ম ফলা ও ব ফলার উচ্চারণ

আজকে আমরা ম ফলা ও ব ফলার উচ্চারণ সম্পর্কে আলোচনা করবো। যা বাংলা ব্যাকরণ ও নির্মিতি এর অন্তর্গত।

 

ম ফলা ও ব ফলার উচ্চারণ

 

 ম ফলা ও ব ফলার উচ্চারণ

ম ফলার উচ্চারণ

ক. পদের প্রথমে ম-ফলা থাকলে সে বর্ণের উচ্চারণে কিছুটা ঝোঁক পড়ে এবং সামান্য নাসিক্যস্বর হয়। যেমন : শ্মশান (শঁশান্), স্মরণ (শঁরোন্)। কখনো কখনো ‘ম’ অনুচ্চারিত থাকতেও পারে। যেমন : স্মৃতি (সৃতি বা স্মৃতি)।

খ. পদের মধ্যে বা শেষে ম-ফলা যুক্ত হলে উচ্চারণে সে বর্ণের দ্বিত্ব হয় এবং সামান্য নাসিক্যস্বর হয়। যেমন : আত্মীয় (আতিঁয়া), পদ্ম (পদোঁ), বিস্ময় (বিশ্শঁয়), ভস্মস্তূপ (ভশোস্তুপ), ভস্ম (ভশোঁ), রশ্মি (রোশ্শি)।

গ. গ, ঙ, ট, ণ, ন বা ল বর্ণের সঙ্গে ম-ফলা যুক্ত হলে, ম-এর উচ্চারণ বজায় থাকে। যুক্ত ব্যঞ্জনের প্রথম বর্ণের স্বর লুপ্ত হয়। যেমন : বাগ্মী (বাগ্‌মি), মৃন্ময় (মৃন্‌ময়), জন্ম (জন্‌মো), গুল্ম (গুমো) ।

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

ব ফলার উচ্চারণ

ক. শব্দের প্রথমে ব-ফলা যুক্ত হলে উচ্চারণে শুধু সে বর্ণের উপর অতিরিক্ত ঝোঁক পড়ে। যেমন : ক্বচিৎ (কোচিৎ), দ্বিত্ব (দিতো), শ্বাস (শাশ), স্বজন (শজোন), দ্বন্দ্ব (দাদা)।

খ. শব্দের মধ্যে বা শেষে ব-ফলা যুক্ত হলে যুক্ত ব্যঞ্জনটির দ্বিত্ব উচ্চারণ হয়। যেমন : বিশ্বাস (বিশ্শাশ), পৰ্ব্ব (পক্‌কো), অশ্ব (অশো), বিল্ব (বিল্‌লো)।

গ. সন্ধিজাত শব্দে যুক্ত ব-ফলায় ব-এর উচ্চারণ বজায় থাকে। যেমন : দিগ্বিজয় (দিগ্‌বিজয়), দিগ্বলয় (দিগ্‌বলয়)।

ঘ. শব্দের মধ্যে বা শেষে ‘ব’ বা ‘ম’-এর সঙ্গে ব-ফলা যুক্ত হলে ব-এর উচ্চারণ বজায় থাকে । যেমন : তিব্বত (তিব্বত). লম্ব (লম্‌বা)।

ঙ. উৎ উপসর্গের সঙ্গে ব-ফলা যুক্ত হলে ব-এর উচ্চারণ বহাল থাকে। যেমন : উদ্বাস্তু (উদ্‌বাস্তু), উদ্বেল (উদ্‌বেল)।

 

ম ফলা ও ব ফলার উচ্চারণ

 

 কৰ্ম-অনুশীলন

১. তোমার দুই বন্ধুর আলাপ মন দিয়ে শোন। তারপর তাদের যে উচ্চারণগুলো তোমার কাছে অশুদ্ধ মনে হয় তা খাতায় লিখে তোমার শিক্ষককে দেখিয়ে নিজেকে যাচাই কর।

২. ব-ফলাযুক্ত বানানে ব-এর উচ্চারণ কখন বহাল থাকে? সূত্রসহ ১০টি শব্দ লেখ ৷

৩. “একদিন বিকেলে হন্তদন্ত সাবু বাড়ির উঠান থেকে ‘মা মা’ বলে চিৎকার করতে করতে ঘরে ঢুকল। চিৎকার শুনে জৈতুন বিবি হকচকিয়ে ওঠেন । তিনি রান্নাঘরে ছিলেন। দ্রুত পাকশালা থেকে বেরিয়ে এসে সাবুকে জিজ্ঞেস করেন: ‘কী রে ? এত চিক্কর পাড়স্ ক্যান?”

— উদ্ধৃতাংশে যেসব ‘কার’-এর ব্যবহার আছে, সেগুলোর ধারাবাহিক তালিকা প্রস্তুত কর ।
——কার ’গুলোর প্রত্যেকটি দিয়ে দুটো নতুন শব্দ তৈরি কর।

৪. “শ্মশানে পৌঁছে শ্বশুরমশাইয়ের শৈশবের স্মৃতি স্মরণ হলো। গিয়েছিলেন বিশ্বনাথবাবুর সৎকার সম্পন্ন করতে পদ্মা নদীর পাড়ে। ফিরে এলেন ভস্মাবৃত হয়ে, শ্মশ্রু মুণ্ডন করে।”

—এখানে কোন কোন ‘ফলা’ ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলো উল্লেখ কর।
— উদ্ধৃতাংশ অবলম্বনে ‘শ্মশান’, ‘শ্বশুর’, ‘স্মরণ’, ‘সম্পন্ন’, ‘শ্মশ্রু’ শব্দাবলির উচ্চারণ লেখ ।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment