পথ পথিকের সৃষ্টি করে না – ভাব-সম্প্রসারণের একটি নমুনা তৈরি করে দেয়া হল। আগ্রহীরা এখন থেকে ধারণা নিয়ে নিজের ভাষায় নিজস্ব ভাষণ তৈরি করবেন। স্পষ্ট ভাষায় ভাবসম্প্রসারণ কি তা বললে বোঝায়, কবি, সাহিত্যিক, মনীষীদের রচনা কিংবা হাজার বছর ধরে প্রচলিত প্রবাদ প্রবচনে নিহিত থাকে জীবনসত্য। এ-ধরনের গভীর ভাব বিশ্লেষণ করে তা সহজভাবে বুঝিয়ে দেওয়াকে বলে ভাবসম্প্রসারণ।
পথ পথিকের সৃষ্টি করে না
পথিক জীবনচক্রে আবর্তনকারী মহা জীবনের রথ। সে গতির প্রতীক। পথিকের পদচিহ্নে অঙ্কিত ! হয় পথরেখা। এই পথের নির্মাতা বা স্রষ্টা মানুষ নিজেই। কৃতী মানুষ তার জীবনের গতিময় পথ নিজেই সৃষ্টি করে নেয়। অপরের সৃষ্ট পথ তার জন্যে অনুসরণযোগ্য নয়। নিজের সাধনা ও কর্মকুশলতার সহায়তায় মানুষকে এগিয়ে যেতে হয় নিজের পথের সন্ধান করে। মানুষকে নানা অজানা অধ্যায় অতিক্রম করার জন্যে নিত্য-নতুন পথ তৈরি করতে হয়। বাঁধা পথে সফলতার সম্ভাবনা নেই বলে, উদ্যোগী পথিক তার গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্যে নিজেই পথের সৃষ্টি করে নেন। তাঁর সৃষ্ট পথই তাঁকে নতুন দিগন্তের সন্ধান দেয়।
পথ তৈরি হয়েছে পথিকের অগ্রগমনের জন্যে। যাত্রা যাতে সহজতর হয় সেদিকে লক্ষ রেখেই পথের সৃষ্টি। কিন্তু এ পথই যে জীবনের গন্তব্যে পৌঁছে দেবে এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। জীবনের লক্ষ্য অর্জনের জন্যে পূর্বপ্রতিষ্ঠিত পথ সহায়ক নাও হতে পারে। গতানুগতিক পথে চললে জীবনের প্রাপ্য অনেক সময় সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। তাই সে পথ পরিহার করে নতুন পথের খোঁজ করতে হবে।

তাই জীবনসন্ধানী পথিকের পথ হয় স্বতন্ত্র, সে তাঁর সাধনা দিয়ে নতুন পথের সৃষ্টি করে নেয়। যে মানুষ নতুন পথের খোঁজ পায় তার পক্ষে জীবনকে অর্থপূর্ণ ও সফল করে তোলা সম্ভব হয়। তাই বাঁধা পথে চলে জীবনকে সফল করা যায় না। কালে-কালান্তরে মানুষ দেশ-দেশান্তরে সমাজ ও সভ্যতার অজস্র পথ তৈরি করেছে। নতুন পথের সন্ধান করে পথ তৈরি করা আবশ্যক। তবেই জীবন ধন্য হবে, সার্থক হবে, জীবনে সফলতা আসবে।
আরও দেখুন: