হাস্যমুখে অদৃষ্টেরে করব মোরা পরিহাস | ভাব-সম্প্রসারণ | ভাষা ও শিক্ষা

হাস্যমুখে অদৃষ্টেরে করব মোরা পরিহাস | ভাব-সম্প্রসারণ | ভাষা ও শিক্ষা , ভাবসম্প্রসারণ অনেকটা ভাবার্থের বিপরীত । কোনো পদ্যাংশ বা গদ্যাংশের ভেতর একটি গূঢ় তাৎপর্য অত্যন্ত স্বপ্নায়তনে থাকে । তাকে বিস্তৃতভাবে প্রকাশ করার নামই ভাবসম্প্রসারণ। ইংরেজিতে এটিকে Amplification বা Explanation of idea বলে ।

 

হাস্যমুখে অদৃষ্টেরে করব মোরা পরিহাস

 

হাস্যমুখে অদৃষ্টেরে করব মোরা পরিহাস

মানুষ তার নিজের ভাগ্যের নির্মাতা। যারা ভীরু, দুর্বল; যাদের আত্মবিশ্বাস অদৃষ্টবাদী। মানুষ অধ্যবসায় ও একনিষ্ঠ শ্রমের দ্বারা তার নিজ ভাগ্যকে সার্থক করে তোলে। [ কম, শুধু তারাইজীবনসংগ্রামে পরাভূত মানুষ নিজেকে ভাগ্যহত, দৈবলাঞ্ছিত বলে মনে করে। তার ধারণা এক অদৃশ্য দৈবশক্তি নেপথ্য থেকে জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে চালনা করে চলেছে। আত্মশক্তিতে আস্থাহীন মানুষ সেই অন্ধ দৈবশক্তির নাম দিয়েছে অদৃষ্ট। অদৃষ্টের হাতে শৃঙ্খলিত সেই মানব বন্দি প্রমিথিয়ুসের মতো বিদ্রোহী হয়ে উঠতে পারে নি। তার সত্তায় ব্যক্তিত্বের স্ফুলিঙ্গ অগ্নি হয়ে দেখা দেয় নি।

 

হাস্যমুখে অদৃষ্টেরে করব মোরা পরিহাস

 

বিজ্ঞানের এ যুগেও কোনো কোনো মানুষ বিপর্যয়ের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে নিজেকে সমর্পণ করে অদৃষ্টের অলীক হাতে। যৌবনশক্তির দুর্বার গতিবেগে প্রাণচঞ্চল যারা, দুর্মর সংগ্রামের ক্ষুরধার পথে হাঁটাই তাদের ধর্ম। অদৃশ্য দৈবী শক্তিতে তারা বিশ্বাসী নয়, সংগ্রামে-সংঘাতের মধ্য দিয়ে জীবনের শ্রেষ্ঠ ফসলটি তুলে নেওয়াই তাদের লক্ষ্য। তাদের দৃঢ় প্রত্যয় হলো ভাগ্য মানুষকে চালিত করে না, মানুষই ভাগ্য গড়ে। কর্ম হল সুপ্রসন্ন সৌভাগ্যের জনক।

 

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

অদৃষ্টের দোহাই দিয়ে কর্মবিমুখতা নিজের শক্তিমত্তার কাছ থেকে পলায়নী মনোবৃত্তির নামান্তর। কর্মবীর মানুষই সৌভাগ্যের স্বর্ণশীর্ষে হয় আসীন। অপরদিকে অদৃষ্টনির্ভর মানুষ তার নিশ্চেষ্টআলস্যহেতু পদে পদে বরণ করে পরাজয়, জীবনভর তাকে হতাশায় নিরাশায় দীর্ঘশ্বাসের সেতু রচনা করতে হয়। যারা আত্মশক্তিতে বীর্যবান তারা দুর্দমনীয় যৌবনশক্তির আবেগে সদা কম্পমান। তাদের গতিবেগ ঝড়ের মতো, তাদের জীবনের চলার পথে বাধা-বিপত্তি যত দুর্লঙ্ঘ্যই হোক না কেন অদৃষ্টের কাছে তারা নতজানু না হয়ে দুর্জয় আত্মশক্তিতে তা অতিক্রম করেন।

আরও দেখুন:

Leave a Comment