কলেজের সাহিত্য ও সংস্কৃতি সপ্তাহের বর্ণনা পত্র | পত্র বা চিঠি | ভাষা ও শিক্ষা , বাইবেলের বেশ কয়েকটি পরিচ্ছেদ চিঠিতে লেখা। অযক্তিগত, কূটনৈতিক বা বাণিজ্যিক- সবরকম চিঠিই পরবর্তীকালে ঐতিহাসিকগণ প্রাথমিক উৎস হিসেবে ব্যবহার করেন। কখনোবা চিঠি এতো শৈল্পিক রূপ পায় যে তা সাহিত্যের একটি বর্গ হয়ে ওঠে, যেমন বাইজেন্টাইনে এপিস্টোলোগ্রাফি বা সাহিত্যের পত্র উপন্যাস।
কলেজের সাহিত্য ও সংস্কৃতি সপ্তাহের বর্ণনা পত্র
রামু; কক্সবাজার ১০ মার্চ, ২০০০
সুপ্রিয় ‘ক’,
আমার প্রীতি ও বর্ণিল শুভেচ্ছা নিও। তোমার চিঠি পেয়ে খুব খুশি হয়েছি। তোমাদের কলেজের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় তুমি যে সাফল্য অর্জন করেছ তার জন্যে আন্তরিক ধন্যবাদ। তুমি আমাদের কলেজের কার্যক্রম জানতেচেয়েছ। গত সপ্তাহে আমাদের সাহিত্য ও সংস্কৃতি সপ্তাহ শেষ হয়ে গেছে। তার কিছু বিবরণ আমি তোমাকে দিলাম- এবার আমাদের কলেজে এক সপ্তাহ জুড়ে সাহিত্য ও সংস্কৃতি সপ্তাহের আয়োজন করা হয়েছিল। এবার প্রতিযোগিতার বিষয় যেমন ছিল অনেক, তেমনি ছিল বৈচিত্র্যপূর্ণ— যার জন্যে সব শিক্ষার্থীই কম-বেশি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে।
এবার আমাদের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যেসব বিষয় নির্বাচন করা হয়েছিল তার উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হল : কেরাত, হামদ-নাত, কবিতা আবৃত্তি, অভিনয়, আধুনিক গান, রবীন্দ্রসঙ্গীত, নজরুলগীতি, লোকসঙ্গীত, পল্লীগীতি, কৌতুক, স্বরচিত গল্প, নির্ধারিত বক্তৃতা, উপস্থিত বক্তৃতা, বিতর্ক, যেমন খুশি তেমন সাজ এবং নৃত্য। এসব বিষয়ে শিক্ষার্থীরা সবাই-ই কম বেশি অংশগ্রহণ করেছে। তবে একজন প্রতিযোগী সর্বোচ্চ চারটি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার নিয়ম ছিল। বার্ষিক ক্রীড়ানুষ্ঠানের জন্যে কলেজের মাঠকে সুন্দরভাবে সজ্জিত করা হয়।
এক সপ্তাহ জুড়ে এই সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রথম দিনের উদ্বোধন করেন কলেজের মাননীয় অধ্যক্ষ। কর্মসূচির তত্ত্বাবধানে ছিলেন বাংলা বিভাগের অধ্যাপক জনাব মফিজুল ইসলাম। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মাননীয় মহাপরিচালক। এছাড়াও অত্র এলাকার বহু গণ্যমান্য আমন্ত্রিত অতিথি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শেষ দিন দুপুর থেকে শুরু হয় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি শেষ পর্বেও উপস্থিত ছিলেন। প্রতিযোগিতায় সর্বাধিক পুরস্কার অর্জনের গৌরব লাভ করেছে প্রথম বর্ষের ছাত্রী আইরিন সুলতানা। অনুষ্ঠানের শেষ গানটিও আইরিনই গেয়েছিল, যা অতিথিদের বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে।

আমি গানে প্রথম পুরস্কার এবং অভিনয়ে দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছি। পুরস্কার নেয়ার অনুভূতি ছিল অন্যরকম। কলেজ জীবনের শেষ বছরের এই মধুর স্মৃতি আমার অমূল্য প্রাপ্তি। পুরস্কারের কথাটা বড়ো নয়, অনুষ্ঠানে সক্রিয় অংশ নিয়ে যে আনন্দ পেয়েছি, তা বলে বোঝাতে পারব না।
পুরস্কার বিতরণী শেষ হলে প্রধান অতিথি এবং বিশেষ অতিথি আমাদের উদ্দেশ্যে মূল্যবান বক্তব্য রাখেন। অধ্যক্ষ স্যারও সাংস্কৃতিক সপ্তাহটি স্মরণীয় এবং বরণীয় করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেন। আমাদের অনুষ্ঠানমালা ছিল বেশ সুদীর্ঘ। অথচ কখনো বা কোনোদিনই একঘেয়ে মনে হয় নি। কোথাও এতটুকু বিশৃঙ্খলতা ছিল না। এরকম একটি সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের স্মৃতি আমাদের মনে বহুদিন উজ্জ্বল হয়ে থাকবে। আজ আর নয়, ভালো থেকো, সুন্দর থেকো — বিদায়।
ইতি
গুণমুগ্ধ
আরও দেখুন: