ণত্ব ও ষত্ব বিধান নিয়ে আজকের আলোচনা। বাংলা ভাষায় সাধারণত মূর্ধন্য-ণ এবং মূর্ধন্য-ষ ধ্বনির ব্যবহার নেই বলে বাংলা দেশি, তদ্ভব, ও বিদেশি শব্দের বানানে মূর্ধন্য-ণ বা মূর্ধন্য-ষ লেখার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত বহু তৎসম বা সংস্কৃত শব্দে মূর্ধন্য-ণ এবং মূর্ধন্য-ষ রয়েছে। সে-সব বাংলায় অবিকৃত অবস্থায় রক্ষিত হয়। অর্থাৎ ণত্ব ও ষত্ববিধি শুধু তৎসম শব্দের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, অতৎসম শব্দে নয়। ণত্ব ও ষত্ববিধির প্রাচীন পরিভাষা ‘নতি’। নতি মানে ‘ন’–এর ‘ণ’-এ পরিণতি এবং স্-এর ষ-এ পরিণতি।
ণত্ব ও ষত্ব বিধান
ণত্ব-বিধান : যে রীতি অনুসারে বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত তৎসম বা সংস্কৃত শব্দের বানানে ‘ন’ (দন্ত্য-ন) স্থানে ‘ণ’ (মূর্ধন্য-ণ) ব্যবহৃত হয় তাকে ণত্ব-বিধান বলে। অর্থাৎ তৎসম শব্দের বানানে ণ-এর সঠিক ব্যবহারের নিয়মই ণত্ব বিধান। যেমন : ঋণ, কারণ, মরণ, ভীষণ, ভাষণ ইত্যাদি। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মতে, ‘শুধু সংস্কৃত শব্দে যেখানে মূর্ধন্য-ণ আছে, বাংলা ভাষায় ব্যবহারের সময় সেখানে তাই রাখতে হবে। এটাই ণত্ব-বিধান।
যে রীতি অনুসারে বাংলা ভাষায় ব্যৱহৃত তৎসম বা সংস্কৃত শব্দের বানানে মূর্ধন্য-ষ ব্যবহৃত হয় তাকে ষত্ব-বিধান বলে। অর্থাৎ তৎসম শব্দের বানানে ষ-এর সঠিক ব্যবহারের নিয়মই ষত্ব-বিধান। যেমন— বিষ, কৃষক, বর্ষণ, আষাঢ়, আভাষ ইত্যাদি। ষত্ব-বিধান সম্বন্ধে বিদ্যাসাগরের মত, ‘সংস্কৃত বা তৎসম শব্দে ‘য’ ব্যবহারের নিয়মগুলো ষত্ব-বিধান বলে পরিচিত এবং এগুলো ণত্ব-বিধানের মতো সংস্কৃত থেকে এসেছে।
ণত্ব-বিধানের নিয়মাবলি সাধারণভাবে তৎসম শব্দে ঋ, র, ষ -এর পর মূর্ধন্য ‘ণ’ ব্যবহৃত হবে।
আরও দেখুন: