ইভটিজিং এর বিরুদ্ধে গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে সংবাদপত্রে প্রকাশের উপযোগী পত্র | আবেদন পত্র | ভাষা ও শিক্ষা , দরখাস্ত লেখার বিভিন্ন প্রকার ফরমেট রয়েছে। কেউ অফিসের প্রয়োজনে বা অফিস থেকে ছুটি নিতে দরখাস্ত লিখছেন, কেউ বা আবার চাকরির দরখাস্ত লিখছেন, আবার শিক্ষার্থীরা তাদের প্রাতিষ্ঠানিক প্রয়োজনে স্কুল-কলেজের প্রধান বরাবরে দরখাস্ত লিখছেন। যদিও কাজের ধরন অনুয়ায়ী আবেদন ভিন্ন ভিন্ন হয় তবে আপনি যদি একটি আবেদন বা দরখাস্ত লেখার নিয়ম সঠিকভাবে আয়ত্বে আনতে পারেন, তাহলে যেকোন প্রকারের দরখাস্ত লিখতে অপনার সমস্যা হবে না।একটি নির্দিষ্ট গঠন কাঠামো- নিয়ম অনুসরণ করে কর্তৃপক্ষের কাছে সুনির্দিষ্ট কোন বিষয় নিয়ে যে পত্রের মাধ্যমে আবেদন করা হয়, তাদেরকে দরখাস্ত বা আবেদনপত্র বলা হয়ে থাকে।
বিভিন্ন বিষয়ে আবেদন করার ক্ষেত্রে আমরা এধরনের পত্রের ব্যবহার করে থাকি। প্রাতিষ্ঠানিক, দাপ্তরিক নানা প্রয়োজনে- শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নানা বিষয়ে শিক্ষার্থীদের করা দরখাস্ত, অফিসে ছুটির জন্য আবেদন, চাকরির আবেদন পত্র সহ নানা বিষয়ে এধরনের পত্র লেখা হয়ে থাকে।
বাংলা দরখাস্ত কাজের সুবিধার্তে অনেক সময় বিভিন্ন প্রকারের আবেদন পত্র লিখতে হয়। কিন্তু সঠিকভাবে বাংলা দরখাস্ত লেখার নিয়ম জানার অভাবে আমরা এ বিষয়ে অভিজ্ঞদের কাছ থেকে দরখাস্ত বা আবেদন লেখার নিয়ম জেনে নিতে হয়। বিশেষ ভাবে চাকরি প্রার্থীগণ চাকরির আবেদন বা চাকরির দরখাস্ত লেখার নিয়ম সঠিকভাবে না জানার কারনে অনেক সমস্যায় পড়েন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, লজ্জার কারনে এ বিষয়ে অন্যের দ্বারস্ত হয়ে পরামর্শও নেন না। যার ফলে একটি সুনির্দিষ্ট বিষয়ে ভালোমানের দরখাস্ত লেখাও হয় না। এতে করে চাকরির আবেদনটি কর্তৃপক্ষের নিকট পছন্দ হয় না।

ইভটিজিং এর বিরুদ্ধে গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে সংবাদপত্রে প্রকাশের উপযোগী পত্র
তারিখ : ০১ / ০১ / ২০০০
বরাবর সম্পাদক
দৈনিক যুগান্তর
১২/৭ উত্তর কর্মলাপুর, ঢাকা।
জনাব,
‘ইভটিজিং’ প্রতিরোধে প্রয়োজন জনসচেতনতা ও সামাজিক আন্দোলন
আপনার বহুল প্রচারিত পত্রিকার ‘চিঠিপত্র’ বিভাগে প্রকাশের জন্য “ইভটিজিং প্রতিরোধে প্রয়োজন জনসচেতনতা ও সামাজিক আন্দোলন” শিরোনামে একটি চিঠি এই সঙ্গে পাঠাচ্ছি। এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সর্বসাধারণ ও সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের উদ্দেশ্যে আমার এই বক্তব্য প্রকাশ করে বাধিত করবেন। বিনীত সালমা আক্তার, নাটোর।
বর্তমানে ইভটিজিং বহুল আলোচিত একটি শব্দ। বিশিষ্টজনের মতে— অশালীন চাহনির মাধ্যমে মেয়েকে উত্যক্ত করা, সিটি (বাঁশির শব্দ) বাজানো, আচমকা হাত তালি দেয়া, অপ্রত্যাশিতভাবে সামনে লাফিয়ে পড়া, ধরার ভান করা, অশালীন গান গেয়ে ওঠা, বাজে মন্তব্য ছুঁড়ে দেয়া, অনুমতি ছাড়া ক্যামেরা অথবা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ছবি তুলা বা ভিডিও করা বা মিস কল দেয়া বা ম্যাসেজ পাঠানো ইভটিজিংয়ের পর্যায়ে পড়ে। ইভটিজিং একটি মানসিক ও সামাজিক সমস্যা। সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের সমাজে উত্যক্তকারিদের জ্বালাতনে নারীর জীবন অতিষ্ঠ। কিছু মানুষের, বিশেষত উচ্ছৃঙ্খল ও বখাটে ছেলেদের/যুবকদের বিকৃত মানসিকতা এবং নৈতিক চরিত্রের অবনতি, মূল্যবোধের অভাব, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এর প্রধান কারণ। বর্তমানে ইভটিজিং এতটাই ভয়াবহ হয়ে উঠেছে যে, এর কারণে শুধু মেয়েরাই প্রাণ দিচ্ছে না, প্রতিবাদকারীরাও এখন আর নিরাপদ নন।
যৌন হয়রানিমূলক ইভটিজিংয়ের শিকার হয়ে দেশে এ পর্যন্ত কতজন মেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে তার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান না থাকলেও ন্যাশনাল উইম্যান ল’ইয়ার অ্যাসোসিয়েশনের এক সাম্প্রতিক তথ্যে দেখানো হয়েছে, বর্তমানে দেশে ১০ থেকে ১৮ বছর বয়সী ৯০% নারী ঘরে এবং ঘরের বাইরে ইভটিজিংয়ের শিকার হচ্ছেন। তাই আর দেরি না করে আজ, এবং এখনই ইভটিজিং- এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এর জন্য কঠোর আইন ও শাস্তির ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে জনগণের সৃষ্ট দূরত্ব কমিয়ে আনতে হবে, পুলিশকে গণমানুষের আস্থা অর্জন করতে হবে এবং রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে স্বাধীনভাবে কাজ করতে হবে। তবে, শুধু কঠুর আইন করে ইভটিজিং প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়, এর জন্য প্রয়োজন জনসচেতনতা ও সামাজিক আন্দোলন।
ইভটিজিং নামক সামাজিক ব্যাধিকে সামগ্রিকভাবে নারী নির্যাতন অথবা যুব সমাজের ভয়াবহ অধঃপতন— যে নামেই অভিহিত করা হোক না কেন, এই ব্যাধি হতে সমাজকে মুক্ত করতে না পারলে মানবিক অগ্রগতির পথ বাধাগ্রস্ত হতে থাকবে। তাই পরিবারের ছেলেমেয়েদের মধ্যে নৈতিক মূল্যবোধ তৈরি করতে হবে। তৈরি করতে হবে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ। যে মেয়েটি ইভটিজিং-এর শিকার— পরিবার থেকে তার প্রতি সহানুভূতি, সাহস ও আশ্বাস দেয়া বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ; যাতে মেয়েটি তার মনোবল হারিয়ে না ফেলে। নারীকে মানুষ হিসেবে সম্মান করার বিষয়টি পুত্র-সন্তানদের পরিবার থেকেই শিক্ষা দিতে হবে।
সালমা আক্তার, নাটোর।
আরও দেখুন: