বনফুলের শ্রেষ্ঠ গল্প আমাদের “বুকরিভিউ [ Book Review ]” সিরিজের ৪র্থ পর্ব। আমাদের “বুকরিভিউ [ Book Review ]” সিরিজটিতে মূলত বিভিন্ন বই পাঠ ও এর রিভিউ করা হয়েছে। আজকের ভিডিওতে “বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় – বনফুলের শ্রেষ্ঠ গল্প [ Balai Chand Mukhopadhyay – Banfuler Shreshtha Galpo ]” বইটি পাঠ ও এর রিভিউ করা হয়েছে।
বনফুলের শ্রেষ্ঠ গল্প
বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় বাংলা সাহিত্যে একটি অতি পরিচিত নাম।কাব্যে নাটকে উপন্যাসে ছোটগল্পে তাঁর সৃষ্টিকর্ম যেমন অক্লান্ত তাঁর জীবনজিজ্ঞাসাও তেমনি অন্তহীন।ছোটগল্পের সংখ্যা তাঁর অল্প ন্য,কিন্তু শিল্পরীতি ও রুপকর্মের দিক দিয়ে পুনরাবৃত্তি তাঁর সৃষ্টিতে কোথাও নেই।বনফুলের শ্রেষ্ঠ গল্পগুলি পাঠ করে বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যাইয়ের প্রতি এমন মন্তব্য না করে পারলাম না।আমি গল্পগুলির সারাংশ না করে বরং গল্পগুলির পেছনে যে থিওরি প্রয়োগ করা হয়েছে সেই থিওরির সম্পর্কে বলছি।
বনফুলের শ্রেষ্ঠ গল্পগুলিতে অভিজ্ঞতাবাদ থিওরিটির প্রয়োগ লক্ষ্য করা যায়।অভিজ্ঞতাবাদ হচ্ছে একটি জ্ঞান তত্ত্ব। মানুষের জ্ঞানের উৎস কি এবং জ্ঞানের ক্ষমতা এবং সীবাবদ্ধতা কি এ বিষয়ে দর্শনে বিভিন্ন তত্ত্ব আছে। সাধারণভাবে অভিজ্ঞতাবাদ বলতে এরূপ তত্ত্বকে বোঝায় যে, মানুষের ইন্দ্রিয়- অভিজ্ঞতাই হচ্ছে জ্ঞানের একমাত্র উৎস। তবে অভিজ্ঞতা কথাটি দর্শনে ব্যাপক ব্যবহৃত শব্দ। ভাববাদ এবং বস্তুবাদ উভয় তত্ত্বে অভিজ্ঞতার ব্যবহার দেখা যায়।
‘ভিতর ও বাহির’, ‘মানুষের মন’, ‘অভিজ্ঞতা’ ও ‘তাজমহল’ গল্পগুলি অভিজ্ঞতাবাদের আলোকে বর্ণনাযোগ্য বলে আমার মনে হয়। ‘ভিতর ও বাহির’ গল্পে নবকিশোরবাবুর জীবনে ভিতর ও বাহির এই দুই মনের বিরোধের লীলা।পেশায় তিনি একজন উকিল। অভিজ্ঞতা প্রাপ্তির ফলে তাঁর জীবনে, ভিতরে বাহিরে সর্বদা বিরোধ ও জটিলতা দেখা যায়।
‘মানুষের মন’ গল্পে মানস-রহস্যের বোধ করি চরম শিল্পপ্রকাশ হয়েছে।নরেশ ও পরেশ দুই সহোদর ভাই। একজন গোঁড়া বৈজ্ঞানিক,অন্যজন গোঁড়া ধার্মিক।দুইজনের অভিজ্ঞতা ও জীবনপন্থা ভিন্ন।তাঁদের ভাইয়ের ছেলে পলটু যখন খুবই অসুস্থ তখন তাঁদের অভিজ্ঞতার প্রতিফলন ঘটে। তাঁরা যখন নিজেদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয় তখন বাস্তবতা এবং ভাগ্যর প্রতি ঝুঁকে পড়ে।অভিজ্ঞতার ফলে প্রাপ্ত ফল যখন কাজে লাগেনা তখন মানুষের অস্তিত্ব লোপ পায়।

বনফুলের শ্রেষ্ঠ গল্প | বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় :
আরও দেখুন: