নবীনবরণ উপলক্ষে অভিনন্দনপত্র | অভিনন্দন পত্র | ভাষা ও শিক্ষা

নবীনবরণ উপলক্ষে অভিনন্দনপত্র | অভিনন্দন পত্র | ভাষা ও শিক্ষা , আনুষ্ঠানিকভাবে কাউকে বরণ বা বিদায় জানানাের জন্যে যে সম্মাননাপত্র রচনা করা হয়, তাকে মানপত্র বলে। মানপত্র সাধারণত সামাজিক, আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে প্রচুর দর্শক-শ্রোতার উপস্থিতিতে পাঠ করে সংবধেয় ব্যক্তির হাতে তুলে দেওয়া হয়।

 

নবীনবরণ উপলক্ষে অভিনন্দনপত্র

সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির

নবাগত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা উপলক্ষে অভিনন্দন

এসো হে নতুন

হে নবীন বন্ধুরা,

নতুন স্বপ্নের সুষমা নিয়ে আলোর সাথী হয়ে তোমরা এসেছো এই ঐতিহ্যবাহী বিদ্যানিকেতনের সবুজ চত্বরে। তোমাদের পদচারণায় আজ এ অঙ্গন মুখরিত। এখান থেকে শুরু হবে তোমাদের নবযাত্রা—

‘যাত্রা তব শুরু হোক হে নবীন, কর হানি দ্বারে নবযুগ ডাকিছে তোমারে। ’

যাত্রার প্রাক্কালে তোমরা আমাদের অজস্র শুভেচ্ছা গ্রহণ করো। আমরা তোমাদের বরণ করছি একরাস আনন্দ আর স্নেহ-

মায়া-মমতাপূর্ণ ভালোবাসা দিয়ে।

হে শিক্ষার্থী বন্ধুরা,

তোমরা বিদ্যালয়ের ক্ষুদ্র গণ্ডি এবং স্নেহনীড় ছেড়ে বৃহৎ-বিশ্বের আলোর জগতে পদার্পণ করেছ। তোমাদের সামনে এক অনন্ত জ্ঞানের আলোর জগৎ। তোমরা সেই আলোর জগতের অভিসারী। আলোকিত মানুষ হবার পথে যাত্রা তোমাদের সফল হোক—এটাই আমাদের কামনা। কবিকণ্ঠের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে বলি।

শুনিতেছি আমি, শোন ঐ দূরে-তূর্যনাদ,

ঘোষিছে নবীন ঊষার উদয়- সুসংবাদ।’

হে নবীন সাধক,

তোমাদের স্কুলজীবনে তোমাদের বাবা-মা, শিক্ষক সকলেই তোমাদের ওপর স্নেহদৃষ্টি ও শাসনদৃষ্টি রাখতেন। তোমাদের চলার পথে তাঁরা ছিলেন অতন্দ্র প্রহরী। আজকে তোমাদের দায়িত্ব তোমাদেরই নিতে হবে। তোমাদের যে উদ্দেশ্যে বিদ্যাশিক্ষা, সে সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। এখানে যদি তোমাদের পদস্খলন ঘটে, তাহলে তোমাদের ভবিষ্যৎজীবন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে। তোমাদের অভিযাত্রায় একাগ্র সাধনা, কর্মে অনুরাগ, প্রচেষ্টায় আন্তরিকতা আর জীবনের সামনে মহৎ আদর্শ বিরাজমান থাকলে জীবনের সফলতা অনিবার্য।

 

হে অভিযাত্রী দল,

উচ্ছল তারুণ্যের প্রাচুর্য তোমাদের মধ্যে বিরাজমান। আজ যখন তোমাদের বরণ করে নিতে চলেছি তখন সমগ্র বিশ্ব পা ফেলেছে বিস্ময়কর সম্ভাবনাময় একুশ শতকে। বিশ্বায়নমুখী আমাদের প্রিয় দেশটিতে তখন অশিক্ষা, দারিদ্র্য, নৈরাজ্য, সন্ত্রাস ইত্যাদি ফেলেছে ভয়াল কালো থাবা। তোমরা অফুরন্ত প্রাণশক্তির অধিকারী। আমাদের বিশ্বাস, প্রাণবন্ত তারুণ্য নিয়ে, ব্রতী হবে মহৎ স্বপ্নচোখে— তোমরা অবস্থান নেবে মূল্যবোধের অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে। ব্রতী হবে মহৎ মানবিক শিক্ষা সাধনায়, নিজেদের গড়ে তুলবে অগ্রসর স্বদেশ ও মানবিক বিশ্ব রচনার স্থপতি হিসেবে। এই প্রত্যাশার পতাকা উড়িয়ে আমরা তোমাদের আবাহন করি। ফুলে-ফসলে সমৃদ্ধ হোক তোমাদের যাত্রাপথ ।

 

হে বন্ধুগণ,

আগমনের ধারায় তোমাদের মতো নবীনরূপে এই বিদ্যাপীঠে এসেছিলেন অসংখ্য মেধাবী তরুণ। তাদের অনেকেই দেশ-বিদেশে স্মরণীয় হয়ে আছেন এই অঙ্গনে সার্থক শিক্ষা পেয়ে। এরই ধরাবাহিকতায় তোমরা এই বিদ্যানিকেতনে রচনা কর গৌরবময় ইতিহাসের আরেক অধ্যায়। তোমরা দেশের আগামী দিনের কর্ণধার। তোমাদের সততা, অধ্যবসায় ও কর্তব্যনিষ্ঠা, সংযত আচরণ, বিনম্র মনোবৃত্তি, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যাভিসার, গভীর পাঠানুরাগ তোমাদের দান করুক মহত্তর চারিত্রিক সম্পদ। সঠিক পথে দিশা পেতে বিদ্যাপীঠের শিক্ষকদের প্রতি সর্বদা বিনয়ী থাকবে। তোমাদের জীবন হোক সুন্দর, আগমন হোক সার্থক। কবিকণ্ঠের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে বলি—

‘তোমরা এসেছ ভেঙ্গেছ অন্ধকার / তোমরা এসেছ ভয় করি নাকো আর. পায়ের স্পর্শে মেঘ কেটে যাবে রোদ্দুর / ছড়িয়ে পড়বে বহুদূর বহুদূর।’

ব্রজমোহন কলেজ,

বরিশাল ১৫ জুলাই, ২০০০

অনেক অভিনন্দনসহ

দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রছাত্রীবৃন্দ কলেজ, বরিশাল

 

আরও দেখুন:

 

Leave a Comment