বহু দিন ধরে বহু ক্রোশ দূরে সারাংশ সারমর্ম দেখবো আজ। এই পাঠটি আমাদের ভাষা ও শিক্ষা সিরিজের , সারাংশ সারমর্ম বিভাগের একটি পাঠ।
Table of Contents
বহু দিন ধরে বহু ক্রোশ দূরে সারাংশ সারমর্ম লিখন
বহু দিন ধরে … রচনাটি ভালোভাবে পড়ে নেবো। এরপর আমরা রচনাটির সারাংশ সারমর্ম তৈরি করবো। তারপর সারাংশ সারমর্ম তৈরি করার নিয়মের দিকে একটু চোখ বুলিয়ে নেব।
বহু দিন ধরে বহু ক্রোশ দূরে কবিতা
বহু দিন ধরে বহু ক্রোশ দূরে
বহু ব্যয় করি বহু দেশ ঘুরে
দেখিতে গিয়েছি পর্বতমালা,
দেখিতে গিয়েছি সিন্ধু।
দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া,
ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া
একটি ধানের শীষের উপরে
একটি শিশির বিন্দু
বহু দিন ধরে বহু ক্রোশ দূরে সারমর্ম :
মানুষ বহু অর্থ ও সময় ব্যয় করে দূর-দূরান্তে সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্যে যায়। কিন্তু ঘরের কাছের অনির্বচনীয় সৌন্দর্যটুকু দেখা হয় না বলে সে দেখা পূর্ণতা পায় না।
সারাংশ সারমর্ম রচনা করার নিয়ম:
মূল রচনায় উক্তি-প্রভুক্তি থাকলে তাকে প্রথম পুরুষে রূপান্তরিত করে লিখতে হবে। উদ্ধৃতি বর্জন করতে হবে। নির্ধারিত মূল অংশটি বারবার পড়ে তা থেকে মূল কথাটি, অর্থাৎ মূল ভাব খুঁজে বের করতে হবে। মূল বিষয়টি না বুঝে অনুমানের ওপর নির্ভর করলে চলবে না। মূল ভাবটি রচনার প্রথমাংশ, মধ্যাংশ বা শেষাংশের যে- কোন স্থানে থাকতে পারে। মূল অংশটিই আলোচ্য; অন্য অংশগুলো বর্জনীয়।
কবি-সাহিত্যিকগণ যখন তাঁদের সাহিত্যের রচনাকে সৃষ্টি করেন তখন মূলকথাটি রসমধুর করে অর্থাৎ খুবই মর্মগ্রাহী করে প্রকাশ করেন। এর মূল লক্ষ্য হল শ্রোতা বা পাঠকের মনকে আকর্ষণ করা। আর এ-জন্যে মূলকথাটির সঙ্গে বেঁধে দেয়া হয় ছন্দ, অলঙ্কার, উপমা, দৃষ্টান্ত ইত্যাদি। ফলে মূল বক্তব্যের গায়ে লাগে রসের প্রলেপ।

রবীন্দ্রনাথের ভাষায়, ‘শুধু কথা যখন খাড়া দাঁড়িয়ে থাকে, তখন কেবলমাত্র অর্থকে প্রকাশ করে। কিন্তু, কথাকে যখন তির্যক ভঙ্গি ও বিশেষ গতি দেওয়া যায়, তখন সে আপন অর্থের চেয়ে আরও কিছু বেশি প্রকাশ করে। সেই বেশিটুকু যে কী, তা বলা শক্ত। কেননা, তা কথার অতীত; সুতরাং অনির্বচনীয়। যা আমরা দেখছি, শুনছি, জানছি তার সঙ্গে যখন খুঁজে বের করা একটু কঠিনই হয়।
আরও দেখুন: