সেই অস্ত্র কবিতা এইচএসসি বাংলা, আলিম ক্লাস বাংলা প্রথম পত্রের, সাহিত্যপাঠ বই এর অংশ ।
Table of Contents
সেই অস্ত্র কবিতা এর কবি পরিচিতি ঃ
আহসান হাবীব বৃহত্তর বরিশাল অঞ্চলের পিরোজপুর জেলার শংকরপাশা গ্রামে ১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দের দোসরা জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম হামিজুদ্দিন হাওলাদার এবং মাতার নাম জমিলা খাতুন। স্কুলজীবনেই তাঁর কবিতা লেখার হাতেখড়ি। বরিশালের ব্রজমোহন কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় কবিকে কলেজ ছেড়ে ভাগ্যান্বেষণে কলকাতায় চলে আসতে হয়। পত্রিকা, রেডিও, প্রকাশনা সংস্থা প্রভৃতি পেশার সঙ্গে যুক্ত হলেও আহসান হাবীব শেষ পর্যন্ত সাংবাদিকতা, বিশেষ করে পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক হিসেবেই জীবিকা অর্জনের পথ বেছে নেন।
১৯৫০-এর দিকে তিনি কলকাতা ছেড়ে ঢাকা আসেন। বেশ কয়েকটি পত্রিকায় কাজ করবার পরে ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি যোগ দেন ‘দৈনিক বাংলা’ (তৎকালীন দৈনিক পাকিস্তান) পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক হিসেবে। আমৃত্যু এই পত্রিকার সঙ্গেই তিনি যুক্ত ছিলেন। তিনি ১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলা একাডেমি পুরস্কার এবং ১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দে একুশে পদকে ভূষিত হন। স্বল্পভাষী, আত্মমগ্ন, স্পষ্টবাদী এই কবি ছিলেন মূলত মানবদরদি শিল্পী। দেশ ও জনতার প্রতি ছিল তাঁর গভীর সংবেদনশীলতা। ব্যক্তিগত অনুভূতি, অভিজ্ঞতা, যুক্তিবিচারের আলোকে এক সুগভীর জীবনঘনিষ্ঠ আশাবাদী চেতনা তাঁর কবিপ্রতিভার মূল সুর।
কবি আহসান হাবীবের উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলো হলো : ‘রাত্রিশেষ’, ‘ছায়াহরিণ’, ‘সারা দুপুর’, ‘মেঘ বলে চৈত্রে যাবো’, ‘দু’হাতে দুই আদিম পাথর’, ‘বিদীর্ণ দর্পণে মুখ প্রভৃতি। এছাড়া উপন্যাস ও শিশুসাহিত্যেও তাঁর বিশেষ আগ্রহ ছিল। তিনি ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দের ১০ই জুলাই মৃত্যুবরণ করেন।
সেই অস্ত্র কবিতা
আমাকে সেই অস্ত্র ফিরিয়ে দাও
সভ্যতার সেই প্রতিশ্রুতি
সেই অমোঘ অনন্য অস্ত্র
আমাকে ফিরিয়ে দাও ।
সেই অস্ত্র আমাকে ফিরিয়ে দাও
যে অস্ত্র উত্তোলিত হলে
পৃথিবীর যাবতীয় অস্ত্র হবে আনত
যে অস্ত্র উত্তোলিত হলে
অরণ্য হবে আরও সবুজ
নদী আরও কল্লোলিত
পাখিরা নীড়ে ঘুমোবে।
যে অস্ত্র উত্তোলিত হলে
ফসলের মাঠে আগুন জ্বলবে না
খাঁ খাঁ করবে না গৃহস্থালি।
সেই অস্ত্র আমাকে ফিরিয়ে দাও
সেই অস্ত্র কবিতা এর সারমর্ম:
এই কবিতায় কবির একমাত্র প্রত্যাশা ভালোবাসা নামের মহান অস্ত্রকে পুনরায় এই মানবসমাজে ফিরে পাওয়া। কবির কাছে ভালোবাসা কেবল কোন আবেগ কিংবা অনুভূতির দ্যোতনা জাগায় না। তাঁর বিশ্বাস, এটি মানুষকে সকল অমঙ্গল থেকে পরিত্রাণের পথ বাতলে দেয়। তাই কবি বিশ্বের মানবকূলের কাছেই এই ভালোবাসা ফিরিয়ে দেবার অনুরোধ করেছেন। মানুষ যদি অপর মানুষের হিংসা, লোভ, ঈর্ষা থেকে মুক্ত থাকে তবে পৃথিবীকে বিরাজ করবে শান্তি ; পৃথিবী এগিয়ে যাবে সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধির দিকে।
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা বিদ্বেষের বিষবাস্পকে যদি অপসারণ করতে হয় তবে ভালোবাসা নামক অস্ত্রকে কবির কাছে এবং কবির মতো আরও বহু মানুষের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে। কবি জানেন, হিংসা আর স্বার্থপরতার করাল গ্রাসে অনেকেই মানবিকতাশূন্য হয়ে পড়ে। আর তাই কবি মানবিকতার সেই হৃতবোধকে ফিরে পেতে চান তথা মানব সমাজে ফিরিয়ে দিতে চান। পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিতে চান অফুরান ভালোবাসা ।
সেই অস্ত্র কবিতা এর ব্যাখ্যা ঃ
আরও দেখুন: