সম্বোধন পদ – আজকের আলোচনার বিষয়। এই পাঠটি “ভাষা ও শিক্ষা” বিভাগের একটি পাঠ। ‘সম্বোধন’ মানে আহ্বান বা কাউকে উদ্দেশ্য করে ডাকা বা কিছু বলা। যেমন- ওহে, একটু শুনে যাও তো। ‘হে দারিদ্র্য, তুমি মোরে করেছ মহান’। হে বিধাতা, তোমার মনে এই ছিল ! যাকে সম্বোধন বা আহ্বান করে কিছু বলা হয়, তাকে সম্বোধন পদ বলে। যেমন : ওরে, ওগো, হে, রে, ওলো, ওহো, আহা, হায় ইত্যাদি। উদাহরণ : হায় আল্লা, এ আমার কী হলো।
সম্বোধন পদ | ভাষা ও শিক্ষা
ওগো, শুনছো, এদিকে একটু এস। এই, কী বলছি শুনতে পাচ্ছিস না? কি হে, কেমন আছ? জ্ঞাতব্য : সম্বোধন পদ বাক্যের অংশ। কিন্তু বাক্যস্থিত ক্রিয়াপদের সঙ্গে কোনো সম্বন্ধ থাকে না বলে সম্বোধন জনপদ কারক নয়। এবারে নিচের ছক লক্ষ কর :
কারক ও সম্বন্ধ পদের পার্থক্য বিচার (ক) ক্রিয়াপদের সঙ্গে বিশেষ্য বা সর্বনাম পদের যে সম্পর্ক তাকে কারক বলে। (খ) বিশেষ্য পদের সঙ্গে বিশেষ্য বা সর্বনাম পদের যে সম্পর্ক, তাকে সম্বন্ধ ‘পদ বলে।
যাকে সম্বোধন অর্থাৎ আহ্বান করা হয়, তাকে সম্বোধন পদ বলে। যেমন– তাসফিক পড়তে যাও, অর্পি খেতে যাও। এখানে ‘তাসফিক’ এবং ‘অর্পি’ সম্বোধন’ পদ। সম্বোধন’ পদের ক্রিয়ার সাথে সম্পর্ক থাকে না। হে, রে, ওগো, ওরে, ওহে অব্যয় শব্দগুলো কখনও কখনও সম্বোধন পদ রূপে এককভাবে বসে। কখনও কখনও অন্য পদের সঙ্গে বসে সেই পদের সঙ্গে একত্রে সম্বোধন’ পদ হয়। যেমন— ওহে, শোন। ওরে শয়তান, তবে শোন্। পিতা, মাতঃ, সখে, বন্ধো, প্রভো, ভগবন্ প্রভৃতি সংস্কৃত ভাষায় সম্বোধনের পদ ক্বচিৎ কখনও বাংলায় ব্যবহৃত হয়।
বাক্যে নাম পদের সঙ্গে ক্রিয়াপদের যে সম্মন্ধ, তাকে কারক বলে। কিন্তু সম্বন্ধ’পদ ও সম্বোধন ‘পদের সঙ্গে বাক্যের অন্তর্গত ক্রিয়াপদের কোনো সম্বন্ধ থাকে না। তাই সম্বন্ধ’ পদ ও সম্বোধন ‘পদ কারক নয়। হামিদ, তোমার বন্ধুকে দেখছি না কেন? এই বাক্যে ‘হামিদ’ সম্বোধন’ পদ এবং ‘তোমার’ সম্বন্ধ’ পদ। ‘হামিদ’ এবং ‘তোমার’ পদ দুটির সঙ্গে ‘দেখছি’ ক্রিয়াপদের কোনো সম্পর্ক নেই। তাই সম্বন্ধ’ পদ ও সম্বোধন ‘পদ কারক নয়।

আরও দেখুন: