দের সমাহার শতাব্দী, পঞ্চাবটের সমাহার – পঞ্চবটী , ত্রি পদের সমাহার – ত্রিপদী ইত্যাদি।

“দ্বিগু” শব্দটি একটি সংস্কৃত সমাসবদ্ধ শব্দ-এর (দুই) এবং ‘গো’ (বিকারে গু”-গো— এই দুই পদের সমাস। এর অর্থ কেবল “দুটি গড়’ না— ‘দুটি নছর মূল্যের বস্তু’ বা মুটি গরু দিয়ে কেনা বস্তু”। সংস্কৃতে এ অর্থেই বিপু শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। এ থেকে এই প্রকার সমাসের নাম।

 

দ্বিগু সমাস | অব্যয়ীভাব সমাস | সমাস নির্ণয় | ভাষা ও শিক্ষা

 

অব্যয়ীভাব সমাস:

“অব্যয়ীভাব’ অর্থ অব্যয়ের ভাব বর্তমান। অব্যয় শব্দ পূর্বে বসে যে সমাস হয় এবং যেখানে পূর্বপদের অর্থ প্রাধান্য পায় তাকে অব্যয়ীভাব’ সমাস বলে। অব্যয়ীভাব’ সমাসের পূর্বপদে অব্যয় বা উপসর্গ এবং পরপদে। বিশেষ্য থাকে। যেমন কৃষ্ণের সমীপে উপকূল, দিন দিন – প্রতিদিন ইত্যাদি।

অথবা, পূর্বপদে অব্যয়যোগে নিষ্পন্ন সমাসে যদি অব্যয়েরই অর্থের প্রাধান্য থাকে তবে তাকে অব্যয়ীভাব’ সমাস বলে। অব্যয়ীভাব’ সমাসে কেবল অব্যয় বা উপসর্গের অর্থযোগে ব্যাসবাক্যটি রচিত হয়। যেমন : জানু পর্যন্ত লম্বিত (পর্যন্ত শব্দের অব্যয় আ আজানুলম্বিত (বাহু), মরণ পর্যন্ত আমরণ ইত্যাদি।

Capture206 দ্বিগু সমাস ও অব্যয়ীভাব

 

*  অব্যয়ীভাব সমাসে কেবল অব্যয়ের অর্থযোগে ব্যাসবাক্য গঠিত হয়। যেহেতু উপসর্গও এক ধরনের অব্যয় তাই উপসর্গযোগে সব শব্দই অব্যয়ীভাব’ সমাস হয়।

দ্বিগু সমাস | অব্যয়ীভাব সমাস | সমাস নির্ণয় | ভাষা ও শিক্ষা

 

*   অব্যয়ীভাব’ সমাসের ব্যাসবাক্যে অবায়ের নাম না বা ধরনের উল্লেখ হয় না। কেবল অব্যয়ের অর্থযোগে ব্যাসবাক্যটি রচিত হয়। যেমন মরণ পর্যন্ত (পর্যন্ত শব্দের অব্যয় আ ) = আমরন।  বিভিন্ন অর্থ অব্যয়ীভাব’ সমাসের উদাহরণ নিচে দেখানো হলো :

Capture220 দ্বিগু সমাস ও অব্যয়ীভাব

 

 

সমাস নির্ণয়:

সমাস- নির্ণয় করতে হলে প্রদত্ত পদের ব্যাসবাক্য লিখতে হয় এবং সেই সমাসের নামও লিখতে হয়। ব্যাসবাক্য হবে পদের অর্থের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ এবং ব্যাসবাক্য অনুসরণ করেই সমাসের নাম নির্ধারণ হয়। তাই সমাস- নির্ণয়কালে সঠিক ব্যাসবাক্যের প্রতি লক্ষ রাখতে হবে। এমন হতে পারে যে, একটি পদের ব্যাসবাক্য একাধিক হচ্ছে, তেমন ক্ষেত্রে ব্যাসবাক্য বিভিন্ন বলে সমাসের নামও বিভিন্ন হবে। পরীক্ষার উত্তরপত্রে সঠিক ব্যাসবাক্য ও সমাসের জন্যে পৃথক নম্বর থাকে। সুতরাং পরীক্ষার উত্তরপত্রে সমাস- নির্ণয়কালে নিম্নরূপ পদ্ধতি অনুসরণ করাই উত্তম। যেমন-

Capture229 দ্বিগু সমাস ও অব্যয়ীভাব

 

 

দ্বিগু সমাস | অব্যয়ীভাব সমাস | সমাস নির্ণয় | ভাষা ও শিক্ষা

 

সূত্র : দ্বিগু সমাস | অব্যয়ীভাব সমাস | সমাস নির্ণয় | ভাষা ও শিক্ষা

 

আরও দেখুন:

Leave a Comment