জ্ঞানহীন মানুষ পশুর সমান | ভাব-সম্প্রসারণ | ভাষা ও শিক্ষা , ভাব সম্প্রসারণ এর সময় সেই চরণের মূল গভীর ভাবটুকু উদ্ধার করে প্রয়োজনীয় যুক্তি, বিশ্লেষণ এবং উপমা ব্যবহার করে সেইসাথে প্রয়োজন অনুসারে উদাহরণের মাধ্যমে উপস্থাপন করার প্রক্রিয়া। কবি বা লেখকের যেখানে তার বক্তব্যকে ব্যঞ্জন এবং ইঙ্গিত ধর্মী করে প্রকাশ করেন সেগুলো কে আলোক ধর্মী হিসাবে উপস্থাপন করার মাধ্যমে ভাব সম্প্রসারণ করা হয়।
জ্ঞানহীন মানুষ পশুর সমান
জীবজগতে পশুর যেমন জ্ঞানবুদ্ধি ও বোধশক্তি নেই, তেমনি জ্ঞানহীন মানুষ আর পশুর মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকে না। জ্ঞানচর্চার দ্বারা মানুষ যথার্থ মনুষ্যত্বের অধিকারী হয়ে ওঠে। তাই বলা হয়, “জ্ঞানার্জন ধনার্জনের চেয়েও মহত্তর। ‘
জ্ঞান মানুষের জীবনে হিরণ্ময় দ্যুতিতে ভাস্বর এক অনন্য মানবীয় গুণ। জ্ঞান আছে বলেই মানুষ সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব। জ্ঞানার্জনের মাধ্যমেই মানুষ ভাল-মন্দ, ন্যায়-অন্যায় বিচারবোধের অধিকারী হতে পারে। জ্ঞান পরশমণি। জ্ঞানের পরশে জীবন আলোকিত হয়ে ওঠে। জীবনে সাফল্যলাভের জন্যে জ্ঞান মানুষকে কলুষমুক্ত জীবনের সন্ধান দেয় এবং মানুষকে অন্তর্নিহিত পাশবিক শক্তির বিনাশ সাধন করে পূত-পবিত্র জীবন গঠনে সহায়তা করে। শিক্ষার গুরুত্ব প্রতিপন্ন করতে আল্লাহতায়ালা বিশ্বনবী হযরত মুহম্মদ (স)-এর ওপর কোরআনের প্রথম বাণী নাজিল করেন—‘ইকরা অর্থাৎ ‘পড়’। বিশ্বনবী (স) শিক্ষালাভের জন্যে সুদূর চীনদেশে যেতে বলেছেন।
পক্ষান্তরে, জ্ঞানহীন মানুষ আলোক- বিবর্জিত। তার মধ্যে কখনোই মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটে না বলে অন্তর্নিহিত পশুশক্তির তাড়নায় জীবনে সে কুপথে ধাবিত হয়। তার মধ্যে ভাল-মন্দ, ন্যায়-অন্যায় ইত্যাদির বিচারবোধ জন্মে না। পশুসুলভ আচার-আচরণে সে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। জ্ঞানহীন মানুষ সর্বদা হিংসা, বিদ্বেষ, লোভ-লালসা, কামনা-বাসনা প্রভৃতি কু-প্রবৃত্তির দাসত্বে নিমগ্ন থাকে। তাই জ্ঞানহীন মানুষ সমাজের শত্রু, দেশের শত্রু, জাতির শত্রু, জগতের শত্রু। জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে মানুষের জ্ঞানের উন্মেষ ঘটে। মানুষ হিসেবে শ্রেষ্ঠত্ব লাভের জন্যে জ্ঞানের সহায়তা
অপরিহার্য। অন্য প্রাণীর সঙ্গে মানুষের পার্থক্য এখানেই। বিশ্বের তাবৎ প্রাণীর ওপর মানুষ প্রভুত্ব করছে জ্ঞানের শক্তিতেই। তাই জ্ঞান অর্জিত না হলে মানুষ আর পশুর মধ্যে কোনো ব্যবধান থাকে না ।
আরও দেখুন: