হোস্টেল জীবনের অভিজ্ঞতা জানিয়ে বড় ভাইয়ের কাছে পত্র | পত্র বা চিঠি | ভাষা ও শিক্ষা

হোস্টেল জীবনের অভিজ্ঞতা জানিয়ে বড় ভাইয়ের কাছে পত্র | পত্র বা চিঠি | ভাষা ও শিক্ষা , চিঠি বা পত্র হলো একজনের পক্ষ থেকে অন্যজনের জন্য লিখিত তথ্যধারক বার্তা। চিঠি দুজন বা দুপক্ষের মধ্যে যোগাযোগ বজায় রাখে; বন্ধু ও আত্মীয়দের আরও ঘনিষ্ট করে, পেশাদারি সম্পর্কের উন্নয়ন করে এবং আত্মপ্রকাশের সুযোগ দেয়। স্বাক্ষরতা টিকিয়ে রাখতেও একসময় চিঠির অবদান ছিল।

হোস্টেল জীবনের অভিজ্ঞতা জানিয়ে বড় ভাইয়ের কাছে পত্র

সরকারি … কলেজ, কুমিল্লা ১০ জুলাই, ২০০০

শ্রদ্ধেয় ‘ক’

আমার সালাম ও শ্রদ্ধা নেবেন। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। হোস্টেলে পৌঁছানোর পরই হোস্টেলের অবস্থা জানিয়ে চিঠি লেখার জন্যে বলেছিলেন। কিন্তু চিঠি লিখতে বিলম্ব হয়ে গেল বলে দুঃখিত। আসার পথে তেমন কোনো অসুবিধে হয় নি।

 

হোস্টেল জীবনের অভিজ্ঞতা জানিয়ে বড় ভাইয়ের কাছে পত্র

 

হোস্টেল জীবন সম্পর্কে একটা অজানা ভীতি কাজ করলেও মুহূর্তেই সে ধারণা ভেঙে গেছে। আমি দোতলায় একেবারে পশ্চিম প্রান্তে সিট পেয়েছি। পড়ার টেবিলের সামনে দক্ষিণের জানালা। সামনের বাগান থেকে ভেসে আসা ফুলের সুগন্ধ আসে সে জানালা দিয়ে। আর বিছানার পাশে পশ্চিমের জানালা। গাছের আড়ালে সূর্য ডোবার সময়ে সোনালি লালচে আভায় ভরে যায় ঘর। আগেভাগে হোস্টেলে সিট নেওয়ার বেশ সুবিধাই হয়েছে বলতে হবে। কামরাটা দুজনের। দ্বিতীয়জন এখনও আসে নি। তত্ত্বাবধায়ক মফিজ স্যার বাংলার। তিনি খুবই ভালো। নিয়ম-শৃঙ্খলার ব্যাপারে খুবই কঠোর। ছাত্রাবাসে পঞ্চাশজন থাকতে পারে। এখন চল্লিশজনের মতো আছি।

 

হোস্টেল জীবনের অভিজ্ঞতা জানিয়ে বড় ভাইয়ের কাছে পত্র

 

বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা শিক্ষার্থীদের আচার-ব্যবহারের মধ্যে রয়েছে নানা বৈচিত্র্য। বিশেষভাবে কথার মধ্যে আঞ্চলিকতার টান, শুনতে বেশ ভালোই লাগে। কেউ গুণ গুণ করে গান গায়। কেউ গল্পের বইয়ের পোকা। কারো ঝোঁক খেলাধুলার দিকে। কেউ পেটানো শরীর নিয়ে ব্যস্ত। কেউ জামাকাপড়ে ফিটফাট। কারো কারো উলুঝুলু আনমনা ভাব। তবে হোস্টেলের নিয়ম-কানুন মেনে চলা আর পড়াশোনার ব্যাপারে সবাই খুব সতর্ক। খাবারদাবারেও তেমন কোনো অসুবিধে নেই। তবে খাবার নিয়ে প্রতিদিনই সবার কমবেশি অভিযোগ থাকে। কেউ বলে খাবারে লবণ বেশি, কেউ বলে কম হয়েছে।

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

কারো মাংস চাই, কারো চাই মাছ; কেউ প্রত্যেকবেলায় সবজি চায়, কেউ চায় ভর্তা। তবে ডালের পানির পরিমাণ কমাবার বেলায় সবাই একমত। যদিও প্রতি সপ্তাহের খাবারের নির্দিষ্ট তালিকা রয়েছে। সপ্তাহে দুদিন মাংস, চার দিন মাছ, একদিন সবজি। সে যাক, হোস্টেলের পরিবেশের সঙ্গে এই ক’দিনেই বেশ খাপ খাইয়ে নিতে পেরেছি। আপনার কথা বেশ মনে পড়ছে। চিঠি পেলে তাড়াতাড়ি উত্তর দেবেন। আব্বু-আম্মুকে সালাম জানাবেন।

ইতি

আপনার স্নেহের

 

আরও দেখুন:

Leave a Comment