পড়ার অভ্যাস গঠন বিষয়ে আলোচনাচক্র সম্পর্কিত প্রতিবেদন | প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন | ভাষা ও শিক্ষা , প্রতিবেদন তৈরি করার ক্ষেত্রে একজন প্রতিবেদক প্রাথমিকভাবে তিনটি কাজ করেন — পর্যবেক্ষণ লিপিবদ্ধ, শ্রুতিবদ্ধ বা দৃশ্যবদ্ধকরণ ও প্রতিবেদন প্রণয়ন। একজন প্রতিবেদককে প্রত্যক্ষ ঘটনার সাক্ষী হতে হয়। অথবা কোনো ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর সে সম্বন্ধে তথ্য সংগ্রহ করতে হয়। অনেক সময় প্রতিবেদন রচনার ক্ষেত্রে হয়তো অতীতে ঘটে যাওয়া কোনো ঘটনার সঙ্গে তাকে যোগসূত্র রচনাও করতে হয়। এ ক্ষেত্রে প্রতিবেদক ইতিহাস লেখকের ভূমিকা পালন করেন।
পড়ার অভ্যাস গঠন বিষয়ে আলোচনাচক্র সম্পর্কিত প্রতিবেদন
তারিখ : ০৪ / ০৩ / ২০০৮
বরাবর
অধ্যক্ষ,
….. কলেজ,
ঢাকা।
বিষয় : ‘পড়ার অভ্যাস গঠন’ বিষয়ে আলোচনাচক্র সম্পর্কিত প্রতিবেদন।
মহোদয়,
বিনীত নিবেদন এই যে, গত ০২ মার্চ, ২০০৮ আমাদের কলেজে অনুষ্ঠিত ‘পড়ার অভ্যাস গঠন’ বিষয়ে যে আলোচনাচক্র অনুষ্ঠিত হয়েছে, সে সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন পেশ করছি। জানি কলেজ ছাত্র–সংসদ কর্তৃক আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে কলেজের সকল শিক্ষার্থী ও শিক্ষকমণ্ডলী উপস্থিত ছিলেন। কলেজ ছাত্র-সংসদের সাহিত্য- সম্পাদক মুস্তাফিজুর রহমানের প্রাণবন্ত সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠানটি শুরু হয় সকাল ১০টায়। কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান ড. হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলা বিভাগের শিক্ষক জনাব মজহারুল ইসলাম।
“আমাদের কেনো পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। এ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য উপস্থাপন করেন দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া ইসলাম। সে তার বক্তব্যে বলেন- ‘মানুষের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনার অনুভূতি নিজের বুকে নিয়ে অনাগত পাঠকের জন্য চির অপেক্ষমান হয়ে আছে বই। প্রাজ্ঞ ব্যক্তিদের জ্ঞানভাণ্ডার আজ মহাসমুদ্র হয়ে স্বল্পায়ু মানুষের জ্ঞান- পিপাসা মেটানোর অপেক্ষায় আছে বইয়ের রূপ ধারণ করে।
জ্ঞানের মহাসমুদ্রের কল্লোল শোনা যায় বইয়ের পাতায়। মানুষ তার আত্মার আত্মীয়ের তথা বিশ্ব মানবের সাহচর্য ও সঙ্গ লাভ করে গ্রন্থের মাধ্যমে। অনাদিকাল থেকেই গ্রন্থ মানুষ অনাবিল শান্তি লাভ করে আসছে। তাই কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন, “বিপুলা এ পৃথিবীর কতটুকু জানি’— বই পড়ার মাধ্যমেই আমরা মানব-চরিত্রের বৈচিত্র্য উপলব্ধি করতে পারি। বীরত্বের মহিমা, ত্যাগের উপমা, সত্যের জীবনদর্শন, ধর্মের শাহাদত, স্বার্থসিদ্ধির হীনম্মন্যতা, বিভিন্ন দেশের সামাজিক আচার-আচরণ, ঐতিহাসিক কাহিনী, ভৌগোলিক বৃত্তান্ত বিজ্ঞানের বিস্ময়কর আবিষ্কার ইত্যাদি আমরা পড়ার অভ্যাস বা বই পড়ার মধ্য দিয়ে জানতে পারি।
বই পড়ার অভ্যাস গঠনে আলোচনাচক্রের ভূমিকা যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সে-সম্পর্কে মতামত রেখে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য উপস্থাপন করেন কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জনাব ফারজানা ইসলাম। তাঁর বক্তব্যে ‘পড়ার অভ্যাস গঠন’ সম্পর্কিত কিছু মূল্যবান কথা জানতে পারি— ‘পুস্তক পাঠ চিন্তাশীল মানুষের কল্পনারহস্যের সঙ্গে পাঠকের চিন্তার যোগসূত্র স্থাপিত করে। সৃষ্টিকর্তা মানুষকে জ্ঞান অন্বেষণ ও আহরণ করতে বলেছেন। তা শুধু পুস্তক পাঠের মাধ্যমেই সম্ভব। পুস্তক পাঠ করলে শ্রেষ্ঠ মনীষীদের উদ্ভাবিত জ্ঞান-বিজ্ঞানের সঙ্গে পরিচিত হওয়া যায়। এককথায় বলা যায় যে, ‘পড়ার অভ্যাস গঠন’ বা বই পড়ার কোনো বিকল্প নেই। প্রতিটি শিক্ষার্থীকে এ বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে।’
বক্তারা তরুণ প্রজন্মের ব্যাপকাংশের মধ্যে বই পড়ার অনভ্যাসের কারণ হিসেবে শিক্ষাব্যবস্থার গলদকে প্রধান কারণ হিসেবে দায়ী করেন। আলোচকের কেউ কেউ মনে করেন, এ ক্ষেত্রে আকাশসংস্কৃতিরও প্রভাব রয়েছে। সর্বোপরি বক্তারা বর্তমান সার্টিফিকেট সর্বস্ব শিক্ষার সীমাবদ্ধতা দূর করার জন্যে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলার ব্যাপারে জোরালো অভিমত ব্যক্ত করেন আলোচনার শেষ পর্যায়ে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকগণ প্রতি তিন মাস অন্তর অন্তর ‘পড়ার অভ্যাস গঠন’ সম্পর্কিত আলোচনাচক্রের আয়োজন করার জন্যে অভিমত প্রকাশ করেন। সব দিক থেকে অনুষ্ঠানটি অত্যন্ত সফল ও সার্থক হয়েছে।
একাদশ শ্রেণি, বিজ্ঞান বিভাগ; কলেজ, ঢাকা।
বিনীত প্রতিবেদক
আরও দেখুন:
- কলেজে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষে প্রতিবেদন | প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন | ভাষা ও শিক্ষা
- কলেজে অনুষ্ঠিত ক্রীড়া প্রতিযোগিতা সম্পর্কিত প্রতিবেদন | প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন | ভাষা ও শিক্ষা
- কলেজে বাংলা নববর্ষ উদযাপন আয়োজিত অনুষ্ঠানমালার বিবরণ দিয়ে প্রতিবেদন | প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন | ভাষা ও শিক্ষা
- শীতার্ত মানুষের দুঃসহ জীবন শিরোনামে প্রতিবেদন রচনা | প্রতিবেদন | ভাষা ও শিক্ষা
- মোবাইল ফোনের অপব্যবহার বিষয়ে প্রতিবেদন | প্রতিবেদন | ভাষা ও শিক্ষা