শেষ বসন্ত | বসন্ত কবিতা রবি ঠাকুরের কবিতা

বসন্ত কবিতা রবি ঠাকুরের – এখানে আজকে আমরা রবি ঠাকুরের বসন্তের কবিতা শেয়ার করেছি। যেখান থেকে আপনি আপনার মনের মত কবিতাটি পাঠ করতে পারেন এবং সেইসাথে কবিতাগুলো শেয়ার করে অন্যকেও পড়ার সুযোগ করে দিতে পারেন। তাহলে চলুন কবিতাগুলো পড়া যাক।

 

শেষ বসন্ত | বসন্ত কবিতা রবি ঠাকুরের কবিতা
শেষ বসন্ত | বসন্ত কবিতা রবি ঠাকুরের কবিতা

 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর  (৭ মে ১৮৬১ – ৭ আগস্ট ১৯৪১; ২৫ বৈশাখ ১২৬৮ – ২২ শ্রাবণ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ) ছিলেন অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। তাকে বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মনে করা হয়। রবীন্দ্রনাথকে “গুরুদেব”, “কবিগুরু” ও “বিশ্বকবি” অভিধায় ভূষিত করা হয়। রবীন্দ্রনাথের ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক,  ১৩টি উপন্যাস ও ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসংকলনতার জীবদ্দশায় বা মৃত্যুর অব্যবহিত পরে প্রকাশিত হয়।

তার সর্বমোট ৯৫টি ছোটগল্প ও ১৯১৫টি গান যথাক্রমে গল্পগুচ্ছ ও গীতবিতান সংকলনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় প্রকাশিত ও গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত রচনা ৩২ খণ্ডে রবীন্দ্র রচনাবলী নামে প্রকাশিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় পত্রসাহিত্য উনিশ খণ্ডে চিঠিপত্র ও চারটি পৃথক গ্রন্থে প্রকাশিত। এছাড়া তিনি প্রায় দুই হাজার ছবি এঁকেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের রচনা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য তিনি এশীয়দের মধ্যে সাহিত্যে প্রথম নোবেল পুরস্কার লাভ করেন

 

বসন্ত কবিতা রবি ঠাকুরের

 

শেষ বসন্ত – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আজিকার দিন না ফুরাতে

হবে মোর এ আশা পুরাতে–

শুধু এবারের মতো

বসন্তের ফুল যত

যাব মোরা দুজনে কুড়াতে।

তোমার কাননতলে ফাল্গুন আসিবে বারম্বার,

তাহারি একটি শুধু মাগি আমি দুয়ারে তোমার।

বেলা কবে গিয়াছে বৃথাই

এতকাল ভুলে ছিনু তাই।

হঠাৎ তোমার চোখে

দেখিয়াছি সন্ধ্যালোকে

আমার সময় আর নাই।

তাই আমি একে একে গনিতেছি কৃপণের সম

ব্যাকুল সংকোচভরে বসন্তশেষের দিন মম।

ভয় রাখিয়ো না তুমি মনে!

তোমার বিকচ ফুলবনে

দেরি করিব না মিছে,

ফিরে চাহিব না পিছে

দিনশেষে বিদায়ের ক্ষণে।

চাব না তোমার চোখে আঁখিজল পাব আশা করি

রাখিবারে চিরদিন স্মৃতিরে করুণারসে ভরি।

ফিরিয়া যেয়ো না, শোনো শোনো,

সূর্য অস্ত যায় নি এখনো।

সময় রয়েছে বাকি;

সময়েরে দিতে ফাঁকি

ভাবনা রেখো না মনে কোনো।

 

পাতার আড়াল হতে বিকালের আলোটুকু এসে

আরো কিছুখন ধরে ঝলুক তোমার কালো কেশে।

হাসিয়া মধুর উচ্চহাসে

অকারণ নির্মম উল্লাসে,

বনসরসীর তীরে

ভীরু কাঠবিড়ালিরে

সহসা চকিত কোরো ত্রাসে।

ভুলে-যাওয়া কথাগুলি কানে কানে করায়ে স্মরণ

দিব না মন্থর করি ওই তব চঞ্চল চরণ।

তার পরে যেয়ো তুমি চলে

ঝরা পাতা দ্রুতপদে দোলে,

নীড়ে-ফেরা পাখি যবে

অস্ফুট কাকলিরবে

দিনান্তেরে ক্ষুব্ধ করি তোলে।

বেণুবনচ্ছায়াঘন সন্ধ্যায় তোমার ছবি দূরে

মিলাইবে গোধূলির বাঁশরির সর্বশেষ সুরে।

রাত্রি যবে হবে অন্ধকার

বাতায়নে বসিয়ো তোমার।

সব ছেড়ে যাব, প্রিয়ে,

সমুখের পথ দিয়ে,

ফিরে দেখা হবে না তো আর।

ফেলে দিয়ো ভোরে-গাঁথা ম্লান মল্লিকার মালাখানি।

সেই হবে স্পর্শ তব, সেই হবে বিদায়ের বাণী।

 

গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থ এর বিস্তারিত ঃ

গীতাঞ্জলি হল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা একটি কাব্যগ্রন্থ। এই বইয়ে মোট ১৫৭টি গীতিকবিতা সংকলিত হয়েছে। কবিতাগুলি ব্রাহ্ম-ভাবাপন্ন ভক্তিমূলক রচনা। এর বেশিরভাগ কবিতাতেই রবীন্দ্রনাথ নিজে সুরারোপ করেছিলেন। ১৯০৮-০৯ সালে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় এই কবিতাগুলি প্রকাশিত হয়। এরপর ১৯১০ সালের ৫ সেপ্টেম্বর (১৩১৭ বঙ্গাব্দের ভাদ্র মাসে) গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হয়। গ্রন্থটি কলকাতার ইন্ডিয়ান পাবলিশিং হাউসের পক্ষে সতীশচন্দ্র মিত্র প্রথম প্রকাশ করেন এবং মুদ্রক ছিলেন কান্তিক প্রেসের মতিলাল গঙ্গোপাধ্যায়।

 

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

১৯১২ সালে রবীন্দ্রনাথের সং অফারিংস কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হয়। এতে গীতাঞ্জলি ও সমসাময়িক আরও কয়েকটি কাব্যগ্রন্থের কবিতা রবীন্দ্রনাথ নিজে অনুবাদ করে প্রকাশ করেন। ১৯১৩ সালে ইংরেজি কাব্যগ্রন্থটির জন্য রবীন্দ্রনাথ সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন। ২০১০ সালে গীতাঞ্জলি প্রকাশের শতবর্ষ-পূর্তি উপলক্ষে কলকাতা মেট্রোর নাকতলা স্টেশনটির নামকরণ করা হয় “গীতাঞ্জলি মেট্রো স্টেশন”।

 

শেষ বসন্ত – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আবৃত্তিঃ

 

 

Leave a Comment