মানবকল্যাণে বিজ্ঞান প্রতিবেদন রচনা [ দৈনন্দিন কাজে বিজ্ঞান ] Essays on science and technology in human welfare

মানবকল্যাণে বিজ্ঞান, মানবকল্যাণে বিজ্ঞান [ Essays on science and technology in human welfare ] অথবা, দৈনন্দিন কাজে বিজ্ঞান রচনা – নিয়ে একটি প্রতিবেদন রচনার নমুনা দেয়া হল।

মানবকল্যাণে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি রচনা [ Essays on science and technology in human welfare ]

মানবকল্যাণে বিজ্ঞান রচনার ভূমিকা:

প্রকৃতির কাছে মানুষ একদিন বড় অসহায় ছিল। সমস্যা সংকুল বৈরি পরিবেশে মানুষের জীবনযাপন ছিল এক দুঃসাধ্য ব্যাপার। ক্রমশ মানুষের জ্ঞান-বিজ্ঞানের পরিধি বিস্তৃত হওয়ার সাথে সাথে মানব জীবনও হয়ে ওঠে নিরাপদ স্বাচ্ছন্দ্যময়। মানুষ তার উদ্ভাবনী শক্তি বিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে অর্জন করে একের পর এক সফলতা। তাই প্রকৃতি আজ মানুষের করায়ত্ত। আরাম-আয়েশ, সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য এখন মানুষের নিত্য দিনের সঙ্গী। বিজ্ঞানের নব নব আবিষ্কার মানব জীবনে এনেছে কল্যাণ ও প্রশান্তি। আজকের এ সুরম্য পৃথিবী গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের অবদানই বেশি। বিজ্ঞানের অনুপস্থিতিতে পৃথিবী আজ অচল ও অসাড়। তাই বিজ্ঞান শিক্ষার প্রয়োজনীয়তার কথা বলা বাহুল্য। জীবনের প্রতিক্ষেত্রেই বিজ্ঞান শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম।

মানবকল্যাণে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি রচনা [ Essays on science and technology in human welfare ]
মানবকল্যাণে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি রচনা [ Essays on science and technology in human welfare ]

বিজ্ঞান শিক্ষার গুরুত্ব:

অজানাকে জানা, অচেনাকে চেনা, অলোকে জয় করা আবহমান কাল থেকেই মানুষের সাধনা। শিক্ষা অর্জনের দ্বারা বিশেষত বিজ্ঞান শিক্ষার মাধ্যমে তার এ চিরন্তন স্বপ্নকে সে বাস্তবে রূপদান করতে সক্ষম হয়েছে। বিশ্বজগতের সৃষ্টির রহস্য উদ্ঘাটনে বিভোর মানুষের চির আকাঙ্খা বহুলাংশে সফল হয়েছে বিজ্ঞানের অনুসন্ধান খারাই। বিজ্ঞানের জাদুকরী শক্তি বলেই মানুষের বিচরণ আজ বিশ্ব জুড়ে। আকাশের দূর সীমানায় পাখি হয়ে উড়া, অতল সমুদ্রের তলদেশে বিচরণ করার উপায় বিজ্ঞানই মানুষকে দান করেছে। কিন্তু সৃষ্টির বহস্যের কি শেষ আছে। সে কারণেই মানুষের চেষ্টা ও সাধনা অব্যাহত রয়েছে পৃথিবীকে আরও জানার জন্য। মানুষের এ অধ্যাহত প্রচেষ্টার সফলতা বয়ে আনার শুরুভার সেতো বিজ্ঞানেরই কাঁধে। এ বিজ্ঞান শিক্ষার গুরুত্ব বর্ণনাতীত ও কল্পনাতীত।

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

বিজ্ঞান শিক্ষা ও জীবিকা :

সুন্দরভাবে সচ্ছলতার সাথে বেঁচে থাকার ইচ্ছা সকলেই পোষণ করে। মানুষের এ বাসনা চরিতার্থ করার জন্য তাকে শিক্ষা অর্জন করতে হয়। কারণ শিক্ষাই মানুষের মানবিক উৎকর্ষ সাধন ও সচ্ছলতার বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা বিধান করে। তাই শিক্ষার সাথে মানুষের জীবন ও জীবিকার সম্পর্ক অতি নিবিড়। সভ্যতার এ স্বর্ণময় যুগে বিভিন্ন ধারার প্রবর্তিত প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত শিক্ষার স্থান সর্বাগ্রে। কেননা, বিজ্ঞান শিক্ষা কেবল মানুষের অনুসন্ধিৎসু মনের খোরাকই জোগায় না, প্রতিযোগিতামূলক কর্মময় জীবনে সুন্দর জীবিকা গ্রহণেরও চমৎকার সুযোগ করে দেয়।

মানবকল্যাণে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি রচনা [ Essays on science and technology in human welfare ]
মানবকল্যাণে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি রচনা [ Essays on science and technology in human welfare ]
তাই পৃথিবীর সর্বত্রই বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষার কদর সমধিক। বিজ্ঞান ও কারিগরি বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণ করতে কর্মসংস্থানের অধিক সম্ভাবনা থাকে। কারণ বর্তমান যুগে অধিকাংশ কর্মক্ষেত্রেই বিজ্ঞানের প্রয়োগিক শিক্ষার দরকার হয়। আমাদের দেশের মত জনসংখ্যাবহুল বেলার সমস্যা কবলিত দেশে বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষার ক্ষেত্রে অধিক জোর দেয়া উচিত। কারণ কারিগরি শিক্ষিত দক্ষ জনশক্তিকে উৎপাদনমূলক কাজে নিয়োগ করা যেতে পারে। কাজেই এদেশে পেশাগত শিক্ষায় শিক্ষিত লোকের কর্মসংস্থান তথা জীবিকা অর্জনের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে।

বিজ্ঞান শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা :

বর্তমান বিশ্বে মানুষের জীবনের সাথে মিশে আছে বিজ্ঞান। বিজ্ঞানের অনুপস্থিতিতে শহরবাসীর জীবনযাপন মুহূর্তের জন্যও অসম্ভব প্রায়। দৈনন্দিন, পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনের সবক্ষেত্রেই বিজ্ঞানের দান অফুরস্ত। ব্যক্তিজীবনের আরাম-আয়েশ থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় উন্নতি ও অগ্রগতির জন্য বিজ্ঞানের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। কাজেই বিজ্ঞান শিক্ষার ব্যাপক প্রসার ঘটিয়ে ব্যক্তিগত ও রাষ্ট্রীয় উন্নয়নের ক্ষেত্রে বলিষ্ঠ পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।

মানবকল্যাণে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি রচনা [ Essays on science and technology in human welfare ]
মানবকল্যাণে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি রচনা [ Essays on science and technology in human welfare ]

উপসংহার:

বিজ্ঞানের সীমাহীন উন্নতি ও অগ্রগতির ফলেই পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোর জাতীয় জীবনে অর্জিত হয়েছে সমৃদ্ধি ও প্রাচুর্য। তবুও তারা বিজ্ঞান চর্চার ক্ষেত্রে অধিকতর যত্নবান। আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশের উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত করার প্রয়োজনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত শিক্ষার আবশ্যকতা বর্ণনাতীত। তাই চিকিৎসা, প্রকৌশল কৃষি ও অন্যান্য বহু কারিগরী অর্জনের সুযোগ প্রসারিত করা উচিত। বিজ্ঞানের এসব শাখার দেশের অনেক প্রতিভাবান তরুণ শিক্ষিত হয়ে তারা ব্যক্তিগত ও জাতীয় জীবনে উন্নতি ও সমৃদ্ধির স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হবে।

মানবকল্যাণে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি রচনা [ Essays on science and technology in human welfare ]
মানবকল্যাণে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি রচনা [ Essays on science and technology in human welfare ]
আরও পড়ুন:

Leave a Comment