কলেজের ছাত্রাবাস সমস্যার ওপরে প্রতিবেদন | প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন | ভাষা ও শিক্ষা , প্রতিবেদন তৈরির ক্ষেত্রে প্রতিবেদককে সাধারণত ৬টি ‘ডব্লিউ-এইচ’ (Wh), যথা- Who, What, When, Where, Why ও How দ্বারা প্রশ্নের মাধ্যমে বিষয়ের স্পষ্টতা আনতে হয়। উপযুক্ত পর্যবেক্ষণ, যথাযথ পর্যালোচনা, প্রয়োজনীয় বিচার-বিশ্লেষণ ও যথেষ্ট সতর্কতার সঙ্গে প্রতিবেদন লিখতে হয়। একটি আদর্শ প্রতিবেদন দুই থেকে তিন পৃষ্ঠার মধ্যে শেষ করা হয়। এছাড়াও ঘটনাকে আরও সহজ ও সাবলিলভাবে উপস্থাপনের জন্য প্রতিবেদনে চিত্র, নকশা, সারণি সংবলিত বাঁধাই করে খাতার আকারেও প্রকাশ করা হয়।
কলেজের ছাত্রাবাস সমস্যার ওপরে প্রতিবেদন
তারিখ : ২১ / ০৪ /০৯
বরাবর,
অধ্যক্ষ,
সরকারি কলেজ,
বরিশাল।
বিষয় : কলেজের ছাত্রাবাস সমস্যার ওপর প্রতিবেদন।
মহোদয়,
আপনার আদেশক্রমে সুষ্ঠু তথ্য প্রদান করে ….. মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস সমস্যা সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন নিচে উপস্থাপন করছি।
১। দীর্ঘদিন ধরে কলেজের ছাত্রাবাসটির সংস্কারের অভাবে ছাত্রাবাসের ১৯, ২১ ও ২৭ নম্বর কক্ষ বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। দ্বিতীয় তলার ২৭ নম্বর থেকে ৩১ নম্বর পর্যন্ত কক্ষের ছাদ জরাজীর্ণ। উল্লিখিত কক্ষগুলোকে কর্তৃপক্ষ পরিত্যক্ত ঘোষণা করার পরও শিক্ষার্থীরা নিরুপায় হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে থাকতে বাধ্য হচ্ছে।
২। কলেজ ছাত্রাবাসে সিট সংখ্যা কম থাকার কারণে একই রূমে যেখানে দুজন ছাত্র থাকার কথা সেখানে তিন-চার জন করে থাকছে, এতে পড়ার পরিবেশ যেমন বিঘ্নিত হচ্ছে, তেমনি ছাত্রাবাসেও বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে।
৩। সম্প্রতি কলেজে অনার্স কোর্স চালু করায় ছাত্রাবাস সমস্যাটি আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে। ইতোমধ্যে কয়েকজন উচ্ছৃঙ্খল ছাত্র কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই ছাত্রাবাসের কয়েকটি কক্ষ দখল করে নিয়েছে। শধু দখলই নয়, এসব রুমে এখন নিয়মিত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডও পরিচালিত হচ্ছে। ফলে ছাত্রাবাসে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার যে স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় ছিল তা এখন হুমকীর সম্মুখীন।
৪। প্রশাসনিক দুর্বলতা ও ছাত্রাবাসের তত্ত্বাবধায়কের শারীরিক অসুস্থতায় দীর্ঘদিন অনুপস্থিতির কারণে ছাত্রাবাসের কোনো নিয়মনীতি শিক্ষার্থীরা পালন করছে না। যে যার খেয়াল-খুশি মতো হোস্টেলে যাওয়া-আসা করে। ইদানীং বহিরাগত কিছু উচ্ছৃঙ্খল ছেলেদেরও যাতায়াত লক্ষ করা যাচ্ছে।
৫। ছাত্রাবাসে আধুনিক কোনো খেলাধুলার সরঞ্জাম কিংবা চিত্তবিনোদনের কোনো সুব্যবস্থা নেই ।
৬। ছাত্রাবাসটির পরিচালনা কমিটির কাছে এ সব বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে, কারো কাছেই কোনো সুষ্পষ্ট উত্তর পাওয়া যায় নি।
সুপারিশ
১। জরুরি ভিত্তিতে ছাত্রাবাসের সংস্কার প্রয়োজন। অন্যথায় যে কোনো সময় সমূহ বিপদের সম্ভাবনা রয়েছে।
২। ছাত্রাবাসের সিট সংখ্যা ১০০ থেকে উন্নীত করে ১৫০ করতে হবে।
৩। বহিরাগত এবং যাদের ছাত্রাবাসে থাকার অনুমতি নেই সে সব ছাত্রকে ছাত্রাবাস থেকে বের করে দিতে হবে।
৪। সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য ছাত্রাবাসে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। ছাত্রাবাসের প্রশাসনিক নিয়মনীতি কঠোরভাবে পালন হচ্ছে কিনা সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।
৫। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে ছাত্রাবাসের গেইট সন্ধ্যা ৮টার মধ্যে বন্ধ করে দিতে হবে।
উল্লেখ্য যে ইতোমধ্যেই কলেজের ছাত্রাবাস সমস্যাকে কেন্দ্র করে সাধারণ ছাত্রছাত্রীর মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। মাননীয় অধ্যক্ষের কাছে তাদের প্রশ্ন হল, ছাদ ভেঙে পড়ে যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে তবে এর দায়দায়িত্ব কে নেবে? তাই যত দ্রুত সম্ভব এই সমস্যাটি ভয়াবহ আকার ধারণ করার আগেই সমাধান হোক, এটাই সকল ছাত্র-ছাত্রীর একান্ত প্রত্যাশা।
বিনীত প্রতিবেদক
অধ্যাপক, ব্যবস্থাপনা বিভাগ,
… কলেজ, বরিশাল।
আরও দেখুন:
- পড়ার অভ্যাস গঠন বিষয়ে আলোচনাচক্র সম্পর্কিত প্রতিবেদন | প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন | ভাষা ও শিক্ষা
- বার্ষিক বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান সম্পর্কে প্রতিবেদন | প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন | ভাষা ও শিক্ষা
- কলেজে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষে প্রতিবেদন | প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন | ভাষা ও শিক্ষা
- কলেজে অনুষ্ঠিত ক্রীড়া প্রতিযোগিতা সম্পর্কিত প্রতিবেদন | প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন | ভাষা ও শিক্ষা
- কলেজে বাংলা নববর্ষ উদযাপন আয়োজিত অনুষ্ঠানমালার বিবরণ দিয়ে প্রতিবেদন | প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন | ভাষা ও শিক্ষা