জাল কহে পঙ্ক আমি উঠাব না আর | ভাব-সম্প্রসারণ | ভাষা ও শিক্ষা

জাল কহে পঙ্ক আমি উঠাব না আর | ভাব-সম্প্রসারণ | ভাষা ও শিক্ষা , ভাব সম্প্রসারণ এর সময় সেই চরণের মূল গভীর ভাবটুকু উদ্ধার করে প্রয়োজনীয় যুক্তি, বিশ্লেষণ এবং উপমা ব্যবহার করে সেইসাথে প্রয়োজন অনুসারে উদাহরণের মাধ্যমে উপস্থাপন করার প্রক্রিয়া। কবি বা লেখকের যেখানে তার বক্তব্যকে ব্যঞ্জন এবং ইঙ্গিত ধর্মী করে প্রকাশ করেন সেগুলো কে আলোক ধর্মী হিসাবে উপস্থাপন করার মাধ্যমে ভাব সম্প্রসারণ করা হয়।

জাল কহে পঙ্ক আমি উঠাব না আর

জেলে কহে, ‘মাছ তবে পাওয়া হবে ভার। ’

মাছ পানির মধ্যে থাকে। জেলে পানির মধ্যে জাল ফেলে মাছ ধরতে গেলে জাল নদীর তলার কাদা ঘসে ঘসে আসে। ফলে মাছ আর পালাতে পারে না। তবে জালে কাদা লেগে যায়। জেলে যদি জালে কাদা না লাগিয়ে মাছ ধরতে চায় তাহলে তা হবে পণ্ডশ্রম। কারণ জালে কাদা না লাগিয়ে মাছ ধরা কোনো ক্রমেই সম্ভব নয়। এই পৃথিবীর সংগ্রামসঙ্কুল কর্মক্ষেত্ররূপ জলধিতে প্রতিটি ভাগ্যান্বেষী মানুষ এক একজন জেলের মতো। কর্মফল রূপ মাছ ধরতে হলে তাকে বারবার প্রচেষ্টার জাল ফেলতে হয়। তাতে দুঃখের পাঁক মেখে থাকে। এই দুঃখকে এড়িয়ে চলা সম্ভব নয়। মানুষের কাম্য হল সুখ, কিন্তু সে-সুখের গন্তব্যে পৌঁছানোর পথটা সংগ্রামসঙ্কুল।

 

জাল কহে পঙ্ক আমি উঠাব না আর

 

কষ্ট তাকে করতেই হয়, নইলে কেষ্ট মিলবে না। বিনা শ্রমে কোনো কিছুই অর্জন করা সম্ভব নয়। শ্রমের মধ্যেই যাবতীয় অভীষ্টলাভ এবং সুখের বীজ নিহিত। কিন্তু কষ্টের ভয়ে এ-কাজ থেকে দূরে সরে থাকলে অভীষ্ট লাভ কখনই সম্ভব নয়। বস্তুত, ভালো-মন্দ, দুঃখ-বেদনা, হাসি-কান্না, বাধা-বিপদ, আশা-নিরাশা নিয়েই মানুষের জীবন। জীবনে আঘাত আসবে, বিভিন্ন বাধা-বিঘ্ন আসবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আঘাতের পরেই আসে সাফল্য। যে আঘাতের ভয়ে, দুঃখ-কষ্টের ভয়ে কাজ না করে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকে পরিণামে সে ভালো ফল থেকে হয় বঞ্চিত। তেমনি শুধু ভালোকেই গ্রহণ করতে হবে কিংবা মন্দকে আসতে দেয়া যাবে না, এমনটি মনে করা ঠিক নয়।

 

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

কেননা মন্দের মাপকাঠিতেই ভালোটা উপলব্ধি করা যায়। অন্ধকার না থাকলে যেমন আলোর মহিমা বুঝা যায় না, পাপ না থাকলে পুণ্যের গৌরব বুঝা যায় না, তেমনি মন্দ না থাকলে ভালোকে চেনা যায় না। মন্দ জিনিসের মধ্য থেকেই ভালো জিনিস চিনে নিতে হয়।

 

জাল কহে পঙ্ক আমি উঠাব না আর

 

কর্মক্ষেত্রের এ পৃথিবীতে কষ্ট, ত্যাগ, তিতিক্ষা ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে সাফল্য অর্জন করতে হয়। ইস্পিত লক্ষ্যে ‘ পৌঁছতে হলে কঠোর পরিশ্রম ও সহিষ্ণুতার সঙ্গে সংগ্রাম করতে হয়। এতে কর্মের মধ্যে হেয় বা বিদ্বেষ মনোভাব পোষণ করলে মানব জীবনে সভ্যতার রূপ পরিবর্তন সম্ভব নয়।

আরও দেখুন:

Leave a Comment