স্বরধ্বনি নিয়ে আজকের আলোচনা। এই পাঠটি আমাদের “ভাষা ও শিক্ষা” সিরিজের, ধ্বনিতত্ত্ব বিভাগের, ধ্বনিবিজ্ঞান ও বাংলা ধ্বনিতত্ত্ব পাঠ্যগুলোর একটি।
স্বরধ্বনি
যে-বাধ্বনি উচ্চারণের সময় ফুসফুস থেকে আগত বাতাস মুখের মধ্যে কোনোভাবে বাধাপ্রাপ্ত হয় না সেগুলোই হলো স্বরধ্বনি (vowel)। স্বরধ্বনি অন্য ধ্বনির সাহায্য ছাড়া নিজেই সম্পূর্ণরূপে উচ্চারিত হতে পারে। যেমন- অ, আ, ই, উ। কিছু স্বরধ্বনি উচ্চারণের সময় বাতাস বাধাহীনভাবে একই সঙ্গে মুখ ও নাক দিয়ে বের হয়। যেমন— আঁ, ই, এঁ, ওঁ ইত্যাদি। ভাষাবিদগণ নানাভাবে স্বরধ্বনির সংজ্ঞার্থ প্রদান করেছেন।
সহজ কথায় – স্বরধ্বনি হচ্ছে এমন কিছু ধ্বনি অন্য কোনো ধ্বনির সাহায্য ছাড়াই নিজে নিজে উচ্চারিত হতে পারে। আন্তর্জাতিকভাবে এধরনের বর্ণের মৌলিক সংখ্যা ৭টি – ই, এ, এ্যা, আ, অ, ও ও উ ৷ বাংলা বর্ণমালায় স্বরধ্বনির প্রচলিত সংখ্যা ১১টি ।

যেমন : ‘যে ধ্বনি, অন্য ধ্বনির সাহায্য ছাড়াই অবাধে উচ্চারিত হতে পারে, এবং যাকে আশ্রয় করে অন্য ধ্বনি প্রকাশিত হয় তাকে বলা হয় স্বরধ্বনি। ৮ যেমন : যেমন— অ, আ, ই, উ ইত্যাদি । ‘যে সকল ধ্বনি উচ্চারণের সময় ফুসফুস-তাড়িত বাতাস বেরিয়ে যেতে মুখবিবরের কোথাও কোনো প্রকার বাধা পায় না, তাদের বলা হয় স্বরধ্বনি। ’৫ যেমন : যেমন— অ, আ, ই, উ ইত্যাদি।
“যে ধ্বনি অন্য ধ্বনির সাহায্য ব্যতিরেকে স্বয়ং পূর্ণ ও পরিস্ফুটভাবে উচ্চারিত হয়, এবং যাহাকে আশ্রয় করিয়া অন্য ধ্বনি প্রকাশিত হয়, তাহাকে স্বরধ্বনি (Vowel sound) বলে। ৬ যেমন— অ, আ, ই ইত্যাদি। বাংলা মান্য চলিত ভাষায় স্বরধ্বনি আছে সাতটি। এগুলো হলো : অ, আ, ই, উ, এ, অ্যা, ও কথা বলার সময় আমরা যে কেবল সাতটি স্বরধ্বনিই উচ্চারণ করি তা নয়। এই ধ্বনিগুলোর কাছাকাছি আরও অনেক স্বরধ্বনি আমরা উচ্চারণ করি।
তবে পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে, কথা বলার সময় আমরা যত রকম উচ্চারণই করি না কেন, সেগুলোর প্রত্যেকটিই এই সাতটির কোনো-না-কোনোটির উচ্চারণবৈচিত্র্য হিসাবে গ্রাহ্য । বাংলা ভাষায় স্বরধ্বনির সংখ্যা সাতটি হলেও এর বর্ণমালায় এখন স্বরবর্ণের সংখ্যা এগারোটি। এগুলো হলো : অ আ এই ঈ উ ঊ ঋ এ ও।
সূত্র:
- স্বরধ্বনি | অনুনাসিক স্বর | ধ্বনিবিজ্ঞান ও বাংলা ধ্বনিতত্ত্ব | অধ্যায় ৩ | ভাষা ও শিক্ষা।
স্বরধ্বনি, ধ্বনিতত্ত্ব | বাংলা ব্যাকরণ
আরও দেখুন: