স্থানীয় সরকার | সরকার ও প্রশাসন | বাংলা রচনা সম্ভার , ভূমিকা : আধুনিককালের প্রশাসনিক ব্যবস্থা পর্যালোচনা করলে একটি বিষয় সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে যে, দিন দিন স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়ে চলছে। পূর্বে কোনো রাজা বা মহারানী সমগ্র দেশকে একটি কেন্দ্রীয় প্রশাসনযন্ত্রের সাহায্যে যথেষ্ট প্রতাপের সাথে শাসন করতেন। তখন দেশের কেন্দ্রীয় সরকারই ছিল সকল ক্ষমতার উৎস। এমনকি প্রাথমিক গণতন্ত্রের যুগেও সেসব দেশে আঞ্চলিক তথা স্থানীয় সরকারের তেমন গুরুত্ব ছিল না। কিন্তু অধুনা অধিকাংশ গণতান্ত্রিক দেশেই বিকেন্দ্রীকরণ নীতি গৃহীত হয়েছে। তাই আঞ্চলিক তথা স্থানীয় সমস্যা স্থানীয়ভাবে সমাধানকল্পে স্থানীয় সরকারসমূহকে যথেষ্ট স্বাধীনতা প্রদান করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার | সরকার ও প্রশাসন | বাংলা রচনা সম্ভার
স্থানীয় সরকার
বাংলাদেশসহ অনেক দেশের সংবিধানেই এ স্বায়ত্তশাসনের অধিকার স্বীকৃত হয়েছে। দেশের ভৌগোলিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কারণে স্থানীয় সরকারের গুরুত্ব ও তাৎপর্য দিন দিন বেড়ে চলছে।
স্থানীয় সরকার : স্থানীয় সরকার বলতে স্থানীয় পর্যায়ে সরকার ব্যবস্থা অর্থাৎ কর্পোরেশন, পৌরসভা, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, গ্রাম ও অপরাপর সংস্থার কর্মতৎপরতাকে বোঝায়। এ সমস্ত কর্মতৎপরতা সাধারণত কোনো নির্দিষ্ট এলাকা বা স্থানের জনগণের সুবিধা ও কল্যাণে সম্পাদিত হয়। Prof. RM Jackson তার The Machinery of Local Government গ্রন্থে বলেন, ‘স্থানীয়’ সরকার মূলত সম্প্রদায়ের কল্যাণে বিভিন্ন সেবামূলক কাজ পরিচালনা করার এক পদ্ধতিবিশেষ ।
জাতিসংঘ স্থানীয়’ সরকারের সংজ্ঞা দিয়েছে এভাবে, ‘স্থানীয় সরকার কোনো দেশ বা রাষ্ট্রের আইনসভার অতি ক্ষুদ্র রাজনৈতিক বিভক্তিকরণকে নির্দেশ করে, কর আরোপ এবং শ্রমিক নিয়োগসহ স্থানীয় বিষয়সমূহের ওপর যাদের যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণ বিদ্যমান। এই সংস্থার পরিচালনাকারী কর্তৃপক্ষ নির্বাচিত বা স্থানীয়ভাবে মনোনীত হয়ে থাকে। জাতিসংঘ স্থানীয়’ সরকার ব্যবস্থাকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করেছে । যথা : ১. ব্যাপকভিত্তিক স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা, ২. অংশীদার পদ্ধতি, ৩. দ্বৈতপদ্ধতি ও ৪. যৌথ প্রশাসনিক পদ্ধতি । প্রত্যেক সভ্য সমাজেই স্থানীয়’ সরকারের গঠন প্রায় একই হয়ে থাকে। তবে স্থানীয় সংস্থাসমূহের স্বাধীনতা এবং তাতে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণের স্বরূপ ও পরিমাণ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে।
বাংলাদেশের সংবিধানে স্থানীয় সরকার : বাংলাদেশ সংবিধানের বিধানাবলির মধ্যে স্থানীয় শাসন সম্পর্কিত বিধানসমূহ অন্যতম। সংবিধানের রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি ভাগের ৯ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্র সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রতিনিধিগণ সমন্বয়ে গঠিত স্থানীয় শাসন সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানসমূহকে উৎসাহদান করবেন এবং এ সকল প্রতিষ্ঠানসমূহে কৃষক, শ্রমিক এবং মহিলাদেরকে যথাসম্ভব বিশেষ প্রতিনিধিত্ব দেওয়া হবে।’
১১ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘প্রজাতন্ত্র হবে গণতন্ত্র, যেখানে মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতার নিশ্চয়তা থাকবে, মানবসত্তার মর্যাদা ও মূল্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নিশ্চিত হবে এবং প্রশাসনের সকল পর্যায়ে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে।
স্থানীয় শাসন ভাগের ৫৯ ও ৬০ ধারায় স্থানীয় শাসন সম্পর্কে সুস্পষ্ট বিধান দেওয়া হয়েছে। ৫৯ (১) বিধিতে বলা আছে, ‘আইন অনুযায়ী নির্বাচিত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত প্রতিষ্ঠানসমূহের ওপর প্রজাতন্ত্রের প্রত্যেক প্রশাসনিক একাংশের স্থানীয় শাসনের ভার প্রদান করা হবে।
” ৬০ অনুচ্ছেদে ৫৯ অনুচ্ছেদের বিধানাবলীকে পূর্ণ কার্যকরতা দানের উদ্দেশ্যে সংসদ আইনের দ্বারা উক্ত অনুচ্ছেদে উল্লিখিত স্থানীয় শাসন সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানসমূহকে স্থানীয় প্রয়োজনে কর আরোপ করবার ক্ষমতাসহ বাজেট প্রস্তুতকরণ ও নিজস্ব তহবিল রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষমতা প্রদান করবে।
বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা এবং প্রত্যাশিত ক্ষমতা ও দায়িত্ব: বাংলাদেশে বর্তমানে চার স্তরবিশিষ্ট স্থানীয় শাসন সংক্রান্ত আইন পাস করে। স্তরগুলো হলো:
প্রথম স্তর—গ্রাম সরকার,
দ্বিতীয় স্তর—ইউনিয়ন পরিষদ,
তৃতীয় স্তর—উপজেলা পরিষদ ও
চতুর্থ স্তর—জেলা পরিষদ।
গ্রাম সরকার দেশের প্রত্যেক ইউনিয়নের নয়টি ওয়ার্ডে প্রতিষ্ঠিত এবং উপজেলা ও জেলা পরিষদসমূহ
যথাক্রমে দেশের প্রতিটি উপজেলা ও জেলায় প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি জেলা এ প্রক্রিয়ার বাইরে থাকবে, সেখানে পার্বত্য শান্তিচুক্তির আওতায় বর্তমানের তিনটি জেলা পরিষদ কিছু সংস্কার সাধনের পর কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।
স্থানীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যাবলী কী হওয়া উচিত? : প্রতিটি স্থানীয়’ সরকার প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য নির্ধারিত এবং বিস্তৃত কার্যক্রম থাকবে। উদাহরণস্বরূপ : গ্রাম পরিষদ প্রতিটি গ্রামে উৎপাদন বৃদ্ধি, স্থানীয় অবকাঠামো (যেমন : পাকা সড়ক, সেতু ও নর্দমা) রক্ষণাবেক্ষণ, স্থানীয় প্রাকৃতিক সম্পদের ভিত্তি উন্নয়ন, প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, মক্তব ইত্যাদির তত্ত্বাবধান, ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে অভিভাবকদের অনুপ্রাণিত করা, স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য সেবা সম্বন্ধে সচেতনতা সৃষ্টি, বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ প্রকল্প বাস্তবায়ন, বিশেষ করে নলকূপ স্থাপনের জায়গা ঠিক করে দেওয়া,
আর্থ-সামাজিক কর্মকাণ্ড গ্রহণের জন্য সমবায়/সংস্থা প্রতিষ্ঠা, গুরুত্বপূর্ণ পরিসংখ্যানসমূহ, যেমন-জন্ম, মৃত্যু ও বিবাহের উপাত্ত সংগ্রহ ও সংরক্ষণ, গ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, গ্রামের সকল গৃহস্থালীর মধ্যে সামাজিক ও অর্থনৈতিক জরিপ চালানো ইত্যাদির জন্য উন্নয়ন প্রকল্প কর্মসূচি প্রণয়নে অংশগ্রহণ করা। গ্রাম পরিষদ তাদের কার্যক্রম ও সমস্যা সম্পর্কে ইউনিয়ন পরিষদকে অবহিত করবে। অন্য তিন স্তরের স্থানীয়’ সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহ স্থানীয় পর্যায়ে উন্নয়ন কার্যক্রমের অর্থায়নে সম্পদ উন্নয়নের কর্তৃত্বসহ নিম্নোক্ত বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্ব ও কর্তৃত্বে অনুরূপ কার্যক্রমে নিয়োজিত থাকবে :
১. নিম্নোক্ত ক্ষেত্রসমূহ, যথা: ক. আইনশৃঙ্খলা, খ. স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা, গ. কৃষি, সেচ ও পরিবেশ, ঘ. শিক্ষা, সমাজকল্যাণ, মহিলা ও শিশু উন্নয়ন, ৫. ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও যুব উন্নয়ন, চ. প্রফেসর’স রচনাসম্ভার মৎস্য ও পশুপালন এবং ছ. প্রয়োজনীয় অন্যান্য ক্ষেত্রে স্থানীয় সরকারকে সহায়তা করার জন্য
স্টান্ডিং কমিটি গঠন করা, যার লক্ষ্য হবে স্থানীয় পর্যায়ে উন্নয়ন কর্মসূচি বা প্রকল্প গ্রহণ, নকশা
প্রণয়ন, গঠন ও বাস্তবায়নে সহায়তা করা, স্থানীয় সংস্থাসমূহের জন্য উন্নয়নে অগ্রাধিকার প্রাপ্ত ক্ষেত্র এবং সম্পদ সমাবেশের দায়িত্ব ও কর্তৃত্ব নির্দিষ্ট করা।
২. সংবিধানের ৫৯ অনুচ্ছেদ অনুসারে স্থানীয়’ সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসমূহকে প্রশাসনিক, বিচার বিভাগীয়, আর্থিক, উন্নয়নমূলক ভূমিকা প্রভৃতি ক্ষেত্রে স্বায়ত্তশাসন দেয়া হবে। এই স্বায়ত্তশাসন কেন্দ্রীয় ও স্থানীয়- সরকারের মধ্যে ক্ষমতা ভাগাভাগির মাধ্যমে শুধু সুশাসনে অবদান রাখবে না, উপরন্তু উত্তম সেবা প্রদানের মাধ্যমে উন্নয়ন প্রকল্প বা কর্মসূচিসমূহের ব্যবস্থাপনায় অধিক সাফল্যের নিশ্চয়তা বিধান করবে। এছাড়া জনগণ কর্তৃক প্রদত্ত ভোট গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সুফল আনতে সহায়তা করবে। কারণ এর মাধ্যমে জনগণ দেখতে পাবে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহে তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধি তাদের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করছে কিনা
৩. সিটি কর্পোরেশন ও পৌর কর্পোরেশনসমূহের বর্ণিত উন্নয়ন ভূমিকা : ইতিপূর্বে জনগণকে নাগরিক সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ ও অন্যান্য সেবা প্রদানে স্থানীয়’ সরকারসমূহ অন্যান্য সংস্থার ওপর নির্ভর করত । এ পুরনো ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে সরকার সিটি ও পৌর কর্পোরেশনসমূহকে জনগণের চাহিদা মেটাতে বর্ধিত হারে উন্নয়ন প্রকল্প কর্মসূচি গ্রহণে উৎসাহ ও ক্ষমতা প্রদান করেছে।
তাদেরকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা সেবাসমূহ পর্যবেক্ষণের আহ্বান জানানো হবে। এ প্রতিষ্ঠানসমূহকে আর্থিকভাবে সক্ষম করে তুলতে তাদেরকে অভ্যন্তরীণ সম্পদ সমাবেশের লক্ষ্যে বর্তমানের কর ভিত্তি সম্প্রসারণ এবং উদ্ভাবনী সঞ্চয় উপকরণ, যেমন : বন্ড, ডিবেঞ্চার ইত্যাদি ইস্যু করার ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। তাদেরকে বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী ও উৎপাদনকারীদের মধ্যে সমন্বয় সাধনের জন্য সমন্বয়কারীর ভূমিকা প্রদান করা হয়েছে।
পঞ্চম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় অংশীদারিত্বমূলক পরিকল্পনার কৌশলসমূহে স্থানীয় সরকার : বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি প্রণয়নের সময় জেলা পরিষদ বা উপজেলা পরিষদকে স্থানীয় পর্যায়ে উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ এবং বার্ষিক সম্পদ ব্যবহারের পরিকল্পনা গ্রহণের দায়িত্ব দেয়া হয়।
একটি কৌশল গুরুত্বপূর্ণ প্রতীয়মান হতে পারে যে, জেলাকে পরিকল্পনা একক হিসেবে বিবেচনা, উপজেলাকে স্থানীয় পর্যায়ে উন্নয়ন কর্মসূচি বা প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রধান সংস্থা এবং ইউনিয়ন পরিষদকে স্থানীয় পর্যায়ে প্রকল্প বাস্তবায়নে কার্যকর এবং তত্ত্ববধায়ক সংস্থা হিসেবে বিবেচনা করা দরকার। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ/অধিদপ্তরসমূহের স্থানীয় পর্যায়ে কর্মরত জনবলকে জেলা পরিষদ/উপজেলা পরিষদে ন্যস্ত করা উচিত, যাতে তারা এ সকল ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহায়তা ও সমর্থন দিতে পারে।
স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী করার উপায় : স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে এমন কতিপয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত, যা গণতন্ত্র ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধনে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। এ ব্যাপারে নিম্নোক্ত ব্যবস্থাসমূহ গ্রহণ করা যেতে পারে:
প্রথমত, স্থানীয়’ সরকারের অর্থ সংগ্রহ ও ব্যবহারের সাংবিধানিক নিশ্চয়তা থাকতে হবে। আমাদের দেশে বাজেট প্রণীত হয় উপরিমহল থেকে এবং তা নিম্নপর্যায়ে চাপিয়ে দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে স্থানীয়’ সরকারের কিছু করণীয় থাকে না । তাই সাংবিধানিকভাবে স্থানীয় ‘সরকারের অর্থের উৎস চিহ্নিতকরণ এবং আদায়ের ব্যবস্থাসহ নিজস্ব বাজেট প্রণয়নের একটি অংশ স্থানীয়’ সরকারকে দেওয়া যেতে পারে। এ লক্ষ্যে সাংবিধানিকভাবে একটি স্থানীয় অর্থ কমিশন গঠন করা যেতে পারে। ভারতে এরকম কমিশন রয়েছে।
দ্বিতীয়ত, প্রতিটি ক্ষেত্রেই সর্বজনীন ভোটাধিকারের মাধ্যমে নির্বাচিত প্রতিনিধি দ্বারা স্থানীয়’ সরকার প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে।
তৃতীয়ত, স্থানীয় সরকারের অধীনস্ত কর্মকর্তাদের পরিচালনার অধিকার স্থানীং সরকারকেই নিতে হবে।
চতুর্থত, স্থানীয় সরকারের নেওয়া পরিকল্পনা প্রতিটি পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় স্থান দিতে হবে।
পঞ্চমত, স্থানীয় সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
ষষ্ঠত, স্থানীয় সরকার আমলাতন্ত্রের লাঠি হিসেবে যাতে ব্যবহৃত না হয়, সেজন্য এর সাংবিধানিক স্বীকৃতি থাকতে হবে ।
স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী করার লক্ষ্যে যদি উল্লিখিত বিষয়গুলোর সাংবিধানিক রূপদান করা যায় তাহলে এর ইতিবাচক প্রভাব সামগ্রিক প্রশাসনে পড়বে বলে আশা করা যায়।
উপসংহার : গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ, অর্থনৈতিক উন্নয়নসহ মানব উন্নয়ন সম্ভব হয় শক্তিশাল স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাপনার সাথে কেন্দ্রীয় সরকারের সমন্বয়ের মাধ্যমে। এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারকে যথেষ্ট গণতান্ত্রিক হতে হবে। সংবিধানে বর্ণিত স্থানীয়’ সরকার সংক্রান্ত নীতিমালাসমূহ যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হলে দেশে একটি শক্তিশালী স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাপনা গড়ে উঠবে, যে ব্যবস্থাপনার সাথে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে। প্রকৃত অর্থে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় স্থানীয় শাসনের বিকল্প নেই।
আরও দেখুন:
- সাতই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ | ভাষা আন্দোলন-স্বাধিকার আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ | বাংলা রচনা সম্ভার
- ছয় দফা আন্দোলন | ভাষা আন্দোলন-স্বাধিকার আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ | বাংলা রচনা সম্ভার
- কহিল গভীর রাত্রে সংসার বিরাগী | সারাংশ সারমর্ম | ভাষা ও শিক্ষা
- জাতীয় জীবনে একুশে ফেব্রুয়ারির গুরুত্ব | ভাষা আন্দোলন-স্বাধিকার আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ | বাংলা রচনা সম্ভার