দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে দুই বন্ধুর সংলাপ | সংলাপ লিখন | ভাষা ও শিক্ষা ,ইংরেজি ‘dialogue’ বা ‘conversation’-এর বাংলা প্রতিশব্দ সংলাপ বা কথোপকথন। দুই বা তার বেশি ব্যক্তির মধ্যে যে কথাবার্তা তাকেই বলা হয় সংলাপ বা কথোপকথন। প্রাত্যহিক জীবনে আমরা প্রতিনিয়ত একে অপরের সঙ্গে কথা বলে চলি। লক্ষ করলে দেখব, তার অধিকাংশ কথাই বিচ্ছিন্ন অসম্পূর্ণ এবং যথাযথ শব্দ প্রয়োগে ও বাক্য- বিন্যঅসে সুসংহত নয়। লিখিত সংলাপে বিচ্ছিন্ন অসম্পূর্ণ বাক্য কাম্য নয়; তাকে শুধু ভাষাগত সম্পূর্ণতা দান করলেই চলবে না, অর্থগত পূর্ণতা দিতে হবে।
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে দুই বন্ধুর সংলাপ | সংলাপ লিখন | ভাষা ও শিক্ষা
সুমন : সুজন তোমার সঙ্গে দেখা হয়ে ভালোই হলো। চলো আমার সঙ্গে একটু মিষ্টির দোকানে যাব। বাসায়
মেহমান এসছে। সুজন : বেশ চলো। ‘রসভাণ্ডার’-এ যাবে? সেখানকার মিষ্টি কিন্তু খুব ভালো
সুমন ‘ : দামটাও খুব ভালো। মার্বেলের সাইজের মিষ্টি দশ টাকা করে। আমার দাদাভাই কী বলেন জানিস, ওঁদের ছেলেবেলায় নাকি এক টাকায় ষোলটা রসগোল্লা পাওয়া যেতো। বড় সাইজের। তার ওপর আবার একটা ফাউ।
সুজন : ওফ! সেসব কি সুখের দিনই না তাঁদের গেছে।
সুমন : তুমি যা ভাবছ ঠিক তা নয়। তখন লোকের হাতে টাকাও কম ছিল।
সুজন : কিন্তু এখন লোকের যেমন আয় বেড়েছে জিনিসপত্রের দামও বেড়েছে তার চেয়ে অনেক বেশিগুণ।
সুজন : শুধু বেড়েছে বলছিস কেন? বল ক্রমাগত বেড়েই চলছে। লাগামহীন পাগলা ঘোড়ার মতো।
সুমন : হা-হা-হা।
সুজন : তুই হাসছিস কেন? বিষয়টি কি হাসির? তুই কি ভেবে দেখেছিস স্বল্প আয়ের মানুষদের জন্যে এটা কত বড় ভোগান্তির বিষয়, কষ্টের বিষয়।
সুমন : ঠিকই বলেছিস। অন্যান্য দেশে শুনেছি জিনিসের দাম বাড়লেও খাবার জিনিসের দাম খুব একটা বাড়ে না। দাম সরকার ঠিক করে দেয়। অন্যান্য জিনিসের দাম
সুজন : কিছুদিন আগে সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য ঠিক করে বাজারে তালিকা টানিয়ে রাখার নিয়ম করেছিলেন। কিন্তু সঠিক তদারকির অভাবে সেটাও ভেস্তে গেছে।
সুমন : আচ্ছা সুজন, জিনিসের দাম ক্রমাগত বেড়েই চলছে কেন বলত? সুজন ; প্রথমত, আমাদের দেশে চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম। দ্বিতীয়, অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা; আর রাস্তায়
স্থানে স্থানে চাঁদাও নাকি দিতে হয়। আরেকটি বিষয় আছে, সেটি হল- জিনিস মজুত রেখে কৃত্রিমভাবে অভাব সৃষ্টি করে দাম বাড়িয়ে দেয়া।
সুমন তুই ঠিক ঠিকই বলেছিস। কিন্তু দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে সরকারের দায়-দায়িত্বই তো বেশি। প্রশাসনিকভাবে সরকার আড়তদার, মজুতদারদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিলে নিশ্চয়ই ভালো ফল পাওয়া যাবে।
সুজন : সবচেয়ে বেশি জরুরি নির্বিঘ্নে পণ্য পরিবহনের ব্যবস্থা করা। সুমন : চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদনও বাড়াতে হবে। আমাদের দেশে তো জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেতে পেতে ষোল কোটিতে এসে দাঁড়িয়েছে। এই বিশাল জনসংখ্যার রসদ যোগান দেয়া সহজ কাজ নয়।
সুজন : হা হা হা। বস্তুত, দায়িত্বটা শুধু সরকারের একার নয়, জনগণেরও। বিশেষত, উৎসব আয়োজনে পরিমিতিবোধের দিকে লক্ষ রাখা প্রয়োজন ।
সুমন : আমাদের সবার সচেতন হওয়া প্রয়োজন।
আরও দেখুনঃ