মিত্রত্ব সর্বত্রই সুলভ | ভাব-সম্প্রসারণ | ভাষা ও শিক্ষা

মিত্রত্ব সর্বত্রই সুলভ | ভাব-সম্প্রসারণ | ভাষা ও শিক্ষা ,  ভাববীজটি সাধারণত রূপকধর্মী, সংকেতময় বা তৎপর্যপূর্ণ শব্দগুচ্ছের আবরণে প্রচ্ছন্ন থাকে। নানা দিক থেকে সেই ভাবটির ওপর আলােকসম্পাত করে তার স্বরূপ তুলে ধরা হয় ভাবসম্প্রসারণে।

মিত্রত্ব সর্বত্রই সুলভ, মিত্রত্ব রক্ষা করাই কঠিন।

যেসব গুণাবলি মানুষকে তার মনুষ্যত্ব বিকাশে সাহায্য করে এবং সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলায় বসবাসের জন্যে পরিবেশ সৃষ্টি করে, তার মধ্যে মিত্রত্ব বা বন্ধুসুলভ আচরণ অন্যতম। সমাজে একই সঙ্গে বসবাস করতে গিয়ে মানুষ নানাভাবে একে অপরের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়। এই বন্ধুত্ব যত সহজে গড়ে ওঠে তা শেষ পর্যন্ত টিকিয়ে রাখা তত সহজ হয় না। লোভ, হিংসা, স্বার্থপরতা, পরশ্রীকাতরতা মানুষকে পাপ- পঙ্কিলতার পথে ঠেলে দেয় বলে তখন বন্ধুত্ব রক্ষা করাই কঠিন হয়ে পড়ে।

 

মিত্রত্ব সর্বত্রই সুলভ, মিত্রত্ব রক্ষা করাই কঠিন।

 

মানুষ সমাজবদ্ধ জীব। সমাজের আবেষ্টনীতে প্রত্যেক মানুষ প্রত্যেকের ওপর নির্ভরশীল হয়ে বাস করে। এই নির্ভরশীলতার জন্যেই পরস্পরের মধ্যে গড়ে ওঠে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক, মানুষ আবদ্ধ হয় প্রীতির বন্ধনে, বন্ধুত্বের বাঁধনে। তাছাড়া জীবনে চলার পথে নানা কাজে নানা উপায়ে অনেকের সঙ্গেই বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এভাবে অনেক বন্ধুই জীবনে পাওয়া যায়, কিন্তু প্রকৃত বন্ধু হিসেবে শেষ পর্যন্ত টিকে থাকে অনেক কম। কেননা মানুষের জীবনে প্রায় সময়ই বন্ধুত্ব হয় ক্ষণস্থায়ী ও উদ্দেশ্যনির্ভর।

 

মিত্রত্ব সর্বত্রই সুলভ, মিত্রত্ব রক্ষা করাই কঠিন।

 

যেসব মানুষ চরিত্রে হীনতা, দীনতা, সংকীর্ণতা, পরশ্রীকাতরতা ইত্যাদি থাকে তারা খুব সহজেই উদ্দেশ্য হাসিলের জন্যে, নিজের স্বার্থ উদ্ধারের জন্যে অপরের সঙ্গে বন্ধুসুলভ সম্পর্ক গড়ে তোলে। কিন্তু স্বার্থ সিদ্ধির পর বন্ধুত্বে ছেদ পড়ে। এক ধরনের স্বার্থপর মানুষ আছে যারা বিত্তবান লোকের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে বৈষয়িক সুবিধা লাভের আশায়। সুবিধাবাদী এসব লোক নিজের স্বার্থ পূরণের পর তার সঙ্গে আর সম্পর্ক রক্ষা করে না। এ ধরনের বন্ধুত্ব কিংবা মৈত্রী স্বার্থ নির্ভর। অপরপক্ষে যে বন্ধুত্ব নিঃস্বার্থ, আত্মিক ও পারস্পরিক প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ, সে-বন্ধুত্বই প্রকৃত বন্ধুত্ব।

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

আমাদের সংসারে দুঃখ আছে, বিপদ আছে, লাঞ্ছনা আছে, অপমানও আছে। এসব বিরুদ্ধশক্তির সঙ্গে যুদ্ধ করে যারা একে অপরের সঙ্গে সহমর্মিতা প্রকাশ করে তারাই প্রকৃত বন্ধু, আর তখনই মিত্রত্ব রক্ষা করা সহজ হয়ে ওঠে। মানব সমাজে একে অপরের সঙ্গে মিত্রত্ব বজায় রেখে চলতে হলে প্রয়োজন সহমর্মিতা, সহিষ্ণুতা ও স্বার্থহীনতা।

আরও দেখুন:

Leave a Comment