সততাই সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা | ভাব-সম্প্রসারণ | ভাষা ও শিক্ষা – ভাবসম্প্রসারণ কি তা বললে বোঝায়, কবি, সাহিত্যিক, মনীষীদের রচনা কিংবা হাজার বছর ধরে প্রচলিত প্রবাদ প্রবচনে নিহিত থাকে জীবনসত্য। এ-ধরনের গভীর ভাব বিশ্লেষণ করে তা সহজভাবে বুঝিয়ে দেওয়াকে বলে ভাবসম্প্রসারণ।
সততাই সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা
সততা একটি পরম গুণ। এই সততা পরম দুঃখে-কষ্টে অর্জিত ধন। কর্মক্ষেত্রে একমাত্র সততারদ্বারাই প্রতিষ্ঠা লাভ সম্ভব। এ পৃথিবীতে ভালো-মন্দ, সৎ-অসৎ, সত্য-মিথ্যা পাশাপাশি বিরাজমান। এখানে সাধু ও সৎপথের যাত্রী যেমন রয়েছে তেমনি রয়েছে মিথ্যা ও অসৎ পথের যাত্রী। জীবনের প্রকৃত ও স্থায়ী সাফল্য লাভ করতে হলে সৎপথে জীবন চালিত করাই উত্তম কাজ। কেননা সৎ পথের কোনো বিকল্প নেই। জীবনের যে কোনো ক্ষেত্রে সততার মূল্য সবকিছুর ঊর্ধ্বে।
একমাত্র সৎলোকই সবার কাছে বিশ্বস্ত ও শ্রদ্ধাভাজন হতে পারে। অনেক সময় দেখা যায়, অনেকে অসৎ পথে চলেও অনেক উন্নতি সাধন করেছে। কিন্তু মনে রাখা উচিত তার এ উন্নতি সাময়িক ও ক্ষণস্থায়ী। তাসের ঘরের মতো যে কোনো মুহূর্তে তা ভেঙে যেতে পারে। অসৎ পথে অর্জিত সাফল্য. একদিন না একদিন ধ্বংস হবেই। তাছাড়া অসৎ পথের যাত্রী টাকার জোরে সম্মান ও প্রতিপত্তি লাভ করলেও মানুষ তাকে মনের দিক থেকে ঘৃণা করে।
পক্ষান্তরে সৎ পথের যাত্রী যত দুঃখ ও দীনতার মধ্যেই জীবন-যাপন করুক না কেন, মানুষের কাছে সে শ্রদ্ধার পাত্র। ব্যবসা-বাণিজ্য, রাজনীতি ইত্যাদি যে কোনো ক্ষেত্রে একমাত্র সৎপথের যাত্রীই সাফল্যের স্বর্ণশিখরে আরোহণ করতে পারে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের প্রতি দৃষ্টিপাত করলে এ কথা সহজেই অনুধাবন করা যায়। ইতিহাসের পাতায় যাঁরা স্মরণীয় ও বরণীয় হয়ে আছেন তাঁদের অনেকেই চরম দুঃখ-দুর্দশার মধ্যে থেকেও কখনো অসৎ পথ অবলম্বন করেন নি। তাই জীবনকে পরিপূর্ণ সার্থক করতে হলে সততাই একমাত্র পথ।

যে পথে মানুষ পরশপাথরের মতো আলোকিত হয়ে ওঠে। মহৎ কাজ করতে গেলে ও সৎপথে চলতে গেলে শত-সহস্র দুঃখ-কষ্ট এসে আমাদের চলার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে। কিন্তু এসব দুঃখ-কষ্টকে বাধা হিসেবে না মেনে, সত্যের পথ পরিত্যাগ না করে কর্মক্ষেত্রে অগ্রসর হওয়া উচিত। মনে রাখা দরকার যে, শেষ পর্যন্ত সত্যের জয় এবং অসত্যের পরাজয় ঘটে।