Site icon Bangla Gurukul [ বাংলা গুরুকুল ] GOLN

এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন চেয়ে প্রতিবেদন | প্রতিবেদন | ভাষা ও শিক্ষা

এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন চেয়ে প্রতিবেদন | প্রতিবেদন | ভাষা ও শিক্ষা

এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন চেয়ে প্রতিবেদন

প্রতিবেদনের প্রকৃতি : বিশেষ প্রতিবেদন / সংবাদ প্রতিবেদন

প্রতিবেদনের শিরোনাম : বর্তমান রাস্তা ঘাটের দুরবস্থায় সাধারণ মানুষের সীমাহীন দুর্ভোগ

সরেজমিনে তদন্তের স্থান : ‘ক’, ‘খ’, ‘গ’ স্থানের রাস্তাঘাট (সড়কপথ)

প্রতিবেদন তৈরির সময় :…

তারিখ :..

সংযুক্তি : ৫ কপি ছবি (‘ক’, ‘খ’, ‘গ’ স্থানের রাস্তার দুরবস্থার চিত্র)। 

বর্তমান রাস্তা-ঘাটের দুরবস্থায় সাধারণ মানুষের সীমাহীন দুর্ভোগ

আজকাল রাস্তাঘাটে পায়ে হেঁটে বা যানবাহনে চলাফেরা রীতিমত বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমান রাস্তা-ঘাটের নিয়মহীন চলাচল, দুরবস্থার কারণে একদিকে যেমন অসহনীয় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে তেমনি প্রতিনিয়ত বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা। ফলে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ চরম সীমায় পৌঁছেছে। অপ্রসস্থ রাস্তাঘাট, অতিরিক্ত যানবাহন, অগণন মানুষের ভিড়, উপরন্তু রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা সব মিলিয়ে মানুষের জীবন আজ বিপর্যস্ত, ভয়াবহ। স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবার পর বাংলাদেশের সড়ক পথের যথেষ্ট উন্নতি সাধিত হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল।

ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা, অপরিকল্পিত ও ভারসাম্যহীন নগরায়ণ, যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধিসহ নানা কারণে রাস্তাঘাটের পরিস্থিতি ক্রমেই দুর্বল ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠেছে। রাস্তাঘাটের দুরবস্থার চিত্র প্রতিদিনই খবরের কাগজে কিংবা টেলিভিশনে দেখা যায়, সে সঙ্গে জনগণের কী পরিমাণ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তা সরেজমিনে প্রতিবেদন আকারে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টাও করা হয়। সে সঙ্গে রাস্তাঘাটের দূরবস্থার কারণ ও প্রতিকার চেয়ে প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গ, ওয়ার্ড কমিশনার, চেয়ারম্যান, স্থানীয় সংসদ সদস্য সবাইকেই অবগত করানো হয়।

তৎক্ষণাৎ সবাই আশাভরসা দিয়ে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিলেও দিন কয়েক পরেই তা গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে। তখন রাস্তাঘাটের দুরবস্থার সঙ্গে সাধারণ মানুষের দুরবস্থার আর কোনো পার্থক্য থাকে না। প্রকৃতপ্রস্তাবে, রাস্তাঘাটের দুরবস্থার চিত্রটি যেমন সত্য তেমনি বাস্তবসত্য হল এর পেছনে নিহিত নানাবিধ অবকাঠামোগত কারণ।

 

০১. রাস্তাঘাটের দুরবস্থার কারণ

১,১. দেশের সড়ক ব্যবস্থাপনা অর্থাৎ সড়কগুলোর কার্যকর পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাব।

১.২. অপরিকল্পিত নগরায়ণ। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, আবাসন সংঙ্কট ও নগরায়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রাস্তাঘাটের প্রয়োজনীয় সংস্কার ও উন্নয়ন না হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিশেষত সড়কপথ ভারসাম্যহীন ও দুর্বল হয়ে পড়েছে।

১.৩. অপরিকল্পিতভাবে ওয়াসা, ডেসা, গ্যাস, টেলিফোন, টেলিগ্রাফ এবং বেসরকারি সংস্থা বিজ্ঞাপন বিলবোর্ডসহ নানা কারণে প্রায়ই জনবহুল রাস্তাসহ আবাসিক রাস্তাতেও খোঁড়াখুঁড়ি করে। খোঁড়াখুঁড়ির পর পুনরায় রাস্তাটি মেরামত না করা।

১.৪. রাস্তায় ওভারব্রিজের স্বল্পতা, ট্রাফিক আইন না মানা এবং রাস্তা পারাপারে নিয়ম মেনে না চলা, আধাপাকা ও কাঁচা রাস্তায় অতিরিক্ত মাল ও যাত্রী বোঝাই যানবাহন চলাচল করা, যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং করা ইত্যাদি।

 

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

১.৫. পরিকল্পিত পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা গড়ে না ওঠায় সামান্য বৃষ্টিতেই দেখা দেয় জলাবদ্ধতা।

১.৬. টেকসই ও পরিকল্পিত রাস্তাঘাটের উন্নয়ন, সংস্কারের অভাব। অধিকাংশ রাস্তা অপ্রসস্ত ও সংকীর্ণ জনসাধারণের যাতায়াতের জন্যে ২৫% ফুটপাত থাকার কথা, কিন্তু তা নেই। আবার যেটুকু আছে তার অধিকাংশ স্থান কলকারখানা, হোটেল, রেস্তোরা ও ফেরিওয়ালাদের দখলে।

এসব রাস্তায় ভাসমান দোকানপাট থেকে শুরু করে পানের দোকান, চায়ের দোকান, কাপড়ের দোকান, ফলের দোকান, মাছের বাজার, তরকারির দোকান বসে। রাস্তার অনেকাংশে যত্রতত্র বাসস্ট্যান্ড, ট্রাকস্ট্যান্ড ও টেম্পোস্ট্যান্ড দখল করে রেখেছে। এছাড়া আবাসনের ক্ষেত্রে যে নিয়ম রয়েছে অর্থাৎ রাস্তার জন্যে যতটুকু স্থান রাখার কথা বাড়ির মালিক তা রাখেন না; ক্ষেত্র বিশেষে রাস্তা দখলের ঘটনাও ঘটে। এসব কারণে রাস্তা সংকীর্ণ ও অরক্ষিত হয়ে পড়ছে।

 

 

০২. প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ

২,১. দেশে সুসংহত যোগাযোযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা। রাস্তাঘাটের সংস্কার ও আধুনিকায়ন করা।

২.২. পরিকল্পিত নগরায়ণ ও রাস্তাঘাটের উন্নয়নে মাস্টার প্লান মাফিক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা। কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করে যথাযথ মেরামতের মাধ্যমে সড়ক সংরক্ষণ ও ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

২.৩. রাস্তা নির্মাণে দক্ষ নির্মাতা ও আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করা। ট্রাফিক নিয়ম মেনে চলতে হবে। রাস্তার বাইরে বহুতলবিশিষ্ট পার্কিং সুবিধা সৃষ্টি করতে হবে। অবৈধ দখল উচ্ছেদ করে ফুটপাত ও রাস্তাঘাট সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

২.৪. কিছু কিছু প্রধান ও অপ্রধান সড়কে ভারী যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করা। প্রয়োজনে ভারী যানবাহনের জন্যে ভিন্ন সড়ক নেটওয়ার্ক থৈরি করতে হবে।

২.৫ দেশের সড়কগুলোর কার্যকর পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্যে বর্তমানের ‘সড়ক শ্রেণিবিন্যাস’কে যৌক্তিক করে সকল সড়কের জ্যামিতিক মান অনুসারে পুনর্বিন্যাস করতে হবে। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক রীতিনীতি ও দেশীয় চাহিদা বিবেচনায় রাখতে হবে।

২.৬. সড়ক ব্যবস্থাপনার জন্য জরুরিভিত্তিতে একটি সড়ক তহবিল গঠন করা উচিত। এ ধরনের তহবিল ছাড়া বর্তমান রাস্তাঘাটের টেকসই রক্ষণাবেক্ষণ দুরূহ হবে।

২.৭. সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং গ্রামীণ নেটওয়ার্কের রক্ষণাবেক্ষণ বাজেট বাড়াতে হবে এবং সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ ও — সংরক্ষণের কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

২.৮. দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসনকে নিজ নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে এবং নাগরিক দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। আমার বিশ্বাস এসব ব্যবস্থা গৃহীত হলে বর্তমান রাস্তাঘাটের যে দুরবস্থা তা দ্রুত নিরসন হবে।

আরও দেখুন:

Exit mobile version