শ্বাসাঘাতের প্রকারভেদ | শ্বাসাঘাত বা ঝোঁক এবং যতি | ভাষা ও শিক্ষা

আজকের আলোচনার বিষয় শ্বাসাঘাতের প্রকারভেদ। শ্বাসাঘাত বা ঝোঁক আমাদের শারীরিক স্বাস্থ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা, যা প্রয়োজনীয় সচেতনতা এবং দ্রুত সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে মোকাবেলা করা সম্ভব। এই পাঠটি “ভাষা ও শিক্ষা” বিভাগের “শ্বাসাঘাত বা ঝোঁক এবং যতি” শিরোনামের অন্তর্ভুক্ত এবং এতে আমরা শ্বাসাঘাতের বিভিন্ন প্রকার, তাদের লক্ষণ, কারণ এবং প্রাথমিক চিকিৎসার পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। শ্বাসাঘাত সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান থাকা প্রত্যেকের জন্য জরুরি, কারণ এটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ নিলে জীবন রক্ষা সম্ভব। চলুন, আজকের পাঠে শ্বাসাঘাতের প্রকারভেদ বুঝে নিই এবং সচেতন হই।

শ্বাসাঘাতের প্রকারভেদ | শ্বাসাঘাত বা ঝোঁক এবং যতি | ভাষা ও শিক্ষা

শ্বাসাঘাত বাংলায় দুরকম; অন্য ভাষাতেও তাই।
১। শব্দ শ্বাসাঘাত (word stress)
২। বাক্য শ্বাসাঘাত (sentence stress )

১। . শব্দ শ্বাসাঘাত (word stress) :
শব্দ শ্বাসাঘাত অক্ষরনির্ভর। বাংলায় শব্দের শুধু প্রথম অক্ষরেই ঝোঁক পড়ে। যেমন, বাড়ি, বাঙালি, সেদিন, যখন।

কিন্তু এরা যখন বাক্যে বাঁধা পড়বে তখন এ-ঝোঁক তাদের বজায় নাও থাকতে পারে। যেমন— সেদিন যখন সে এসেছিল, আমি বাড়ি ছিলাম না। এখানে সেদিনের ‘সে’র উপরে ঝোঁক, আর ‘আমি’র ‘আ’র উপরে ঝোঁক। তাহলে নিয়মটা হল, একেকটা শ্বাসপর্বের প্রথমে যে-অক্ষর শুধু তার ওপরই ঝোঁকটা পড়বে। অর্থের খাতিরে যতটুকু আমরা এক শ্বাসে উচ্চারণ করি তা-ই হল একেকটা শ্বাসপর্ব বা শুধু পৰ্ব।

শ্বাসাঘাতের প্রকারভেদ | শ্বাসাঘাত বা ঝোঁক এবং যতি | ভাষা ও শিক্ষা

২। বাক্য শ্বাসাঘাত (sentence stress) :
একটি বাক্যের একটি শব্দ বেছে নিয়ে তার ওপর শ্বাসাঘাত দিলে ওই বাক্যের অর্থ নিয়ন্ত্রিত হয়। একে বাক্য শ্বাসাঘাত বলে।

সাধারণ বিবৃতিমূলক বাক্যে প্রথমে শ্বাসাঘাত পড়ে। যেমন- আমরা কাজ করি। বাক্য যত বড় হবে শ্বাসাঘাত তত শেষের দিকে চলে যাবে। কিন্তু বাক্যের গোড়াতে যদি সর্বনাম, সংযোজক অব্যয় বা অন্য কোনো অপ্রধান শব্দ থাকে তাহলে সেই শব্দের ওপরে শ্বাসাঘাত পড়বে না। যেমন— সফিক ঢাকায় কাজ করে। অথচ ঢাকায় থাকে না। আবেগপ্রধান বা যুক্তিপ্রধান বাক্যে বক্তা যে-বিষয়ের ওপরে অধিক গুরুত্ব আরোপ করতে চায় সেই বিষয়সূচক শব্দের ওপরে শ্বাসাঘাত পড়বে।

 

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

লক্ষণীয় যে, শ্বাসাঘাতের সঙ্গে বাংলায় অনেক সময় স্বরাঘাতও থাকে। শব্দের মধ্যে কোনো অক্ষর যখন নিম্ন বা উচ্চগ্রামে ধ্বনিত হয় তখন স্বরতন্ত্রী ধীর বা দ্রুতবেগে কম্পিত হওয়ার ফলে একটা সুরের সৃষ্টি অনুভব করা যায়। এই সুরকে স্বর বা স্বরাঘাত বলা হয় ৷ বাক্যে শ্বাসাঘাত প্রয়োগের ফলে অর্থের কিরূপ পরিবর্তন ঘটে তা একটি উদাহরণ দিয়ে বোঝানো যেতে পারে। যেমন— ‘আপনার কি অসুখ করেছে?’— এই বাক্যটিতে প্রথম শব্দটির ওপর ঝোঁক আরোপ করলে যে অর্থ দাঁড়াবে, দ্বিতীয়, তৃতীয় বা চতুর্থ শব্দের ওপর সেই ঝোঁক আরোপ করলে অর্থ অন্যরূপ হয়ে যাবে। শ্বাসাঘাতের জন্যই বাক্যটির চার প্রকার অর্থ হতে পারে।

 

আরও দেখুন:

Leave a Comment