শ্রমের মর্যাদা রচনার একটি নমুনা তৈরি করে দেব আজ। শিক্ষার্থীরা এই রচনাটি থেকে ধারণা নিয়ে নিজের মতো নিজের ভাষায় রচনা তৈরি করবেন।
Table of Contents
শ্রমের মর্যাদা রচনা
ভূমিকা :
বেঁচে থাকার জন্য মানুষকে যে যুদ্ধ করতে হয় তা হল জীবনযুদ্ধ। আর এ যুদ্ধের প্রধান অস্ত্র হচ্ছে শ্রম। জীবনে প্রতিষ্ঠা লাভ করতে হলে পরিশ্রম করতে হয়। তাই সুপরিকল্পিতভাবে যত বেশি পরিশ্রম করতে পারবে তত বেশি লাভবান হবে।
মূল বক্তব্যঃ
প্রতিভা বিকাশের হাতিয়ার মানুষ নিজের ভাগ্য নিজে নির্মাণ করতে পারে আর এই ভাগ্য নির্মাণের প্রধান হাতিয়ার হচ্ছে তার পরিকল্পিত পরিশ্রম। প্রত্যেক মানুষের মধ্যে সুপ্ত প্রতিভা থাকে। এই সুপ্ত প্রতিভা পরিশ্রম দ্বারা প্রকাশ পেতে পারে। যারা পরিশ্রমী তারা জীবনে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। পরিশ্রম না করলে কখনও প্রতিভা বিকশিত হতে পারে না। তাই ভাগ্য গঠনের বড় হাতিয়ারই হচ্ছে পরিশ্রম। শ্রমের মূল্য মানুষ দু’রকমের সুখ দৈহিক ও মানসিক। এই সুখ পরিশ্রম ছাড়া লাভ করা সম্ভব নয়।
বেঁচে থাকার জন্য যে উপকরণের প্রয়োজন তার একটাও পরিশ্রম ছাড়া পাবার উপায় নেই। কিন্তু পৃথিবীর সকল মানুষ সমান পরিশ্রম করতে সক্ষম নয়। মানুষ বুদ্ধিজীবী, চাকরিজীবী, কৃষিজীবী, শিল্পজীবী প্রভৃতি শ্রেণীতে বিভক্ত হয়ে পরিশ্রম করে। কায়িক পরিশ্রমকে অনেকে ভাল নজরে দেখে না। কিন্তু কায়িক পরিশ্রম মোটেও অসম্মানজনক লাভের উপায়।
শ্রমের গুরুত্ব :
পৃথিবীতে যে জাতি যত বেশি পরিশ্রমী সে জাতি তত বেশি উন্নত। আমরা পৃথিবীতে যে সমস্ত জাতির পতন দেখি তার মূলে তাদের শ্রমবিমুখতা। কোন জাতি যদি উন্নতি করতে চায় তবে তার নাগরিককে পরিশ্রমী হবে। সম্মিলিত পরিশ্রমই সভ্যতার জন্য দেয় এবং ইতিহাস সৃষ্টি করে। ঘ. শ্রমবিমুখতার পরিণাম পরিশ্রম করা উত্তম ও সম্মানজনক, কখনো অসম্মানজনক নয়। মানুষ পরিশ্রমের দ্বারা সর্ব বিষয়ে উন্নতি ও উৎকর্ষ লাভ করতে পারে। তার এই উন্নতি ও উৎকর্মই মানুষের কাছে পরিশ্রমের মর্যাদা বাড়িয়ে দেয়।
যে ব্যক্তি বা জাতির শ্রমের মর্যাদা সম্বন্ধে জ্ঞান আছে সে ব্যক্তি ও জাতি এতটুকু বিনা কাজে নষ্ট হতে দেয় না। প্রতিদানে সে ব্যক্তি ও জাতি সভ্যতার অগ্রগতির সাথে তাল মিলিয়ে ধাপে ধাপে উন্নতির পথে এগিয়ে যায়। ড. শ্রমে আগ্রহ ও একটি জাতির উন্নতি করতে হলে প্রয়োজন মানসিক ও কায়িক পরিশ্রম। ইহা একটি অপরটির পরিপূরক। আমাদের ব্যক্তি জীবন ও জাতীয় জীবনে উন্নতি করতে হলে অবশ্যই পরিশ্রম করতে হবে। পরিশ্রম না করে।
পরনির্ভরশীল হয়ে বেঁচে থাকায় কোন মর্যাদা নেই।
উপসংহারঃ
পরিমিত পরিশ্রম সুখ, সৌভাগ্য ও জীবনীশক্তি বৃদ্ধির প্রধান সহায়। পরিশ্রমে স্বাস্থ্য ভাল থাকে। “যে ব্যক্তি পরিশ্রম বলে স্বীয় অভাব মোচনে যত্নশীল, দৈব তাকেই সাহায্য করিয়া থাকেন (Heaven Heips those who help themselves)। তা বলে শুধু দৈবের ওপর নির্ভর করা কাপুরুষের লক্ষণ। সকলেরই উচিত পরিকল্পিত পরিশ্রম করে সাফল্য লাভ করা। এতে সকলের উন্নতি হয়, মর্যাদাও বাড়ে।
