ড. আলাউদ্দিন আল আজাদ বাংলাদেশের বিপ্লবী কবি, মানবতাবাদী ও সব্যসাচী লেখক, শিক্ষাবিদ, গবেষক, মুক্তিযোদ্ধা ও ভাষা সংগ্রামী। আজাদ ১৯৩২ সালের ৬ মে নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার রামনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

আজাদ ১৯৪৭ সালে নারায়নপুর শরাফত উল্লাহ উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয থেকে ম্যাট্রিক, ১৯৪৯ সালে ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে আইএ পাশ করেন। এরপর ১৯৫৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় বিএ অনার্সে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে উত্তির্ণ হন। আজাদ ১৯৫৪ সালে এমএ পাশ করেন, সেখানেও প্রথম শ্রেণিতে প্রথম। ১৯৭০ সালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন এবং ১৯৮৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের অরেগন বিশ্ববিদ্যালয় তেকে তুলনামূলক সাহিত্যে সম্মানসূচক প্রশংসাপত্র লাভ করেন।
ড. আলাউদ্দিন আল আজাদ বাংলাদেশের শিক্ষা, গবেষণা ও সাহিত্যে জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র ও অন্য প্রতিভা। তিনি ১৯৮২ সালে চট্টগাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা শুরু করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের নজরুল গবেষণা কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক। তার রচিত ও প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ১৪৯টি। গল্প, উপন্যাস, নাটক, কবিতা, প্রবন্ধ, অনুবাদ, গবেষণা ও সম্পাদনাসহ সাহিত্যের প্রায় প্রতিটি শাখায় তার সার্বিক পদচারণা।
১৯৫২ সালে ভাষা-আন্দোলনে তিনি সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। একুশের রক্তাক্ত ঘটনায় পর পরই তারই উদ্যোগে প্রকাশিত হয় বুলেটিন। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে গর্বিত সৈন্য তিনি। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকথা নিয়ে রচিত ‘ফেরারি ডায়েরি’ সমকালীন ইতিহাসের এক অমূল্য ও অবিস্মরণীয় দলিল হিসেবে বিবেচিত। তিনি ছিলেন জনপ্রিয় টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব।
বাংলাদেশের সাহিত্য ক্ষেত্রে গৌরবময় অবদানের জন্য তিনি বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৬৪), ইউনেস্কো পুরস্কার (১৯৬৫), একুশে পদক (১৯৮৬) সহ আরও দেশ-বিদেশের ১৯টি বিরল সম্মাননা পদক লাভ করেন।
২০০৯ এর ৩রা জুলাই শুক্রবার রাতে ঢাকার উত্তরায় নিজ বাসভবন রত্নদ্বীপে তিনি বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন।

ড. আলাউদ্দিন আল আজাদ এর কাব্যগ্রন্থঃ
মানচিত্র (১৯৬১),
ভোরের নদীর মোহনায় জাগরণ (১৯৬২),
সূর্যজ্বালার সোপান (১৯৬৫),
লেলিহান পাণ্ডুলিপি(১৯৭৫),
নিখোঁজ সনেটগুচ্ছ (১৯৮৩),
আমি যখন আসবো (১৯৮৪),
অ্যাসেস অ্যাণ্ড স্পার্কস (১৯৮৪),
সাজঘর (১৯৯০),
চোখ(১৯৯৬),
শ্রেষ্ঠ কবিতা (১৯৯৯),
এই নাও আমার প্রেম লাল গোলাপ (২০০০)
আরও দেখুন:
ড. আলাউদ্দিন আল আজাদ এর ফটো এ্যলবাম: