নামাজের গুরুত্ব, সালাতের গুরুত্ব [ Essay on importance of Namaj ] অথবা, মানবজীবনে সালাতের ভূমিকা অথবা, ইসলামের আলোকে মানবজীবনে নামাজের গুরুত্ব – নিয়ে একটি প্রতিবেদন রচনার নমুনা দেয়া হল।

Table of Contents
নামাজের গুরুত্ব রচনার ভূমিকা :
নামাজ ইসলামের দ্বিতীয় স্তম্ভ । নামাজ – এর আরবি প্রতিশব্দ হলো ‘ সালাত ‘ । সালাত অর্থ হলো ক্ষমা চাওয়া , দোয়া করা , আল্লাহর পবিত্রতা ও সৌন্দর্য বর্ণনা করা । একজন মুসলমানের কাছে নামাজ সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ এবং স্বীকৃত ইবাদত । নামাজের মাধ্যমে মুমিনের অন্তর আল্লাহর করুণা ও সান্নিধ্য লাভ করে ।
ঈমানের বৈশিষ্ট্য :
একজন কাফের ও ঈমানদারের সর্বপ্রথম পার্থক্য হলো নামাজ । নামাজের মাধ্যমে মানুষ নিজেকে আল্লাহর প্রতি অনুগত হিসেবে প্রকাশ করে । নবি ( স . ) বলেছেন- ‘ নামাজের মাধ্যমে ব্যক্তির ঈমানের দৃঢ়তা প্রকাশ পায় । ‘
আল্লাহর নৈকট্য লাভ :
প্রত্যেক ঈমানদারের মনের সর্বোচ্চ বাসনা হলো সৃষ্টিকর্তার নৈকট্য লাভ করা । আর সৃষ্টিকর্তার নৈকট্য লাভের একমাত্র মাধ্যম হলো নামাজ । যিনি নামাজ আদায় করেন না , সৃষ্টিকর্তার নৈকট্য তিনি কখনই লাভ করতে পারবেন না।
পবিত্রতা রক্ষা :
পৃথিবীর বুকে বিভিন্ন রকমের অপবিত্রতা রয়েছে । নামাজ মানুষকে সমস্ত প্রকার অপবিত্রতা থেকে দূরে রাখে । দিনে পাঁচবার শরীর পরিষ্কারের মাধ্যমে মানুষ পবিত্র থাকে । এছাড়াও নামাজের মাধ্যমে মন কলুষমুক্ত থাকে ।

পাপ থেকে সুরক্ষা :
আল্লাহ পাক পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করেছেন— ‘ নিশ্চয় নামাজ সকল প্রকার খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে ‘ । যিনি নিয়মিত নামাজ আদায় করেন , তাঁর দ্বারা পাপ সংঘটিত হয় না । প্রত্যেক মানুষই নামাজের মাধ্যমে পাপ থেকে বিরত থাকতে পারে । সমাজ ও রাষ্ট্রের সাপেক্ষে একজন আদর্শ ও সুন্দর মানুষ হওয়ার ক্ষেত্রে নামাজের বিকল্প নাই ।
শিষ্টাচার :
নামাজ মানুষকে ভদ্র , বিনয়ী ও স্পষ্টবাদী করে তোলে । রাসূল ( স . ) বলেছেন , ‘ যার নামাজ সুন্দর , তাঁর কথা , চলাফেরা ও ব্যবহারও সুন্দর ‘ । অর্থাৎ একজন নামাজি মানুষ মাত্রই একজন আদর্শ সামাজিক মানুষ ।
ঐক্য প্রতিষ্ঠা :
নামাজ মানুষের চরিত্রকে সহজ ও সাবলীল করে তোলে । মানুষের মনে মানবতার প্রেরণা জাগে ।। ফলে নামাজি মানুষ মাত্রই সাম্য ও ঐক্যের ধারক । ধনী – গরিব , ধর্ম – অধর্ম এসব কিছুর ঊর্ধ্বে সাম্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা করাই নামাজি ব্যক্তির একমাত্র উদ্দেশ্য ।

সমাজ সংস্কারক :
নামাজ এক প্রকার সামাজিক ইবাদাত । কারণ মুসলমানগণ স্থানীয় মসজিদে নামাজ আদায় করে । ফলে সমাজের সবাই প্রতিদিন পাঁচবার একই কাতারে দাঁড়ায় । এর মাধ্যমে সমাজের উদ্ভুত সমস্যার ও সমাধান হয় । নামাজ মানুষের সামাজিকতাবোধ বাড়িয়ে তোলে , যা সমাজ সংস্কারের অন্যতম উপায় ।
বিশ্বভাতৃত্ব সৃষ্টি :
নামাজ মানুষের মনের অহংকার দূর করে । চারিত্রিক কুটিলতাকে মুক্ত করার মাধ্যমে নামাজি মানুষ নিজেকে আরো বেশি মানবতাবাদী করে গড়ে তোলে । ফলে নামাজ সমাজ তথা সমগ্র বিশ্বে জাগিয়ে তোলে দারুণ ভাতৃত্ববোধ ।
উপসংহার :
নামাজ মানুষকে কর্তব্যবোধ , ধৈর্য্য , সহিষ্ণুতা , নিয়মানুবর্তিতা ও নেতৃত্ব দানের ক্ষমতা দান করে । সমাজ ও দেশ সংস্কারে নামাজের গুরুত্ব অনাস্বীকার্য । সর্বোপরি , একজন ঈমানদার নামাজের মাধ্যমে নিজেকে আল্লাহর প্রিয় বান্দারূপে প্রতিষ্ঠা করে । পাশাপাশি বিশ্বভাতৃত্বে ভূমিকা রাখার মাধ্যমে মানবতাকে লালন করে ।
আরও পড়ুনঃ