সংখ্যাবাচক শব্দের শ্রেণিবিভাগ – আজকের আলোচনার বিষয়। এই পাঠটি “ভাষা ও শিক্ষা” বিভাগের “সংখ্যাবাচক শব্দ” বিষয়ের একটি পাঠ। সংখ্যাবাচক শব্দ সাত প্রকার। যথা : ১. অঙ্কবাচক, ২. পরিমাণ বা গণনাবাচক, ৩. গুণবাচক, ৪. ভগ্নসংখ্যাবাচক, ৫. ভগ্নাংশবাচক, ৬. ক্রম বা পূরণবাচক ও ৭. তারিখবাচক শব্দ ।
Table of Contents
সংখ্যাবাচক শব্দের শ্রেণিবিভাগ | সংখ্যাবাচক শব্দ | ভাষা ও শিক্ষা
১. অঙ্কবাচক বা বিশুদ্ধ সংখ্যাবাচক শব্দ :
‘তিন টাকা’ বলতে এক টাকার তিনটি একক বা এককের সমষ্টি বোঝায়। আমাদের একক হল ‘এক’। সুতরাং এক + এক + এক = তিন। এভাবে আমরা এক থেকে এক শ’ পর্যন্ত গণনা করতে পারি। এক থেকে এক শ’ পর্যন্ত এভাবে গণনার পদ্ধতিকে বলা হয় দশ গুণোত্তর পদ্ধতি। আমরা দশের গুণন ও এককের সংকলন করে বিভিন্ন সংখ্যা লিখে থাকি। যেমন : এক দশ + এক = এগার (১০ + ১ = ১১), এক দশ + চার = চোদ্দো (১০ + ৪ = ১৪), চার দশ + এক একচল্লিশ (১০+১০+১০+১০+১) ইত্যাদি।
২. পরিমাণ বা গণনাবাচক সংখ্যা :
একাধিকবার একই একক গণনা করলে যে সমষ্টি পাওয়া যায় তা-ই পরিমাণ বা গণনাবাচক সংখ্যা। যেমন— সপ্তাহ বলতে আমরা সাত দিনের সমষ্টি বুঝিয়ে থাকি। সপ্ত (সাত) অহ ( দিনক্ষণ) = সপ্তাহ; এখানে দিন একটি একক। এরূপ— সাতটি দিন বা সাতটি একক মিলে হয়েছে সপ্তাহ
৩. পূর্ণসংখ্যার গুণবাচক সংখ্যা :
একগুণ এক। যেমন—
একেক্কে এক (অর্থাৎ ১ × ১ = ১), এরূপ—
সাতেক্কে = সাত (অর্থাৎ ৭ × ১ ৭), দুইগুণ = দ্বিগুণ বা দুগুণ। যেমন—
দুই দুগুণে চার (২ × ২ = ৪)।
তিনগুণ তিরিক্কে। তিন তিরিক্কে নয় (৩ × ৩ = ৯)।
চারগুণ = চার বা চৌকা। যেমন—
তিন চারে (বা চৌকা) বার (৩ × ৪ = ১২)।
পাঁচগুণ = পাঁচে। যেমন— পাঁচ পাঁচে পঁচিশ (৫ × ৫ = ২৫)।
ছয়গুণ = ছয়ে। যেমন—
তিন ছয়ে আঠার (৩. X ৬ = ১৮)।
সাতগুণ = সাতে। যেমন— তিন সাতে একুশ (৩ × ৭ = ২১)।
আটগুণ = আটে। যেমন— তিন আটে (বা তে আটা) চব্বিশ (৩ × ৮ = ২৪)।
নয়গুণ = নং বা নয়ে। যেমন—
তিন নং (বা তিন নয়ে) সাতাশ (৩ X ৯ = ২৭)।
দশগুণ = দশং বা দশে। যেমন—
তিন দশং (বা তিন দশে) ত্রিশ (৩ x ১০ = ৩০)।
বিশগুণ = বিশং বা বিশে। যেমন— তিন বিশং (বা তিন বিশে)
ষাট (৩ × ২০ = ৬০)। ত্রিশগুণ = ত্রিশং বা ত্রিশে। যেমন—
তিন ত্রিশং (বা তিন ত্রিশে) নব্বই (৩ × ৩০ = ৯০) ইত্যাদি।
তেমনি এক পঞ্চমাংশ এক দশমাংশ ইত্যাদি। এসবের আরও ভাঙতি হলে, যেমন- চার ভাগের তিন ৫ তিন -চতুর্থাংশ। আট ভাগের তিন তিন অষ্টমাংশ ইত্যাদি। এক এককের = কে পরবর্তী সংখ্যার পৌনে বলা হয়। যেমন— 8 পৌনে তিন = ২, পৌনে ছয় ৫৪ ইত্যাদি। পৌনে অর্থ পোয়া অংশ বা এক-চতুর্থাংশ কম। সওয়া = ১ (সওয়া বা 8 8 8 সোয়া এক); দেড় = ১ ; ; আড়াই = ২ । এগুলো ছাড়া অর্ধযুক্ত থাকলে সর্বত্র ‘সাড়ে’ বলা হয়, যেমন ৩ সাড়ে তিন।
৫। ভগ্নাংশবাচক শব্দ :
প্রভৃতি ভগ্নাংশ সংখ্যা তিনের এক, তিনের দুই, পাঁচের চার, সাতের ছয় (অর্থাৎ তিন ভাগের এক ভাগ, তিন ভাগের দু ভাগ, পাঁচ ভাগের চার ভাগ, সাত ভাগের ছয় ভাগ), এভাবে কিংবা এক- তৃতীয়, দুই-তৃতীয়, চার-পঞ্চম, ছয়-সপ্তম, এভাবে পড়া উচিত। এগুলোকে দশমিকে এভাবে লেখা যায় : ০.৩, ০.৬, ০.৮, ০.৮৫৭১৪২ 8

৬। ক্রমবাচক শব্দ :
একই সারি দল বা শ্রেণিতে অবস্থিত কোনো ব্যক্তি বা বস্তুর সংখ্যার ক্রম বা পর্যায় বোঝাতে ক্রম বা পূরণবাচক সংখ্যা (ordinals) ব্যবহৃত হয়। যেমন— দ্বিতীয় লোকটিকে ডাক। এখানে গণনায় এক জনের পরের লোকটিকে বোঝানো হয়েছে। দ্বিতীয় লোকটির আগের লোকটিকে বলা হয় প্রথম। এরূপ— তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম ইত্যাদি। ৭। তারিখবাচক শব্দ : বাংলা মাসের তারিখ বোঝাতে যে সংখ্যাবাচক শব্দ ব্যবহৃত হয় তাকে তারিখবাচক শব্দ বলে। যেমন— পয়লা বৈশাখ, বাইশে শ্রাবণ ইত্যাদি। তারিখবাচক শব্দের প্রথম চারটি অর্থাৎ ১ থেকে ৪ পর্যন্ত হিন্দি নিয়মে সাধিত হয়। বাকি শব্দ বাংলার নিজস্ব ভঙ্গিতে গঠিত। নিচে বাংলা অঙ্কবাচক, গণনাবাচক, পূরণবাচক ও তারিখবাচক সংখ্যাগুলো দেওয়া হল :
আরও দেখুন: