স্বাধীনতা উৎসবের বর্ণনা দিয়ে বন্ধুর কাছে পত্র | পত্র বা চিঠি | ভাষা ও শিক্ষা

স্বাধীনতা উৎসবের বর্ণনা দিয়ে বন্ধুর কাছে পত্র | পত্র বা চিঠি | ভাষা ও শিক্ষা , চিঠি বা পত্র হলো একজনের পক্ষ থেকে অন্যজনের জন্য লিখিত তথ্যধারক বার্তা। চিঠি দুজন বা দুপক্ষের মধ্যে যোগাযোগ বজায় রাখে; বন্ধু ও আত্মীয়দের আরও ঘনিষ্ট করে, পেশাদারি সম্পর্কের উন্নয়ন করে এবং আত্মপ্রকাশের সুযোগ দেয়।

স্বাধীনতা উৎসবের বর্ণনা দিয়ে বন্ধুর কাছে পত্র

সরকারি … কলেজ, চুয়াডাঙ্গা

২৮ মার্চ, ২০০০

প্রিয় ‘ক’

শুভেচ্ছা রইল। অনেকদিন হতে চলল তোমার কোনো চিঠি পাচ্ছি না। পরীক্ষার ব্যস্ততার কারণে আমারও লিখতে দেরি হয়ে গেল। এবার তোমার কাছে আমাদের জাতীয় জীবনের একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিনের বিবরণ দিয়ে চিঠি লিখছি। আশা করি তোমার ভালো লাগবে।

 

স্বাধীনতা উৎসবের বর্ণনা দিয়ে বন্ধুর কাছে পত্র

 

২৬ মার্চ, ১৯৭১ সালে পৃথিবীর মানচিত্রে একটি দেশের অন্তর্ভুক্তি ঘটে, – বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস এ দিনটিকে ঘিরে রচিত হয়েছে। এ-স্বাধীনতা দিবসের আনন্দোজ্জ্বল মুহূর্তে প্রথমেই যে কথা মনে পড়ে, তা হল এ-দেশের অসংখ্য দেশপ্রেমিক শহীদদের আত্মদান। ১৯৭১ সালের এই দিনে এদেশের মুক্তিপাগল মানুষ পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্তির পথ খুঁজে পেয়েছিল। তাই এই দিনটি বাঙালির কাছে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। প্রতিটি বাঙালিই এই দিনটিকে স্মরণ করে নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। অন্যান্য বছরের ন্যায় এবারেও আমাদের কলেজে এই দিবসটি উদ্‌যাপন উপলক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

জাতীয়-পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে খুব ভোর থেকেই শুরু হয় অনুষ্ঠানমালা। পূর্বপ্রস্তুতির অংশ হিসেবে কলেজের ভবনসহ অন্যান্য এলাকা বর্ণাঢ্য সাজে সাজানো হয়েছিল। ছাত্রসংসদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এই কাজগুলো সম্পন্ন হয়েছিল অত্যন্ত সুচারুরূপে। ছাত্র-ছাত্রী স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে সকাল থেকেই কলেজ প্রাঙ্গণ ছিল মুখর। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সমাবেশ অনুষ্ঠানে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছিল । মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিচারণে নতুন প্রজন্মের ছাত্র-ছাত্রী মুক্তিযুদ্ধের নানা ঘটনা সম্পর্কে অবহিত হয়ে বিশেষ উপকৃত হয়। কলেজের পক্ষ থেকে মাননীয় অধ্যক্ষ মুক্তিযোদ্ধাদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

 

স্বাধীনতা উৎসবের বর্ণনা দিয়ে বন্ধুর কাছে পত্র

 

আলোচনা ও স্মৃতিচারণ পর্বে কলেজের বাংলা-বিভাগের অধ্যাপক ও বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা এক হৃদয়গ্রাহী বক্তৃতা প্রদান করেন— যা উপস্থিত শ্রোতৃবৃন্দের কাছে রাড়তি পাওনা হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল। তিনি তাঁর বক্তৃতায় বলেন, ‘আমাদের জাতীয়জীবনে এ দিনটির প্রধান তাৎপর্য হচ্ছে— এ দিনটি সমগ্র দেশবাসীর বহুকাল লালিত মুক্তি ও সংগ্রামের অঙ্গীকারে ভাস্কর। এই স্বাধীনতা দিবস দারিদ্র্য, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার মহান আদর্শে উদ্বুদ্ধ। এ দিন আমাদের আত্মপরিচয়ের গৌরবে উজ্জ্বল, ত্যাগে ও বেদনায় মহীয়ান।

আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন
আমাদেরকে গুগল নিউজে ফলো করুন

 

প্রতিবছর গৌরবময় এ দিনটি পালন করতে গিয়ে আমাদের কর্তব্য হয়ে ওঠে স্বাধীনতার স্বপ্ন ও সাধ আমরা কতটুকু বাস্তবায়ন করতে পেরেছি, জাতীয় জীবনে আমাদের অর্জন কতটুকু আর বিশ্বসভায় আমাদের অবস্থান কোথায় সেসব মিলিয়ে দেখা। এদিক থেকে এ দিনটি আমাদের আত্মসমালোচনার দিন, হিসেব মেলাবার দিন, আত্মজিজ্ঞাসার দিন।’ আলোচনা শেষে কলেজের সাংস্কৃতিক দলের পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত হয় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘ছাড়পত্র’ কবিতার আবৃতির মধ্য দিয়ে শুরু হয় এ পর্বের। স্বাধীনতা দিবসে আয়োজিত এই অনুষ্ঠান আমার স্মৃতির ভাণ্ডারে অনেকদিন উজ্জ্বল হয়ে থাকবে। আজ আর নয়। বাসার সবাইকে শ্রেণিভেদে সালাম ও স্নেহ জানিও ।

ইতি প্রীতিমুগ্ধ

আরও দেখুন:

Leave a Comment