কলেজের পুরস্কার বিতরণী উৎসবের বর্ণনা দিয়ে পত্র | পত্র বা চিঠি | ভাষা ও শিক্ষা

কলেজের পুরস্কার বিতরণী উৎসবের বর্ণনা দিয়ে পত্র | পত্র বা চিঠি | ভাষা ও শিক্ষা , ঐতিহাসিকভাবে, চিঠির প্রচলন ছিল প্রাচীন ভারত, প্রাচীন মিশর, সুমের, প্রাচীন রোম, মিশর এবং চীনে, এবং এই ইন্টারনেটের যুগেও এর চল বর্তমান। সতের ও আঠারো শতকে চিঠি লেখা হতো স্ব-শিক্ষার জন্য। চিঠি ছিল পাঠচর্চা, অভিজ্ঞতা বর্ণনা করা, বিতর্কমূলক লেখা বা সমমনা অন্যদের সাথে আইডিয়া বিনিময়ের পদ্ধতি। কিছু লোক চিঠিকে মনে করতো কেবল লেখালেখি। আবার অন্যরা মনে করে যোগাযোগের মাধ্যম।

কলেজের পুরস্কার বিতরণী উৎসবের বর্ণনা দিয়ে পত্র

পীরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও ১০ মার্চ, ২০০০

সুপ্রিয় ‘ক’,

প্রীতি ও শুভেচ্ছা নিও। বেশ কিছুদিন হয়ে গেল তোমার কোনো খবর পাই নি। আশা করি ভালো আছ। গত পরশুদিনআমাদের কলেজে বার্ষিক ক্রীড়ানুষ্ঠান হয়ে গেলো। তুমি শুনে অত্যন্ত আনন্দিত হবে যে, এবারের বার্ষিক ক্রীড়ায় আমি তিনটি ইভেন্টে প্রথম স্থান অধিকার করেছি। শুধু তা-ই নয়, ‘ক’ গ্রুপে আমি চ্যাম্পিয়ন হবার গৌরবও অর্জন করেছি। আমাদের ক্রীড়ানুষ্ঠানটি ছিল অত্যন্ত বৈচিত্র্যময়। বার্ষিক ক্রীড়ানুষ্ঠানের জন্য কলেজের মাঠকে সুন্দরভাবে সজ্জিত করা হয়। বাংলাদেশ স্কাউটস-এর জাতীয় কমিশনার এই ক্রীড়ানুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

 

কলেজের পুরস্কার বিতরণী উৎসবের বর্ণনা দিয়ে পত্র

 

এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আমাদের জেলা প্রশাসক সাহেব। এছাড়াও অত্র এলাকার বহু গণ্যমান্য ব্যক্তি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি দু পর্বে বিভক্ত ছিল। প্রথম পর্ব শুরু হয় সকাল নয়টায়। জেলা প্রশাসক সাহেব ক্রীড়ানুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন। সে সময় তিনি নিজ হাতে লাল ফিতা কাটেন, সঙ্গে সঙ্গে সমবেত দর্শকবৃন্দ হাততালি দিয়ে উদ্বোধন ঘোষণাকে স্বাগত জানান। প্রতিযোগিতায় দুটি গ্রুপ ছিল। ক-গ্রুপ এবং খ-গ্রুপ। আমি ক-গ্রুপে অংশ নিই।

এ গ্রুপের উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো ছিল ১০০ মিটার ও ২০০ মিটার দৌড়, লং জাম্প, হাই জাম্প, বর্ষা নিক্ষেপ, ডিসকাস থ্রো, ১৫০ মিটার হার্ডলপ, ট্রিপল জাম্প ইত্যাদি। মোট ২৫টি ইভেন্টে ১৫০ জন প্রতিযোগী অংশ নেয়। এদের মধ্যে ৯২ জন ছাত্র এবং ছাত্রী ৫৮ জন। একজন প্রতিযোগী সর্বোচ্চ চারটি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার নিয়ম ছিল। আমি তাই ১০০ ও ২০০ মিটার দৌড়, লং জাম্প ও ডিসকাস থ্রোতে অংশ নিই। দৌড় ও লং জাম্পে আমি বরাবরের মতোই প্রথম হই। কিন্তু ডিসকাস থ্রোতে প্রথম হতে পারি নি। মানবিক শাখার কামাল, সুঠাম স্বাস্থ্যের অধিকারী হিসেবে যার বিপুল পরিচিতি, সেই আমার রেকর্ডকে ভেঙে দিয়েছে।

 

কলেজের পুরস্কার বিতরণী উৎসবের বর্ণনা দিয়ে পত্র

 

তবে খেলার মাঠে সে আমাকে অতিক্রম করতে পারে নি। চ্যাম্পিয়ন ট্রফিটি আমি বাগিয়ে নিয়েছি। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি দ্বিতীয় পর্বে উপস্থিত ছিলেন। তার হাত থেকেই আমরা পুরস্কার গ্রহণ করি। চ্যাম্পিয়ন ট্রফিটি আমি যখন নিতে যাই তখন ছিল একটি উল্লেখযোগ্য মুহূর্ত। বেশ কয়েকটি ক্যামেরা আমার দিকে তখন তাক করানো ছিল। তাছাড়া ভিডিও ক্যামেরার উজ্জ্বল আলো আমার চোখে এসে লাগছিল। আনন্দে আমার শরীর তখন কাঁপছিল। সে এক অন্য রকমের অনুভূতি। –

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

পুরস্কার বিতরণী শেষ হলে প্রধান অতিথি এবং বিশেষ অতিথি আমাদের উদ্দেশ্য মূল্যবান বক্তব্য রাখেন। আমাদের অধ্যক্ষ স্যারও এই শুভ দিনটিকে স্মরণীয় এবং বরণীয় করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেন। তারপর সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে বার্ষিক ক্রীড়ানুষ্ঠানের যবনিকা টানা হয়। ওই দিনটিতে আমি কয়েকবার তোমার কথা মনে করেছি। সত্যি তুমি যদি ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে, বন্ধুর বিরল কৃতিত্ব প্রত্যক্ষ করতে, তাহলে সেই মুহূর্তগুলো আমার কাছে আরো কতই না মধুর হতো। যাক, অনেক লিখলাম। ভালো থেকো। বাসার সবার প্রতি শ্রেণিভেদে স্নেহ ও সালাম রইল।

ইতি প্রীতিমুগ্ধ

আরও দেখুন:

Leave a Comment