বই সম্পর্কে মতামত জানিয়ে বন্ধুর কাছে চিঠি | পত্র বা চিঠি | ভাষা ও শিক্ষা , বাইবেলের বেশ কয়েকটি পরিচ্ছেদ চিঠিতে লেখা। অযক্তিগত, কূটনৈতিক বা বাণিজ্যিক- সবরকম চিঠিই পরবর্তীকালে ঐতিহাসিকগণ প্রাথমিক উৎস হিসেবে ব্যবহার করেন। কখনোবা চিঠি এতো শৈল্পিক রূপ পায় যে তা সাহিত্যের একটি বর্গ হয়ে ওঠে, যেমন বাইজেন্টাইনে এপিস্টোলোগ্রাফি বা সাহিত্যের পত্র উপন্যাস।
বই সম্পর্কে মতামত জানিয়ে বন্ধুর কাছে চিঠি
তোলা; সাতক্ষীরা ১১ নভেম্বর, ২০০০
প্ৰিয় ‘ক’,
আমার অনেক অনেক প্রীতি ও শুভেচ্ছা নিও। আশা করি ভালো আছ। গতকাল তোমার একটি চিঠি পেয়েছি। তুমি জানতে চেয়েছ, সম্প্রতি পড়া কোন্ বইটি আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে। এ সম্বন্ধে আমার মতামত তুলে ধরছি।সম্প্রতি পঠিত যে বইটি আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে তা হল : ‘বাংলাদেশ সচিত্র তথ্যকোষ’ (প্রধান সম্পাদক : প্রাকৃতজ শামিমরুমি টিটন)। প্রায় দু শতাধিক বিষয় বিশেষজ্ঞ কর্তৃক সম্পাদিত চার রঙে মুদ্রিত এ-গ্রন্থটি জ্ঞানান্বেষী ও অনুসন্ধিৎসু পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ ও সুশীল সমাজে সমাদৃত হবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায় রঙ- বেরঙের মনকাড়া ডিজাইন ও ইলাস্ট্রেশন দেখে বিস্মিত না হয়ে উপায় নেই।
এ যেন এক নিপুণ শিল্পীর বিশাল ক্যানভাসে আঁকা এক অনুপম চিত্র। বিশাল কলেবরের এ-গ্রন্থে দেশ ও জাতির ইতিহাস-ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, সুমহান উত্তরাধিকার, আর্থ-সামাজিক অবস্থা এবং ভৌগোলিক পরিবেশের উপর গুরুত্বারোপ করে বিস্তৃত উপস্থাপন করা হয়েছে। আকারে বড় হলে কী হবে, তুমি যখন এটি পড়বে আর ছাড়তে চাইবে না।
এক অসাধারণ মূল্যবান গ্রন্থ। গ্রন্থটিতে লেখক তাঁর ‘লেখকের কথা’ অংশে দাবি করেছেন যে, “গ্রন্থটি পাঠক ও শিক্ষার্থীদেরকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করা ও একজন পূর্ণাঙ্গ উৎপাদনশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠার সুযোগ সৃষ্টি করা যেমন এর মূল লক্ষ্য, তেমনি দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পর্কে জানবার আগ্রহ বাড়িয়ে তুলতেও গ্রন্থটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পারন করবে।’ লেখকের কথার সঙ্গে আমি সম্পূর্ণ একমত তো বটেই, — এর চেয়েও বেশি কিছু বলেই আমার কাছে মনে হয়েছে।

লেখক যে মায়ামমতার স্পর্শে রঙ-তুলিতে আমাদের দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে রাঙিয়ে তুলেছেন তা তোমার হৃদয় ছুঁয়ে যাবে। এছাড়া গ্রন্থটিতে ব্যাপকভিত্তিক যে সাধারণ জ্ঞানের সংযোজন করা হয়েছে তা উচ্চশিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে সফল প্রবেশের ভিত্তি হিসেবেও কাজ করবে। এতো প্রয়োজনীয় বই আমার চোখে আর দ্বিতীয়টি পড়ে নি। গ্রন্থটি পাঠ শেষে তুমিও আমার সঙ্গে একমত হবে। বইটির বিষয়সূচিকে মোট ১০টি ইউনিটে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি ইউনিটের বিষয়বস্তু ও ভুক্তিসমূহ সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা দিতে ব্যাপকভাবে ব্রুস রেফারেন্স, ফটো, চিত্র, মানচিত্র, চার্ট, সারণি, উপাত্ত, তথ্য ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়েছে।
প্রতিটি বিষয়ের সূত্র ও উৎস নির্দেশ রয়েছে বলে এ-গ্রন্থে গৃহীত তথ্যসমূহ নির্ভুল, বিশুদ্ধ ও হালনাগাদ। সব মিলিয়ে এমন তথ্যবহুল বই সবসময় হাতের কাছে রাখা ভালো। আমার বর্ণনা শুনে নিশ্চয়ই তোমারও বইটি পড়ার জন্য খুব লোভ হচ্ছে তাই না? আচ্ছা, সময়মতো পড়ে নিও। খুব কাজের বই, পড়লে উপকৃত হবে। আমি ভালো আছি। তোমার আব্বু ও আম্মুকে আমার সালাম দিও এবং ভাই-বোনকে দিও আমার অফুরন্ত আদর।
ইতি
প্রীতিমুগ্ধ
আরও দেখুন: