খণ্ডবাক্য বাক্যতত্ত্ব | ভাষা ও শিক্ষা

খণ্ডবাক্য বাক্যতত্ত্ব | ভাষা ও শিক্ষা , একটি সরল বা সম্প্রসারিত উদ্দেশ্য এবং সরল বা সম্প্রসারিত একটিমাত্র বিধেয়ক্রিয়ার (সমাপিকা) সমষ্টি যদি নিজে একটা স্বাধীন বাক্য হিসেবে ব্যবহৃত ন না হয়ে অন্য কোনো বৃহত্তর বাক্যের অংশরূপে ব্যবহৃত হয়, তাহলে তাকে খণ্ডবাক্য (Clause) বলে। যেমন যে তোমার মঙ্গল চায়, সেই তোমার বন্ধু। খণ্ডবাক্য খণ্ডবাক্য স্মরণ রাখতে হবে ⇒ খণ্ডবাক্যে মাত্র একটি সমাপিকা ক্রিয়া থাকবে। তা অন্য একটি বাক্যাংশের অংশরূপে ব্যবহৃত হবে। ~ খণ্ডবাক্যের প্রকারভেদ খণ্ডবাক্যকে নিম্নরূপে শ্রেণিবিভক্ত করা যায় : ১. প্রধান খণ্ডবাক্য এবং ২. আশ্রিত বা পরাধীন খণ্ডবাক্য

খণ্ডবাক্য বাক্যতত্ত্ব | ভাষা ও শিক্ষা

১. প্রধান খণ্ডবাক্য : বাক্যস্থিত যে খণ্ডবাক্য তার নিজের অর্থ প্রকাশের জন্যে অন্য কোনো খণ্ডবাক্যের ওপর গঠনগত দিক থেকে দিক থেকে নির্ভরশীল নয়, তাকে প্রধান খণ্ডবাক্য বলে। প্রকৃতপক্ষে, প্রধান খণ্ডবাক্যকে সম্পূর্ণ (বৃহত্তর) বাক্য থেকে তুলে এনে আলাদাভাবে সম্পূর্ণরূপে অর্থপ্রকাশক একটা বাক্য হিসেবে ব্যবহার করা যায়। যেমন : তুমি যদি আস সে যাবে। যে তোমার মঙ্গল চায়, সেই তোমার বন্ধু। এখানে ‘সে যাবে’ বা ‘সেই তোমার বন্ধু’ খণ্ডবাক্যকে আলাদা বাক্য হিসেবেও ব্যবহার করা যেত।

 

খণ্ডবাক্য বাক্যতত্ত্ব | ভাষা ও শিক্ষা

 

২. আশ্রিত খণ্ডবাক্য : বাক্যস্থিত যে খণ্ডবাক্য তার অর্থ সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করার জন্য প্রধান খণ্ডবাক্যটার ওপর নির্ভরশীল, এবং যাকে সম্পূর্ণ (বৃহত্তর) বাক্য থেকে তুলে এনে আলাদাভাবে লিখলে একটা পূর্ণ অর্থ প্রকাশ পায় না, আকাঙ্ক্ষা রয়ে যায়, তাকে আশ্রিত খণ্ডবাক্য বলে। যেমন : তুমি যদি আস সে যাবে। যে তোমার মঙ্গল চায়, সেই তোমার বন্ধু। এখানে ‘তুমি যদি আস’ বা ‘যে তোমার মঙ্গল চায়’ খণ্ডবাক্যকে আলাদা বাক্য হিসেবে ব্যবহার করা যায় না। কারণ, ‘তুমি যদি আস’ কিংবা ‘যে তোমার মঙ্গল চায়’- ি – লিখলে বাক্যে আকাঙ্ক্ষা থেকে যায়।

আশ্রিত খণ্ডবাক্যগুলো নিম্নলিখিত কয়েক প্রকারের হয়ে থাকে : ক. বিশেষ্যস্থানীয় আশ্রিত খণ্ডবাক্য : যে আশ্রিত খণ্ডবাক্য প্রধান খণ্ডবাক্যের কোনো পদে (অধিকাংশ ক্ষেত্রে ক্রিয়ার কর্মরূপে) আশ্রিত থেকে বিশেষ্যের কাজ করে, তাকে বিশেষ্যস্থানীয় আশ্রিত খণ্ডবাক্য বলে। যেমন আমি এখনি জানি যে সে আসবে না। ‘যে সে আসবে না’ আশ্রিত খণ্ডবাক্যটা ‘আমি জানি’– এই প্রধান খণ্ডবাক্যটার ‘জানি’ ক্রিয়ার কর্মরূপে ব্যবহৃত হয়েছে। কর্মরূপে যেহেতু ব্যবহৃত হয়েছে, সেহেতু এটা বিশেষ ছাড়া হিসাব করছে কত টাকা সে পেয়েছে। তুমি বল কখন যাওয়া উচিত। আর কিছু নয়।

 

খণ্ডবাক্য বাক্যতত্ত্ব | ভাষা ও শিক্ষা

 

এভাবে : সে খ. বিশেষণস্থানীয় আশ্রিত খণ্ডবাক্য : যে আশ্রিত খণ্ডবাক্যে প্রধান খণ্ডবাক্যের কোনো বিশেষ্য বা সর্বনাম পদের দোষ, গুণ, অবস্থা প্রকাশ করে, বা তার অর্থের সীমা সংকুচিত করে দেয়, তাকে বিশেষণস্থানীয় আশ্রিত খণ্ডবাক্য বলে। যেমন : সেই ছেলেটা, যাকে তুমি গতকাল দেখেছিলে, আজ আবারও এসেছে। এখানে ‘সেই ছেলেটা আজ আবারও এসেছে’— এটা হল প্রধান খণ্ডবাক্য।

 

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

মোটা অক্ষরের আশ্রিত খণ্ডবাক্যটি ‘ছেলেটা’–কে বিশেষিত করেছে। সুতরাং এটা হল বিশেষণস্থানীয় আশ্রিত খণ্ডবাক্য। এভাবে— যা তুমি জান না তা তোমার ক্ষতির কারণ হতে পারে। গ. ক্রিয়া-বিশেষণস্থানীয় আশ্রিত খণ্ডবাক্য : যে আশ্রিত খণ্ডবাক্য প্রধান খণ্ডবাক্যের ক্রিয়াপদের সংঘটিত হওয়ার স্থান, কাল, কারণ, উদ্দেশ্য নির্দেশ করে, তাকে বলে ক্রিয়া-বিশেষণস্থানীয় আশ্রিত খণ্ডবাক্য। যেমন : ‘যেখানে দেখিবে ছাই উড়াইয়া দেখ তাই।’ (স্থান) সুখী হতে চাই বলে সুখ চাই নে। (কারণ) )

আরও দেখুন:

Leave a Comment