প্রতিবেদন রচনায় লক্ষণীয় বিষয় নিয়ে আজকের আলোচনা। এই পাঠটি আমাদের “ভাষা ও শিক্ষা” বিষয়ের ” নির্মিতি” বিভাগের একটি পাঠ।
Table of Contents
প্রতিবেদন রচনায় লক্ষণীয় বিষয় | নির্মিতি | ভাষা ও শিক্ষা
প্রতিবেদন রচনার জন্যে বিশেষ কতকগুলো বিষয়ের প্রতি লক্ষ রাখা আবশ্যক।
যেমন-
১. সুনির্দিষ্ট কাঠামো :
প্রতিবেদন রচনার জন্যে একটি নির্দিষ্ট কাঠামো অনুসরণ করা প্রয়োজন। এতে সাধারণত শিরোনাম, প্রাপকের নাম-ঠিকানা, আলোচ্য বিষয়ের সূচিপত্র, বিষয়বস্তু, তথ্যপঞ্জি, স্বাক্ষর, তারিখ ইত্যাদি থাকবে। অর্থাৎ প্রতিবেদন রচনার আগে প্রতিবেদনের একটি রূপরেখা তৈরি করে নিলে ভালো হয়।
২. সঠিক তথ্য :
প্রতিবেদন রচনার আগে সে বিষয়ের ওপর প্রয়োজনীয় তথ্য প্রতিবেদককে সংগ্রহ করতে হবে। প্রতিবেদনে পরিবেশিত তথ্য হতে হবে নির্ভুল, সম্পূর্ণ, নির্ভরযোগ্য ও তথ্যনির্ভর। একটি প্রতিবেদনকে কয়েকটি অনুচ্ছেদে বর্ণনা করা যেতে পারে।
৩. উপস্থাপনা ও পরিবেশনা :
প্রতিবেদনের উপস্থাপনা হতে হবে আকর্ষণীয়। এর বক্তব্য সুন্দর ও সাবলীল ভাষায় পরিবেশিত হতে হবে।
৪. প্রতিবেদনের আকার :
প্রতিবেদনের আকার নির্ভর করবে প্রতিবেদনের বিষয়ের ওপর। বিষয়ের গুরুত্ব ও পরিধি অনুপাতে প্রতিবেদন এক পৃষ্ঠা থেকে একশত পৃষ্ঠা কিংবা তারও বেশি হতে পারে। বড় প্রতিবেদন সাধারণত পুস্তকাকারে হয়ে থাকে। এ ধরনের প্রতিবেদনে পরিসংখ্যান, সারণি, চিত্র ইত্যাদি সংযোজিত থাকে।

প্রতিবেদনের শ্রেণিবিভাগ
প্রতিবেদনকে নানা নামে ও বিশেষণে অভিহিত করা হয়। যেমন : নিয়মিত প্রতিবেদন, সাময়িক বা খসড়া প্রতিবেদন, চূড়ান্ত প্রতিবেদন, রীতিসিদ্ধ বা রীতিবিরুদ্ধ প্রতিবেদন, বিশেষ প্রতিবেদন, নির্বাহী প্রতিবেদন, প্রার্থিত বা অপ্রার্থিত প্রতিবেদন, কোম্পানি প্রতিবেদন, বাৎসরিক প্রতিবেদন, সরকারি বা বেসরকারি প্রতিবেদন ইত্যাদি। তবে মোটাদাগে প্রতিবেদনকে দু ভাগে ভাগ করা হয়। যথা :
১। সংবাদ প্রতিবেদন :
সংবাদপত্রে প্রকাশিত কোনো ঘটনা সম্পর্কিত প্রতিবেদনকে সংবাদ প্রতিবেদন বলে। নিজস্ব অনুপাতে প্রতিবেদন এক পৃষ্ঠা থেকে একশত পৃষ্ঠা কিংবা তারও বেশি হতে পারে। বড় প্রতিবেদন সাধারণত পুস্তকাকারে হয়ে থাকে। এ ধরনের প্রতিবেদনে পরিসংখ্যান, সারণি, চিত্র ইত্যাদি সংযোজিত থাকে। প্রতিবেদনকে নির্দিষ্টভাবে শ্রেণিবিভাগ করা সম্ভব নয়, কেননা বিষয়ের বৈচিত্র্য অনুযায়ী প্রতিবেদনও নানা প্রকার হয়ে থাকে। সাধারণত প্রতিবেদনেই বলা হয় বা প্রকাশিত হয় যে এটি কোন ধরনের প্রতিবেদন। বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে সংবাদদাতা বা প্রতিবেদক এবং বিভিন্ন দেশি-বিদেশি সংবাদ সংস্থার মাধ্যমে এসব সংবাদ সংগ্রহ করা হয়।
২। দাপ্তরিক বা প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন :
দাপ্তরিক বা প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন এমন এক ধরনের বিবরণ যাতে প্রাতিষ্ঠানিক কোনো ঘটনা, স্থান, অবস্থা প্রভৃতি বিষয় যাচাই করে সে সম্পর্কিত তথ্য, তত্ত্ব, উপাত্ত তুলে ধরা হয়। দাপ্তরিক প্রতিবেদন দু ধরনের হয়। যেমন : (ক) তদন্ত প্রতিবেদন : এটি কোনো ঘটনা, দুর্ঘটনা, গোলযোগ, হত্যাকাণ্ড ইত্যাদি সম্পর্কে উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে তদন্ত সাপেক্ষে প্রকাশ করা হয়। (খ) কারিগরি প্রতিবেদন : এটি সাধারণত উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয়, প্রযুক্তিগত সম্ভাব্যতা, জনস্বার্থে অবদান, অর্থনৈতিক লাভালাভ ইত্যাদি বিষয়ে তথ্যভিত্তিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। যেমন : “পদ্মা সেতুর সম্ভাব্যতা যাচাই’-একটি কারিগরি প্রতিবেদনের উদাহরণ।
আরও দেখুন: