বসন্তের কবিতা | আজি বসন্ত জাগ্রত দ্বারে | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“বসন্তের কবিতা | আজি বসন্ত জাগ্রত দ্বারে” রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এক অনন্য সৃষ্টি, যা প্রকৃতি, ঋতুর সৌন্দর্য ও মানবমনের আনন্দঘন অনুভূতিকে গভীরভাবে প্রকাশ করে। এই কবিতায় কবি বসন্তের আগমনকে এক জাগরণ, এক নবজীবনের সূচনা হিসেবে চিত্রিত করেছেন। বসন্ত এখানে শুধু ঋতু নয়, এটি প্রেম, প্রাণচাঞ্চল্য এবং সৃষ্টিশীলতার প্রতীক। কবিতার প্রতিটি পঙ্‌ক্তিতে ফুলের গন্ধ, পাখির কূজন, নতুন পাতার মৃদু স্পর্শ অনুভব করা যায়। “আজিকে বসন্ত জাগ্রত দ্বারে” — এই বাক্যে এক গভীর আহ্বান ধ্বনিত হয়, যা হৃদয়কে আন্দোলিত করে এবং জীবনের প্রতি নতুন আশার সঞ্চার ঘটায়। এই কবিতা বাংলা সাহিত্যে ঋতুবোধ ও প্রকৃতিপ্রীতির এক অপরূপ নিদর্শন।

 

বসন্ত কবিতা রবি ঠাকুরের

 

বসন্তের কবিতা

আজি বসন্ত জাগ্রত দ্বারে – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (গীতাঞ্জলি)

 

আজি বসন্ত জাগ্রত দ্বারে।

তব অবগুণ্ঠিত কুণ্ঠিত জীবনে

কোরো না বিড়ম্বিত তারে।

আজি খুলিয়ো হৃদয়দল খুলিয়ো,

আজি ভুলিয়ো আপনপর ভুলিয়ো,

এই সংগীত-মুখরিত গগনে

তব গন্ধ তরঙ্গিয়া তুলিয়ো।

এই বাহির ভুবনে দিশা হারায়ে

দিয়ো ছড়ায়ে মাধুরী ভারে ভারে।

অতি নিবিড় বেদনা বনমাঝে রে

আজি পল্লবে পল্লবে বাজে রে–

দূরে গগনে কাহার পথ চাহিয়া

আজি ব্যাকুল বসুন্ধরা সাজে রে।

মোর পরানে দখিন বায়ু লাগিছে,

কারে দ্বারে দ্বারে কর হানি মাগিছে,

এই সৌরভবিহ্বল রজনী

কার চরণে ধরণীতলে জাগিছে।

ওগো সুন্দর, বল্লভ, কান্ত,

তব গম্ভীর আহ্বান কারে।

‘আহা আজি এই বসন্তে,

এতো ফুল ফোঁটে,

এতো বাঁশি বাজে এতো পাখি গায়।’

‘বসন্ত এলো এলো এলোরে,

পঞ্চম স্বরে কোকিল কুহুরে।’

‘বসন্ত আজ আসলো ধরায়,

ফুল ফুটেছে বনে বনে,

শীতের হাওয়া পালিয়ে বেড়ায় ফাল্গুনী মোর মন বনে।’

 

আজি বসন্ত জাগ্রত দ্বারে আবৃত্তিঃ

 

 

Leave a Comment