আজকে আমরা বাক্যের কর্ম অনুশীলন সম্পর্কে আলোচনা করবো। যা বাংলা ব্যাকরণ ও নির্মিতি এর অন্তর্গত।
বাক্যের কর্ম অনুশীলন
এক বা একাধিক পদের দ্বারা যখন বক্তার মনোভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ পায়, তখন তাকে বাক্য বলে। যেমন :
লেখ।
কাজী সব্যসাচী বই পড়েন ৷
আমি খাই ।
বাক্যের পদগুলোর মধ্যে পারস্পরিক একটি সম্পর্ক বা অন্বয় থাকতে হয়, যার কারণে বক্তার মনোভাব বা বক্তব্য স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে।
গিয়ে পুকুরে বড় ধরেছি একটা মাছ। খাঁ খাঁ অপু যাওয়ায় চলে করছে বাড়িটা।

বাক্য দুটোতে বক্তার মনোভাব পরিষ্কার নয়। কেননা, পদগুলোর মধ্যে পারস্পরিক অন্বয় নেই। পদগুলো সুবিন্যস্ত নয়। তাই এগুলোকে বাক্য বলা যায় না। বাক্য হতে হলে পদগুলো সুবিন্যস্তভাবে সাজাতে হবে। যেমন :
পুকুরে গিয়ে বড় একটা মাছ ধরেছি। অপু চলে যাওয়ায় বাড়িটা খাঁ খাঁ করছে।
সাধারণত কর্তা, কর্ম ও ক্রিয়াপদ নিয়ে বাক্য গঠিত হয়। তবে একটি বাক্যকে সার্থক করে তুলতে আরও কতকগুলো গুণ বা শর্ত মানতে হয় ।
১. তোমার বাড়িতে ৩/৪ বছর বয়সের কোনো শিশু আছে? থাকলে (না থাকলে অন্য বাড়ির) তার আধো-আধো কথাগুলো মন দিয়ে শোনার ও বোঝার চেষ্টা কর। দেখবে সে অল্প কয়েকটি শব্দ ব্যবহার করে তার মনের সকল ভাব প্রকাশ করার চেষ্টা করছে। সেগুলো তোমার কাছে অসংলগ্ন বা এলোমেলো ও হাস্যকর মনে হবে। তার এই এলোমেলো কথাগুলো তোমার বিবেচনায় বাক্যের কোনো গুণ বা লক্ষণ ব্যাহত করেছে? আধো-আধো কথা বলা কোনো শিশুর কিছু অসংলগ্ন হাস্যকর কথার উল্লেখ করে একটি প্রতিবেদন প্রস্তুত কর। (এটি একটি দলবদ্ধ কাজও হতে পারে।)
২. নিচের বাক্যগুলোতে গঠনগত দিক থেকে কোন কোন গুণের অভাব ঘটেছে খাতায় লেখ :
ক. কাল আমি যাব ট্রেনে বাড়ি করে।
খ. সূর্য পশ্চিম দিকে উদিত হয়।
গ. মন দিয়ে কর সবে…।
৩. একটি কর্তা ও একটি সমাপিকা ক্রিয়া আছে এমন দশটি বাক্য লেখ। এরপর সমাপিকা ক্রিয়াকে অপরিবর্তিত রেখে বাক্যটির কোনো অংশকে জটিল বাক্যে রূপান্তর কর। তারপর যথাসম্ভব সংযোজক বা বিয়োজক অব্যয়ের প্রয়োগে বাক্যটিকে যৌগিক বাক্যে রূপান্তর কর। যেমন :
তার বয়স হলেও বুদ্ধি হয় নি।
জটিল বাক্য : তার বয়স হয়েছে, বুদ্ধি হয় নি।
যৌগিক বাক্য : তার বয়স হয়েছে কিন্তু বুদ্ধি হয় নি ।
আরও দেখুনঃ