আম গাছ, জাতীয় গাছ আমগাছ প্রতিবেদন রচনা । Essay on Mango Tree

আম গাছ, জাতীয় গাছ আমগাছ [ Essay on Mango Tree  ] অথবা,  আম গাছের বর্নণা – নিয়ে একটি প্রতিবেদন রচনার নমুনা দেয়া হল ।

আম গাছের রচনা । Essay on Mango Tree
আম গাছের রচনা । Essay on Mango Tree

আম গাছ রচনার ভূমিকা :

আম বাংলাদেশের একটি সুপরিচিত ও জনপ্রিয় ফল। বাংলাদেশের সব জায়গাতেই আমগাছ পাওয়া যায়। আমগাছ আমাদের শুধু ফল দেয় না, এর প্রতিটি অংশ আমাদের কাজে লাগে। বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে আমগাছ বিশেষ স্থান দখল করে আছে। আমগাছকে বাংলাদেশের জাতীয় গাছের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।

পরিচয় :

আমগাছ চিরসবুজ বৃক্ষের অর্গত একটি গাছ। এ-গাছ খুব বড় হয়। এর শাখাপ্রশাখা বিস্তৃত এবং পাতা খুব ঘন। শাখাপ্রশাখা বিস্তৃত হয়ে আমগাছ ছাতার আকার ধারণ করে। এগাছের ছায়ায় বসলে প্রাণ জুড়িয়ে যায়। আমগাছ প্রায় ২০ মিটার পর্যন্ত উঁচু ও ৩০ মিটার প্রশস্ত হতে পারে। আমগাছ দীর্ঘায়ু হয়। একটি আমগাছ একশাে বছরের বেশি বেঁচে থাকতে পারে। সাধারণত গাছ লাগানাের চার থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে ফল দেওয়া শুরু করে। আমগাছের খুব বেশি যত্নের দরকার হয় না। যেকোনাে জায়গাতেই জন্মাতে পারে।

আম গাছের রচনা । Essay on Mango Tree
আম গাছের রচনা । Essay on Mango Tree

আমগাছের চাষ :

বাংলাদেশে প্রাচীনকাল থেকে আমগাছের চাষ হচ্ছে। গ্রামেগঞ্জে এমন কোনাে বাড়ি পাওয়া যাবে না যেখানে অদ্ভুত একটি আমগাছ নেই। সাধারণত আমের আঁটি থেকে আমগাছ জন্ম নেয়। তবে এ-গাছ থেকে ফল পেতে চার-পাঁচ বছর সময় লেগে যায়। গাছও অনেক বড় হয়।

বর্তমানে আমগাছের ডালে কলম তৈরি করে এক ধরনের গাছের চাষ হচ্ছে। এ-গাছ আকারে ছােট হয় এবং ফলন হয় তাড়াতাড়ি। বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে কলম আমগাছের চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশে অনেক ধরনের আমগাছ রয়েছে। একেক জাতের আমগাছের আকার-আকৃতি একেক রকম।

এদের মধ্যে উল্লেখযােগ্য হলাে ফজলি, ল্যাংড়া, আম্রপালি, শাি, গােপালভােগ, কিশানভােগ ইত্যাদি। ফজলি আমের গাছ খুব বড় হয়, অনেকটা বটগাছের মতাে ঝুপড়ি হয়ে থাকে। আমগাছে ফাল্গুন-চৈত্র মাসে মুকুল আসে। তখন চারপাশ মুকুলের গন্ধে ভরপুর হয়ে যায়। বৈশাখ মাসের শুরু থেকে মুকুল থেকে আম হতে শুরু করে। জ্যৈষ্ঠ মাসে আম পাকে। এক জাতের আম পাকতে পাকতে আষাঢ় মাস চলে আসে। একে আষাঢ়ি আম বলে।

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

উপকারিতা :

আমগাছ শুধু আমাদের ফলই দেয় না, এর কাঠ, পাতা, মূল – সবই আমাদের কাজে লাগে। আমগাছের পাতা গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আমগাছের কাঠ দিয়ে ঘরের থাম, দরজা, জানালা, আসবাবপত্র, নৌকা তৈরি হয়। সরু ডালপালা ও পাতা শুকিয়ে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। আমগাছের ছায়া খুবই শীতল হয়। আমগাছ আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আমগাছ আমাদের জাতীয় গাছ।

আম গবেষণা কেন্দ্র :

বাংলাদেশের রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ অঞ্চলে আমের ফলন সবচেয়ে ভালাে হয়। রাজশাহীতে একটি আম গবেষণা ইনস্টিটিউট রয়েছে। সেখানে উন্নতমানের আমগাছের চারা উৎপাদন ও তার পরিচর্যা নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মাটির গুণাগুণ ও পরিবেশ অনুযায়ী কোন গাছ কোন অঞ্চলে চাষের উপযােগী তারও গবেষণা চলছে।

আমকে কীভাবে আরও উপাদেয় ও পুষ্টিগুণসম্পন্ন করা যায় তা নিয়েও পরীক্ষানিরীক্ষা করা হচ্ছে। সব ঋতুতে আমের ফলন হবে, এমন গাছ উদ্ভাবনের চেষ্টা চল আকৃতির আমগাছ উদ্ভাবনের ফলে এখন শহর বা গ্রামের আঙিনাতেও আমগাছের চাষ করা যাচ্ছে।

আম গাছের রচনা । Essay on Mango Tree
আম গাছের রচনা । Essay on Mango Tree

উপসংহার :

আমগাছ বাংলাদেশের জন্য প্রয়ােজনীয় একটি গাছ। দেশের মানুষের খাদ্যচাহিদা মেটানাে, প্রয়ােজনীয় কাঠের যােগান ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এর গুরুত্ব অপরিসীম। আমাদের উচিত আরও বেশি বেশি আমগাছ লাগানাে ও এর পরিচর্যা করা।

আরও পড়ুনঃ

Leave a Comment