ক্রন্দিছে নিখিল বন্দী সারাংশ সারমর্ম দেখবো আজ। এই পাঠটি আমাদের ভাষা ও শিক্ষা সিরিজের , সারাংশ সারমর্ম বিভাগের একটি পাঠ।
Table of Contents
ক্রন্দিছে নিখিল বন্দী সারাংশ সারমর্ম লিখন
ক্রন্দিছে নিখিল বন্দী… রচনাটি ভালোভাবে পড়ে নেবো। এরপর আমরা সারাংশ সারমর্ম তৈরি করবো। তারপর সারাংশ সারমর্ম তৈরি করার নিয়মের দিকে একটু চোখ বুলিয়ে নেব।
ক্রন্দিছে নিখিল বন্দী কবিতা
ক্রন্দিছে নিখিল বন্দী,
হে নবীন, মুক্ত কর তারে,
নিয়ে চল আলো অভিসারে।
পৃথিবীর অধিকার বঞ্চিত যে ভিক্ষুকের দল—
জীবনের বন্যাবেগে তাদের কর বিচঞ্চল।
অসত্য অন্যায় যত ডুবে থাক, সত্যের প্রসাদ
পিয়ে লভ অমৃতের স্বাদ। অজস্র মৃত্যুরে লঙ্ঘি হে নবীন,
চল অনায়াসে মৃতুঞ্জয়ী জীবন-উল্লাসে।
ক্রন্দিছে নিখিল বন্দী সারমর্ম :
মৃত্যুভয়কে তুচ্ছজ্ঞান করে নবীনকে বিপদসংকুল পথে অগ্রসর হতে হবে। নিপীড়িত ও শোষিত মানুষদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় তাকে সংগ্রামের পথ বেছে নিতে হবে। এ পথই মানবতার চিরায়ত কল্যাণের পথ।
বক্তা বা লেখক মনের বিচিত্র ও গভীর ভাব তাঁর নানা উপমা, অলংকার, বিশেষণ ইত্যাদির সাহায্যে প্রকাশ করেন। রচনা গদ্য কিংবা কবিতা যাই হোক, তার মৌলিক অংশটুকু বিবেচনার বিষয়। বক্তা বা লেখকের বক্তব্যের সার বা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় অংশই সারাংশ। পক্ষান্তরে কোনো গদ্য বা পদ্য রচনার মূলভাব বা মর্মকথা সক্ষেপে গুছিয়ে লেখার নামই সারমর্ম। প্রদত্ত গদ্য বা গদ্যাংশের ভাষা বড় কথা নয়, ভাষাতীত ভাব, অর্থাৎ ভাবের মর্মার্থ বিবেচনার বিষয়। মূলীভূত ভাবের যথার্থ ব্যঞ্জনা বা লেখকের উদ্দিষ্ট বক্তব্য খুঁজে বের করাই সারমর্ম লিখনের প্রথম শর্ত। কল্পনা বা ভাব দ্যোতনার মাধ্যমে নিজস্ব ভাষায় সংক্ষেপে সারমর্ম লিখতে হয়।
কবি-সাহিত্যিকগণ যখন তাঁদের সাহিত্যের রচনাকে সৃষ্টি করেন তখন মূলকথাটি রসমধুর করে অর্থাৎ খুবই মর্মগ্রাহী করে প্রকাশ করেন। এর মূল লক্ষ্য হল শ্রোতা বা পাঠকের মনকে আকর্ষণ করা। আর এ-জন্যে মূলকথাটির সঙ্গে বেঁধে দেয়া হয় ছন্দ, অলঙ্কার, উপমা, দৃষ্টান্ত ইত্যাদি। ফলে মূল বক্তব্যের গায়ে লাগে রসের প্রলেপ। রবীন্দ্রনাথের ভাষায়, ‘শুধু কথা যখন খাড়া দাঁড়িয়ে থাকে, তখন কেবলমাত্র অর্থকে প্রকাশ করে। কিন্তু, কথাকে যখন তির্যক ভঙ্গি ও বিশেষ গতি দেওয়া যায়, তখন সে আপন অর্থের চেয়ে আরও কিছু বেশি প্রকাশ করে। সেই বেশিটুকু যে কী, তা বলা শক্ত। কেননা, তা কথার অতীত; সুতরাং অনির্বচনীয়। যা আমরা দেখছি, শুনছি, জানছি তার সঙ্গে যখন খুঁজে বের করা একটু কঠিনই হয়। অনির্বচনীয়র যোগ হয়, তখন তাকেই আমরা বলি ‘রস’।
সারাংশ সারমর্ম তৈরি করার নিয়ম:
সারাংশ সারমর্ম বলতে কোন বৃহত্তর রচনা, যেমন কোন গবেষণাপত্র, সন্দর্ভ, অভিসন্দর্ভ, পর্যালোচনা, সম্মেলন বিবরণী, বা যেকোন বিষয়ের উপর গভীর বিশ্লেষণী কোন রচনার মূল বিষয়বস্তুর ধারণা প্রদানকারী একটি সংক্ষিপ্ত রচনাকে বোঝায়। সারাংশ সাধারণত রচনার শুরুতে বা কখনো কখনো রচনার শেষে সংযুক্ত করা হয়।
শিক্ষায়তনিক গবেষণায় জটিল গবেষণাধর্মী বিষয়সমূহ সহজভাবে বোধগম্য করে তুলতে সারাংশ ব্যবহৃত হয়। সারাংশ সম্পূর্ণ গবেষণাপত্রের পরিবর্তে একটি ছোট সত্তা হিসেবে কাজ করতে পারে। যেমন, অনেক প্রতিষ্ঠান কোন গবেষণার মূলভিত্তি নির্বাচনে সারাংশ ব্যবহার করে, যা কোন শিক্ষায়তনিক সম্মেলনে পোস্টার আকারে, মৌখিক উপস্থাপনার বা মঞ্চে উপস্থাপনার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হতে পারে। বেশিরভাগ গবেষণা ডেটাবেজ সার্চ ইঞ্জিনে সম্পূর্ণ গবেষণাপত্র দেওয়ার পরিবর্তে শুরু সারাংশ প্রদান করে থাকে।
আরও দেখুন: