অমর একুশে প্রবন্ধ বিশ্লেষণ – আলোচ্য বিষয়। অমর একুশে [ amar ekushey ] প্রবন্ধটি, রফিকুল ইসলাম রচিত, “৬ষ্ঠ” শ্রেণীর, বাংলা ১ম পত্র, চারুপাঠ [ Class 6 Bangla 1st Paper Charupath ] এর অংশ। ২০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় নুরুল আমিন সরকার ঢাকায় ১৪৪ ধারা জারি করলে ‘বিশ্ববিদ্যালয় সংগ্রাম পরিষদ’ ১৪৪ ধারা ভাঙার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নেয়। ২১ ফেব্রুয়ারি [ 21 February ] ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করা হয়। ২২শে ফেব্রুয়ারি সমগ্র জাতি বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। ঢাকার রাজপথ হয়ে ওঠে উত্তাল। বহু হতাহতের সঙ্গে অনেকে শহীদ হন।
Table of Contents
অমর একুশে প্রবন্ধ
পাঠের উদ্দেশ্য
ভাষা-আন্দোলনের ইতিহাস সম্পর্কে জানা ও ভাষা-শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ তৈরি করা।
পাঠ-পরিচিতি
‘অমর একুশে’ শীর্ষক প্রবন্ধে মহান ভাষা-আন্দোলনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে। ১৯৫২ সালের ২৬শে জানুয়ারি খাজা নাজিমউদ্দিন ঘোষণা করেছিলেন যে, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। এই ঘোষণা ছিল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে চরম বিশ্বাসঘাতকতা। ফলে ছাত্রসমাজ প্রতিবাদে ফেটে পড়ে এবং ৩০শে জানুয়ারি ঢাকায় ছাত্র-ধর্মঘট পালিত হয়। শুধু তাই নয়, আওয়ামী মুসলিম লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগসহ প্রগতিশীল রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো মিলে তখন ‘সবর্দলীয় কর্মপরিষদ’ গঠন করে। অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গঠন করে ‘বিশ্ববিদ্যালয় সংগ্রাম পরিষদ’।
৪ঠা ফেব্রুয়ারি পুনরায় ছাত্র-ধর্মঘট পালিত হয় এবং সিদ্ধান্ত হয় যে ২১শে ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা দিবসরূপে পালিত হবে। এ সময় শেখ মুজিবুর রহমান কারাগারে বন্দি ছিলেন। ১৬ই ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি ও মহিউদ্দিন আহমদ ভাষা-আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য জেলখানায় অনশনব্রত পালন করতে শুরু করেন। আন্দোলন নতুন মাত্রা লাভ করে। ২০শে ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় নুরুল আমিন সরকার ঢাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে। ‘বিশ্ববিদ্যালয় সংগ্রাম পরিষদ’ ১৪৪ ধারা ভাঙার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নেয়। ২১শে ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীরা সাফল্যের সঙ্গে ধর্মঘট পালন করে।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ সময় তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করার জন্য সুশৃঙ্খলভাবে রাজপথে এগিয়ে যায়। এই সংগ্রামে বহু ছাত্রছাত্রী ও জনতা আহত হয়, গ্রেফতার-বরণ করেন এবং রফিকউদ্দিন, জব্বার ও আবুল বরকত শহিদ হন। ২২শে ফেব্রুয়ারি সমগ্র জাতি বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। ঢাকার রাজপথ হয়ে উঠে উত্তাল। বহু হতাহতের সঙ্গে এই দিন শহিদ হন শফিউর রহমান, আব্দুল আউয়াল, কিশোর অহিউল্লাহ। ২৩শে ফেব্রুয়ারি শহিদের স্মরণে শহিদ মিনার নির্মিত হয়। পুলিশ শহিদ মিনারটি ধ্বংস করে দেয়। আন্দোলন আরও বেগবান হয়। পরিশেষে বাংলা ভাষা রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা লাভ করে।
লেখক-পরিচিতি
রফিকুল ইসলাম ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দের ১লা জানুয়ারি বতর্মান চাঁদপুর জেলার মতলব (উত্তর) থানার কলাকান্দা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। তাঁর পরিচিতি মূলত নজরুল গবেষক হিসেবে। তবে ভাষা-আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তিনি প্রচুর লিখেছেন। তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলো হলো :
‘নজরুল নির্দেশিকা’, ‘নজরুল-জীবনী’, ‘বীরের এ রক্তস্রোত মাতার এ অশ্রুধারা’, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম’, ‘ভাষা আন্দোলন ও শহীদ মিনার’, ‘ঢাকার কথা’, ‘বাংলাভাষা আন্দোলন’, ‘শহীদ মিনার,’ ‘কিশোর কবি নজরুল’। গবেষণা ও প্রবন্ধ-সাহিত্যে অবদানের জন্য তিনি নজরুল একাডেমী পুরস্কার (পশ্চিমবঙ্গ), বাংলা একাডেমী পুরস্কার ও একুশে পদক লাভ করেন।
অমর একুশে প্রবন্ধ বিশ্লেষণ :

আরও দেখুন: