চাঁদের পাহাড় আমাদের “বুকরিভিউ [ Book Review ]” সিরিজের ২য় পর্ব। আমাদের “বুকরিভিউ [ Book Review ]” সিরিজটিতে মূলত বিভিন্ন বই পাঠ ও এর রিভিউ করা হয়েছে। আজকের ভিডিওতে “বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় : চাঁদের পাহাড় [ Bibhutibhushan Bandopadhyay : Chader Pahar ]” বইটি পাঠ ও এর রিভিউ করা হয়েছে।
চাঁদের পাহাড়
চাঁদের পাহাড় প্রখ্যাত সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত একটি বাংলা রোমাঞ্চকর উপন্যাস। ১৯৩৭ সালে গ্রন্থাকারে বের হওয়া এই উপন্যাসটি শঙ্কর নামক ভারতবর্ষের সাধারণ এক তরুণের আফ্রিকা মহাদেশ জয় করার কাহিনী। বাংলা ভাষায় অন্যতম জনপ্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ রোমাঞ্চকর উপন্যাস।
চাঁদের পাহাড়-এর কাহিনী এক বাঙালি অভিযাত্রীর ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে, যে ১৯০৯-১৯১০ সাল নাগাদ আফ্রিকা যায়। শঙ্কর রায় চৌধুরী, এই উপন্যাসের নায়ক, গ্র্যাজুয়েশন করার পর পাটকলে চাকরি পায়। কিন্তু সে রোমাঞ্চ খোঁজে। সে আফ্রিকার দুর্গম স্থানে যেতে চায়।
অবশেষে তার গ্রামের এক অধিবাসী, যে আফ্রিকায় কাজ করে, তার সহায়তায় সে আফ্রিকায় ক্লার্ক হিসেবে কাজ পায় এবং উগান্ডা রেলওয়েতে চাকরি পায়। কিন্তু সেখানে মানুষখেকো সিংহ, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ-এর আগের সমস্যা থাকে। ইতিমধ্যে সিংহের সাথে তার যুদ্ধ হয়। এছাড়াও এখানে ব্ল্যাক মাম্বা সাপের আক্রমণ হয়। এখানেই সে পর্তুগিজ অভিযাত্রীক ও স্বর্ণসন্ধানী ডিয়েগো আলভারেজ-এর দেখা পায়। আলভারেজ তাকে তার সময়ের ঘটনা বলে। সে এবং তার সঙ্গী জিম কার্টার পৃথিবীর সবচেয়ে বড় হীরক খনির সন্ধান পায়। কিন্তু ভয়ংকর জন্তু বুনিপ জিমকে মেরে ফেলে এবং আলভারেজ ফিরে আসতে বাধ্য হয়।
সব শুনে শঙ্কর ক্লার্কের চাকরি ছেড়ে দিয়ে আলভারেজের সাথে খনি অনুসন্ধানে বের হয়। তারা ঘন জঙ্গলে প্রবেশ করে। পথে তাদের অবর্ণনীয় অসুবিধা হয়। জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরি তাদের পথে বিরাট বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এক পর্যায়ে আলভারেজকেও সেই বুনিপ মেরে ফেলে। শঙ্কর একা হয়ে পড়ে।
সে সত্যতার খোঁজে বের হয়। সে বুনিপের গুহা খুঁজে পায়। সে নিজের অজান্তেই হীরকের খনি খুঁজে পায়। সেই গুহায় সে পথ হারিয়ে ফেলে। এক পর্যায়ে কিছু পাথরের সহায়তায় সে গুহা থেকে বের হতে সক্ষম হয়। সে সাথে করে কিছু পাথর নিয়ে আসে। আসলে সেই পাথরগুলো আর কিছুই নয়, কাঁচা হীরা। সে ইতালীয় অভিযাত্রীক আত্তিলীয় গাত্তির নোট থেকে জানতে পারে, আসলে সে যেই গুহায় পৌছেছিল, সেই গুহায়ই বিখ্যাত হীরক খনি, যার জন্য জিম ও আলভারেজ তাদের জীবন হারিয়েছে।
কিন্তু সে ততক্ষণে কালাহারি মরুভূমিতে পথ হারিয়েছে। নিজের প্রাণ বাঁচানোই তখন দুষ্কর। মরুভূমিতে সে জলের অভাবে প্রায় মৃত্যুবরণ করেছিল। তার মাথার উপর শকুনেরা ঘোরাফেরা শুরু করে। পথে সিংহের সাথে তার যুদ্ধ হয়। অবশেষে এক সার্ভে টিম তাকে খুঁজে পায় এবং মুমূর্ষু অবস্থায় সলসবেরি,রোডেশিয়ায় নিয়ে গিয়ে বাঁচায়। শঙ্কর বইয়ের শেষে বলে যে সে আবার বড় দল নিয়ে এসে এই হীরক খনির সন্ধান করবে, যার জন্য আলভারেজ,কার্টার ও আত্তিলীয় জীবন দিয়েছে।

চাঁদের পাহাড় | বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় :
আরও দেখুন: