তেলা মাথায় তেল দেওয়া মনুষ্য-জাতির রোগ – ভাব-সম্প্রসারণের একটি নমুনা তৈরি করে দেয়া হল। আগ্রহীরা এখন থেকে ধারণা নিয়ে নিজের ভাষায় নিজস্ব সংস্ককরণ তৈরি করবেন। ভাব সম্প্রসারণ সাধারণত কবিতা বা যে কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে একটি চলন এর মাধ্যমে তা ভাবে পূর্ণ বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। আর এই আলোচনায় ভাবনা লুকায়িত সকল মানব জীবনের আদর্শ এবং ব্যক্তিচরিত্রের বিশেষ বৈশিষ্ট্য, নৈতিকতা এবং বিচ্যুতি ফুটে উঠে।
তেলা মাথায় তেল দেওয়া মনুষ্য-জাতির রোগ
তেলা মাথায় তেল দেওয়া মনুষ্য জাতির রোগ” লাইনটি আমাদের সকলের খুব পরিচিত।লাইনটির মধ্যে অনেক ভাব অন্তর্নিহিত রয়েছে।যা যথাযথ ভাবে সরল সহজ ভাষায় তুলে ধরায় আজকের উপস্থাপন “তেলা মাথায় তেল দেওয়া মনুষ্য জাতির রোগ” ভাবসম্প্রসারণ। মনুষ্য সৃষ্ট সমাজে এখনও সব মানুষ সমানভাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠত করতে পারেনি।ধনী – গরীব,শক্তিশালী – দুর্বল,ক্ষমতাশালী – অক্ষম নানান ধরনের মানুষের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে মানবসমাজ।সেই সাথে গড়ে উঠেছে মানসিক ব্যবধানের অদৃশ্য প্রাচীর।
দরিদ্র,লাঞ্ছিত,ভাগ্যহত মানুষ সহানুভূতি ও সেবার পাত্র।সমাজের এই শ্রেণীর মানুষদের প্রতি দেশ ও দশের মনোযোগ বর্ষিত হওয়া উচিত।কিন্তু অধিকাংশ মানুষই এই মহান আদর্শ থেকে হয়েছে কক্ষচ্যুত।সমাজে ধনী ক্ষমতাবান মানুষের প্রতি হয়েছে নতজানু।
সম্পদ,টাকা থাকায় অজস্র প্রাপ্তির ফলে যার পার্থিব প্রয়োজন সম্পূর্ণ মিটেছে তার ঘরেই মানুষ পৌঁছে দেয় উপহার উপচার।দেশকাল নির্বিশেষে মনুষ্য চরিত্রের এই দুর্বলতা সর্বত্র প্রকট। ধনী অতিথিদের আমরা সগৌরবে সম্বর্ধনা জানাই,দরিদ্ররা হয় নিরব লাঞ্ছনার শিকার।যাদের আর্থিক অবস্থা সচ্ছল তারা লাভ করে আদর আপ্যায়নের উচ্ছ্বাস,অন্যদিকে যারা ভাগ্যহত আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ তারা পায় নিরাসক্ত উদাসীনতা অথবা ভ্রুকুটি কুটিল ভর্ৎসনা।

এই অসঙ্গতি ব্যাক্তি মানুষের সীমা অতিক্রম করে সমাজ মানসের ব্যেধিতে পরিণত হয়েছে।যার প্রকৃত পক্ষে সাহায্যের প্রয়োজন তাদের সাহায্য না করে,যাদের অনেক আছে মানুষ তাদের উপহার দিতেই বেশি ভালোবাসে।এর মূলে রয়েছে এক হীনমন্য মানসিকতা।মূলত এর জন্যই পৃথিবীর সংখ্যাগরিষ্ট দরিদ্র মানুষ অবহেলিত ও লাঞ্ছিত।এই সমস্ত মানুষের প্রতি অবহেলা বস্তুত মানবতার এক চরম অপমান।লোক ব্যাবহারের এই সংকীর্ণতা কে,চেতনার এমন অপূর্ণতাকে এমন স্থুলতাকেই মনুষ্য জাতির রোগ বলা হয়েছে।
আরও দেখুন: