একজন আদর্শ শিক্ষক হতে চাও জানিয়ে বন্ধুর কাছে চিঠি | পত্র বা চিঠি | ভাষা ও শিক্ষা , স্বাক্ষরতা টিকিয়ে রাখতেও একসময় চিঠির অবদান ছিল। প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ চিঠি আদানপ্রদান করেছে, ইলিয়াডে তার উল্লেখ ছিল।হিরোডোটাস এবং থুসিডাইডিসের রচনাবলীতেও তা উল্লেখ করা হয়েছে।
একজন আদর্শ শিক্ষক হতে চাও জানিয়ে বন্ধুর কাছে চিঠি
তেঁতুলিয়া; পঞ্চগড় ১৫ মার্চ, ২০০০
স্নেহের ‘ক’,
আমার অনেক অনেক স্নেহ নিও। আশা করি ভালো আছ। কলেজে এসে তোমার কথা খুব মনে পড়ছে। বেশি মনে পড়ে তোমার আর আমার মধ্যে গল্পের বই আর কলম নিয়ে যে ছোট ছোট ঝগড়া হতো তার কথা। কোনো গল্পের বই-ই তুমি আগে না পড়ে আমাকে দাও নি। কিন্তু কলেজের বৃহৎ গ্রন্থাগারে পা ফেলতেই, সেসব স্মৃতি আমার দু চোখে জল নিয়ে এল।
স্যার সেদিন বাংলাসাহিত্য ক্লাসে ‘বই পড়া’ প্রবন্ধটি সম্পর্কে পাঠ দিচ্ছিলেন। বইয়ের পৃষ্ঠা উল্টাতে উল্টাতে মহানঔপন্যাসিক লিয়ে তলস্তয়ের একটি বাণী উচ্চারণ করলেন— ‘Three things are essential for life andthese are— books books and books.’ পাশাপাশি আবার এ-কথাও বললেন যে, সব বই-ই যে পড়তেহবে এমন কোনো কথা নেই, তোমাদের জীবনগঠনে যেসব বই উপকারে আসবে শুধু সেগুলোই পড়া ভালো। সত্যিকথা কি, স্যারের কথাগুলো শোনার পর পরই বই বাছাইয়ের ব্যাপারটা তোমাকে জানানোর প্রয়োজন বোধ করলামবলেই তোমাকে এই চিঠি লেখা।

আমি জানি, বই-পড়ার নেশা তোমার এখনও আছে। বইয়ের মতো এমন ভালো সঙ্গী সারাজীবনেও খুঁজে পাবে না। তাই লেখাপড়ার ফাঁকে অবসর সময়টাতে কিছু ভালো বই পড়ে জীবনের পাথেয় সঞ্চয় করে রাখা ভালো। আরেকটি কথা হল, আমাদের স্যার বই পড়ার ব্যাপারে যে কথাগুলো বললেন তা তোমার জীবনেও প্রতিফলন ঘটাবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস ।আমার মনে হয়, জ্ঞান-বিজ্ঞানের বই পড়ার সঙ্গে সঙ্গে মনীষীদের জীবনী, আদর্শবান ব্যক্তিদের জীবনচরিত— এসব বই পড়ার মধ্য দিয়ে তুমি যেমন আনন্দ পাবে, একইসঙ্গে তাঁদের জীবনী থেকে আদর্শ অনুসরণ করে তোমার জীবনকে যেমন গড়তে পারবে, তেমনি দেশ ও কাল সম্পর্কেও সচেতন হতে পারবে।
পাশাপাশি ধর্মীয় বই তো পড়তে হবেই। তোমার জন্যে ‘সত্য-স্রষ্টা-সুখ’ বইটি উপহার হিসেবে পাঠালাম, বইটি পেয়ে তুমি খুব খুশি হয়েছ জানতে পারলে আমার ভালো লাগবে। আজ এখানেই শেষ করছি, নিজের লেখাপড়ার দিকে খেয়াল রেখো। তোমাদের সবার কুশ কামনা করি। মা-বাবাকে সালাম জানিও ।
আরও দেখুন: