রয়েল বেঙ্গল টাইগার, বাংলাদেশের জাতীয় পশু [ Essay on Royal Bengal Tiger ] অথবা,বাংলাদেশের জাতীয় পশু বাঘ – নিয়ে একটি প্রতিবেদন রচনার নমুনা দেয়া হল।

Table of Contents
রয়েল বেঙ্গল টাইগার রচনার ভূমিকা :
পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতাে বাংলাদেশের একটি জাতীয় পশু রয়েছে। এ পশু হলাে বাঘ। একে বলে রয়েল বেঙ্গল টাইগার। বাংলাদেশের সবচেয়ে বৃহৎ বন সুন্দরবনে রয়েল বেঙ্গল টাইগার পাওয়া যায়। সুন্দরবনের অবস্থান বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল খুলনা-সাতক্ষীরা-বাগেরহাট জেলায়।
আকৃতি :
বাঘ বিড়াল প্রজাতির প্রাণী। বাঘ আকারে ও শক্তিতে অনেক বড়। বাঘের গায়ের রং হলুদ হলুদের মধ্যে কালাে কালাে ডােরাকাটা দাগ থাকে। বাঘ সাধারণত বারাে ফুট লম্বা এবং চার ফুট পর্যন্ত উঁচু হয়। এদের দাঁত খুবই তীক্ষ্ণ ও ধারালাে হয়। পায়ের থাবায় তীক্ষ্ণ ও ধারালাে নখ লুকানাে থাকে।
বিড়ালের মতাে প্রয়ােজনে এরা সেই নখ বের করে আক্রমণ করতে পারে। এদের পায়ের তলায় নরম মাংসপিণ্ড আছে। যার ফলে তারা নীরবে চলাফেরা করতে পারে এবং সহজে শিকার ধরতে পারে। এদের গায়ের চামড়া খুবই শক্ত ও ঘন লােমে ঢাকা। বাঘের পেছনের পায়ে জোর খুব বেশি। লাফ দিয়ে এরা অনেক দূর পর্যন্ত যেতে পারে। বাঘের মাথা গােলাকার ও বেশ বড়। এদের চোখ দুটি উজ্জ্বল এবং রাতের বেলা জ্বলজ্বল করে জ্বলে। বাঘ অন্ধকারে দেখতে পায়।

স্বভাব :
বাঘ অত্যন্ত হিংস্র প্রাণী। এরা বনে থাকে। এরা খুবই শক্তিশালী ও ভয়ংকর হয়। অনেক বড় বড় প্রাণীকে এরা সহজে শিকার করে। বাঘের শক্তি ও রাজকীয় ভাবভঙ্গি দেখে একে বনের রাজা বলা হয়। বাঘ খুব দ্রুত দৌড়াতে পারে। এরা সাঁতার কাটতে পারে খুব ভালাে। সুন্দরবনের বাঘের সুনাম পুথিবী জুড়ে।
এবাঘের সঙ্গে বাংলাদেশের নাম জুড়ে রাখা হয়েছে রয়েল বেঙ্গল টাইগার। বাঘ সাধারণত হরিণ, শূকর, গরু, ছাগল শিকার করে থাকে। শিকার না পেলে এরা অনেক সময় মানুষ শিকার করে। বাঘিনী সাধারণত বছরে দুই থেকে পাঁচটা বাচ্চা দেয়। বাচ্চাদের প্রতি বাঘের মায়া খুব কম। ক্ষুধা পেলে এরা বাচ্চাদের খেয়ে ফেলতে পারে। বাঘিনী বাচ্চা বড় না হওয়া পর্যন্ত লুকিয়ে রাখে।

রং :
বাঘের গায়ের রং হলুদ। এর গায়ে কালো কালো ডোরা দাগ আছে। সুন্দরবনে হলুদ রঙের ডোরাকাটা হিংস্র বাঘ বাস করে—এর নাম রয়েল বেঙ্গল টাইগার।
কোথায় পাওয়া যায় :
পৃথিবীর প্রায় সব বড় বড় বনে বাঘ দেখতে পাওয়া যায়। তবে আফ্রিকার জঙ্গলে, হিমালয়ের পাদদেশে এবং বাংলাদেশের সুন্দরবনে বড় আকারের বাঘ দেখা যায়।
আবাসস্থল :
বাঘ খুব গভীর বনে বা পাহাড়-পর্বতের গুহায় থাকে। বাঘ দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি আবার ভয়ংকর। সুন্দরবনের ভেজা স্যাঁতসেঁতে গোলপাতার বনে বাঘ ঘুরে বেড়ায়।
খাদ্যাভ্যাস :
বাঘ মাংসাশী প্রাণী। এদের সামনে কোনো জীবজন্তু পড়লে আর রক্ষা নেই। এরা ভয়ানক নিষ্ঠুর। বাঘের ঘ্রাণশক্তি খুবই প্রখর। এরা বুনো জীবজন্তু ও হরিণ শিকার করে খায়। ক্ষুধার জ্বালায় অনেক সময় নিজের বাচ্চাও খেয়ে ফেলে।

উপসংহার:
বাঘকে হিংস্র পশু মনে হলেও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বাঘের দরকার রয়েছে। বাঘ তৃণভােজী প্রাণী খেয়ে এদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখে। তৃণভােজী প্রাণীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে তারা বনের গাছপালা খেয়ে উজাড় করে। রয়েল বেঙ্গল টাইগার বাংলাদেশের গৌরব। এদেরকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করতে হবে।
আরও দেখুনঃ