সড়ক দুর্ঘটনা রোধের ব্যাপারে পরামর্শ দিয়ে সংবাদপত্রে প্রকাশের জন্যে পত্র | আবেদন পত্র | ভাষা ও শিক্ষা , বাংলা দরখাস্ত কাজের সুবিধার্তে অনেক সময় বিভিন্ন প্রকারের আবেদন পত্র লিখতে হয়। কিন্তু সঠিকভাবে বাংলা দরখাস্ত লেখার নিয়ম জানার অভাবে আমরা এ বিষয়ে অভিজ্ঞদের কাছ থেকে দরখাস্ত বা আবেদন লেখার নিয়ম জেনে নিতে হয়। বিশেষ ভাবে চাকরি প্রার্থীগণ চাকরির আবেদন বা চাকরির দরখাস্ত লেখার নিয়ম সঠিকভাবে না জানার কারনে অনেক সমস্যায় পড়েন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, লজ্জার কারনে এ বিষয়ে অন্যের দ্বারস্ত হয়ে পরামর্শও নেন না। যার ফলে একটি সুনির্দিষ্ট বিষয়ে ভালোমানের দরখাস্ত লেখাও হয় না। এতে করে চাকরির আবেদনটি কর্তৃপক্ষের নিকট পছন্দ হয় না।
দরখাস্ত লেখার বিভিন্ন প্রকার ফরমেট রয়েছে। কেউ অফিসের প্রয়োজনে বা অফিস থেকে ছুটি নিতে দরখাস্ত লিখছেন, কেউ বা আবার চাকরির দরখাস্ত লিখছেন, আবার শিক্ষার্থীরা তাদের প্রাতিষ্ঠানিক প্রয়োজনে স্কুল-কলেজের প্রধান বরাবরে দরখাস্ত লিখছেন। যদিও কাজের ধরন অনুয়ায়ী আবেদন ভিন্ন ভিন্ন হয় তবে আপনি যদি একটি আবেদন বা দরখাস্ত লেখার নিয়ম সঠিকভাবে আয়ত্বে আনতে পারেন, তাহলে যেকোন প্রকারের দরখাস্ত লিখতে অপনার সমস্যা হবে না।
সড়ক দুর্ঘটনা রোধের ব্যাপারে পরামর্শ দিয়ে সংবাদপত্রে প্রকাশের জন্যে পত্র
তারিখ : ১০ নভেম্বর, ২০০০
সম্পাদক,
দৈনিক ইত্তেফাক
১ রামকৃষ্ণ মিশন রোড, ঢাকা-১২০৩।
জনাব,
আপনার বহুল প্রচারিত পত্রিকার ‘চিঠিপত্র’ বিভাগে প্রকাশের জন্য ‘সড়ক দুর্ঘটনা রোধের উপায়’ শিরোনামের একটি চিঠি এই সঙ্গে পাঠাচ্ছি। অনুগ্রহ করে তা প্রকাশের সুযোগ করে দিলে বাধিত হব।
বিনীত
‘খ’, পীরগঞ্জ, দিনাজপুর।
সড়ক দুর্ঘটনা রোধের উপায়
‘একটা দুর্ঘটনা— সারা জীবনের কান্না’- এ স্লোগানটি নির্মম বাস্তবতানির্ভর। সড়ক দুর্ঘটনা বর্তমানে আমাদের দেশের একটি জাতীয় সমস্যা। দেশের কোথাও না কোথাও সড়ক দুর্ঘটনা মুহূর্তের মধ্যে ছিনিয়ে নিচ্ছে মানুষের অমূল্য জীবন, ভেঙে দিচ্ছে তাদের সাজানো সংসার। পঙ্গু ও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে অনেক মানুষ। সম্পদের ক্ষতিও কম হচ্ছে না। তাই আজ সর্বমহল থেকে দাবি উঠেছে, ‘নিরাপদ সড়ক চাই’। তদুপরি যেন প্রতিযোগিতা করে এ দেশে সড়ক দুর্ঘটনার হার বেড়ে যাচ্ছে। এতে কত মূল্যবান প্রাণ অকালে ঝরে পড়ছে, কত পরিবার পথে বসেছে, সেই অশ্রুসজল করুণ মুখের হিসাব কেউ রাখে না।

পিতার কাঁধে পুত্রের লাশ অথবা অপ্রাপ্ত বয়স্ক পুত্রের সামনে পিতার রক্তাক্ত নিথর দেহ এই অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না। অথচ এসব দুর্ঘটনার পেছনে অধিকাংশ ক্ষেত্রে চালক ও সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতা ও সংশ্লীষ্ট অন্যান্য সবার যথাযথ কর্তব্য পালনে অবহেলা ছাড়া আর কোনো কারণ নেই। তারপরও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। প্রতিটি বাসস্টেশনে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ বা তদারককারী মোতায়েন করে চালক, কন্ট্রাকটর, হেলপারদের স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধ করতে হবে। প্রয়োজন হলে বাসচালক ও বাসমালিকদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত শাস্তি বিধান নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ও নিরাপদ যানবাহন চলাচলের জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করা যেতে পারে :
(১) বেশিরভাগ দুর্ঘটনাই ঘটে অদক্ষ, অযোগ্য ও লাইসেন্সবিহীন চালকের কারণে। তাই লাইসেন্স প্রদানের পূর্বে চালকের দক্ষতা ও যোগ্যতা ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করতে হবে। লাইসেন্সবিহীন কেউ যেন গাড়ি চালাতে না পারে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।
(২) ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন প্রায়ই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটায়। তাই গাড়ি রাস্তায় বের করার পূর্বে যান্ত্রিক কার্যকারিতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে। প্রতিটি গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট আছে কিনা তাও দেখতে হবে।
(৩) ট্রাফিক আইন ভঙ্গের কারণে অনেক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। তাই এ আইনের প্রতি যাতে সবাই শ্রদ্ধাশীল থাকে সেজন্য একে আরো শক্তিশালী ও যুগোপযোগী করতে হবে।
(৪) ওভারটেকিংয়ের কারণে অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটে। তাই বিধিবহির্ভূত ওভারটেকিংয়ের অসম প্রতিযোগিতা থেকে চালককে বিরত থাকতে হবে।
(৫) অতিরিক্ত মাল ও যাত্রী বোঝাই সড়ক দুর্ঘটনার জন্যে অনেকাংশে দায়ী। অতিরিক্ত মাল ও যাত্রী বহন কঠোর আইন প্রণয়নের মাধ্যমে রুহু করতে হবে।
(৬) মহাসড়কের সংখ্যা বৃদ্ধি ও তা অধিকতর প্রশস্ত করা। (৭) রাস্তায় ডিভাইডার প্রস্তুত করা। (৮ গাড়ি চালকদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা ইত্যাদি।
আশা করি, উপর্যুক্ত কারণগুলো চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ এবং সুপারিশমালা বাস্তবায়ন করলে সড়ক দুর্ঘটনা অনেকাংশে রোধ করা সম্ভব হবে।
নিবেদক
পীরগঞ্জ, দিনাজপুর।
আরও দেখুন: