মৌলিক ও সাধিত ধাতু

আজকের আলোচনার বিষয়ঃ  মৌলিক ও সাধিত ধাতু । যা বাংলা ব্যাকরণ ও নির্মিতি এর অন্তর্গত।

 

মৌলিক ও সাধিত ধাতু

 

মৌলিক ও সাধিত ধাতু

মৌলিক ধাতু :

মৌলিক ধাতুকে ভাঙা বা বিশ্লেষণ করা যায় না। এগুলোকে সিদ্ধ বা স্বয়ংসিদ্ধ ধাতুও বলা হয়ে থাকে।

বাংলা ভাষায় মৌলিক ধাতু তিন প্রকার। যথা :

১. সংস্কৃত ধাতু

২. বাংলা ধাতু

৩. বিদেশাগত ধাতু

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

১. সংস্কৃত ধাতু :

তৎসম ক্রিয়াপদের ধাতুকে সংস্কৃত ধাতু বলে। যেমন :

অক্ + অন = অঙ্কন : ছোটদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিথু প্রথম হয়েছে।

দৃশ্ + য = দৃশ্য : দুর্ঘটনার মর্মান্তিক দৃশ্য বর্ণনা করা যায় না।

কৃ + তব্য = কর্তব্য : ছাত্রদের কর্তব্য লেখাপড়া করা

হস্ + য = হাস্য : অকারণ হাস্য-পরিহাস ত্যাগ কর ।

২. বাংলা ধাতু :

যেসব ধাতু সংস্কৃত থেকে প্রাকৃতের মাধ্যমে পরিবর্তিত হয়ে বাংলায় ব্যবহৃত হয়, তাকে বাংলা ধাতু বা খাটি বাংলা ধাতু বলে। যেমন :

আঁক্ + আ = আঁকা : কী সব আঁকাআঁকি করছ?

দেখ্‌ + আ = দেখা : জাদুঘর আমার কয়েকবার দেখা।

কর্ + অ কর : তুমি কী কর?

হাস্ + ই = হাসি : তোমার হাসিটি খুব সুন্দর।

 

মৌলিক ও সাধিত ধাতু

 

৩. বিদেশাগত ধাতু :

বিদেশি ভাষা থেকে আগত যেসব ধাতু বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত হয়, তাকে বিদেশাগত ধাতু বা বিদেশি ধাতু বলে। যেমন :

খাট্ + বে = খাটবে : যত বেশি খাটবে ততই সুফল পাবে।

বিগড়ু + আনো : তোমার বিগড়ানো ছেলেকে ভালো করার সাধ্য আমার নেই ।

টান্ + আ : আমাকে নিয়ে টানাটানি করো না, আমি যাব না ।

জম্ + আট = জমাট : অন্ধকার বেশ জমাট বেঁধেছে।

সাধিত ধাতু :

মৌলিক ধাতু বা নাম শব্দের পরে আ-প্রত্যয়যোগে সাধিত ধা-তু গঠিত হয়ে থাকে। সাধিত ধাতু তিন প্রকার। যথা :

১. প্রযোজক ধাতু

২. নাম ধাতু

৩. কর্মবাচ্যের ধাতু

১. প্রযোজক ধাতু :

মৌলিক ধাতুর পরে (অপরকে নিয়োজিত করা অর্থে) আ-প্রত্যয়যোগে যে ধাতু গঠিত হয়, তাকে প্রযোজক ধাতু বা ণিজন্ত ধাতু বলে। যেমন :

পড়ু + আ = পড়া : শিক্ষক ছাত্রদের পড়াচ্ছেন।

কর্ + আ = করা : সে নিজে করে না, অন্যকে দিয়ে করায় ।

খেল্ + আ = খেলা : ‘হা-ডু-ডু’ আমাদের জাতীয় খেলা।

 

মৌলিক ও সাধিত ধাতু

 

২. নাম ধাতু :

বিশেষ্য, বিশেষণ ও অনুকার অব্যয়ের পরে আ-প্রত্যয়যোগে গঠিত ধাতুকে নাম ধাতু বলে। যেমন :

ঘুম্ + আ = ঘুমা : বাবা ঘুমাচ্ছেন।

ধমক্ + আ = ধমকা : আমাকে যতই ধমকাও, আমি এ কাজ করব না।

হাত্ + আ = হাতা : অন্যের পকেট হাতানো আমার স্বভাব নয় ।

৩. কর্মবাচ্যের ধাতু :

বাক্যে কর্তার চেয়ে কর্মের সাথে যখন ক্রিয়ার সম্পর্ক প্রধান হয়ে ওঠে, তখন সে ক্রিয়াকে কর্মবাচ্যের ক্রিয়া বলে। কর্মবাচ্যের ক্রিয়ার মূলকে কর্মবাচ্যের ধাতু বলে।

মৌলিক ধা-তুর সাথে আ-প্রত্যয়যোগে কর্মবাচ্যের ধাতু গঠিত হয়। যেমন :

কর্ + আ = করা : আমি তোমাকে অঙ্কটি করতে বলেছি।

হার্ + আ = হারা : বইটি হারিয়ে ফেলেছি।

খা + ওয়া = খাওয়া : তোমার খাওয়া হলে আমাকে বলো ।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment