আজ আলাপ হবে সমাসের শ্রেণিবিভাগ নিয়ে | আলাপে আসবে সমাসের শ্রেণিবিভাগ ও সমাসের শ্রেণিবিভাগের বিভিন্ন মতান্তর নিয়ে |
Table of Contents
সমাসের শ্রেণিবিভাগ
সমাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়- সমস্যমান পদ দুটি কোথাও দুটি বিশেষ্যের সংযোগ, কোথাও তা বিশেষ্য-বিশেষণ ভাবাপন্ন, কোথাও তাদের একটি অব্যয়, কোথাও সমস্যমান পদ দুটি নিজেদের অর্থ না বুঝিয়ে অন্য কিছু বোঝায়।
সমাসের এই সব বিভিন্নতা দেখে সমাসকে প্রধানত ছয় ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন—
১. দ্বন্দ্ব সমাস
২. দ্বিগু সমাস
৩. কর্মধারয় সমাস
৪. তৎপুরুষ সমাস
৫. অব্যয়ীভাব সমাস
৬. বহুব্রীহি সমাস।
নিচের ছক লক্ষ কর :
সমাসের শ্রেণিবিভাগে বিভিন্ন মতান্তর:
বাংলা ভাষার সমাসবদ্ধ পদগুলোকে ব্যাসবাক্যের আলোকে লক্ষ করলে দেখা যায়, পদগুলোতে কখনো পূর্বপদের অর্থ প্রাধান্য পায়, কখনও পরপদের অর্থ, কখনও উভয়পদের অর্থ, আবার কখনও তৃতীয় কোনো ভিন্ন অর্থ প্রকাশ পায়। অর্থের এ বিচারে কর্মধারয় সমাসকে তৎপুরুষে এবং ঘিলুকে কর্মধারয় সমাসের অন্তর্ভুক্ত করে অর্থাৎ কর্মধারয় ও দ্বিগু সমাসকে পরপদের অর্থ প্রধান বিবেচনা করে তৎপুরুষ সমাসের অন্তর্ভুক্ত করে সমাসকে চার ভাগে ভাগ করা যায়। ড. মুহম্মদ এনামুল হক” এই বিভাগ প্রস্তাব করেছেন। যেমন :
(ক) উভয় পদের অর্থ প্রধান :
দ্বন্দ্ব সমাস। যেমন- পাপ ও পুণ্য – পাপপুণ্য, ভাই ও বোন – ভাইবোন ইত্যাদি।
(খ) পূর্বপদের অর্থ প্রধান :
অবায়ীভাব সমাস। যেমন : কূলের সমীপে – উপকূল, দিনে দিনে – প্রতিদিন ইত্যাদি।
(গ) পরপদের অর্থ প্রধান :
তৎপুরুষ সমাস। যেমন : দেবকে দত্ত = দেবদত্ত, মর্গ থেকে স্রষ্টা – বর্গভ্রষ্ট ইত্যাদি।
(ঘ) তৃতীয় কোন ভিন্ন অর্থ প্রধান :
বহুব্রীহি সমাস। যেমন: বীণা পাণিতে যার – বীণাপাণি (অর্থাৎ সরস্বতী দেবী)।
সমাস গঠনের মূল যেহেতু দুটি মাত্র পদ, সুতরাং বাংলা ভাষায় সমাস মূলত উপর্যুক্ত চার শ্রেণির (যদু, তৎপুরুষ বহুব্রীহি, অব্যয়ীভাব) বেশি হতে পারে না। সমাসের বহু উপশ্রেণীও আছে। তন্মধ্যে নিত্য সমাস, প্রাদি সমাস, নঞ সমাস, উপপদ সমাস, অনুক সমাস প্রধান। কিন্তু এদের কোনোটিই নতুন বা পৃথক সমাস নয়, প্রত্যেকেই উপযুক্ত। চার প্রকার সমাসেরই অন্তর্ভুক্ত। ফলে সমাস মূলত চার প্রকার— এই শ্রেণিবিন্যাসকে সমর্থন করা যায়।
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্র শ্রেণীবিভাগ:
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ সমাসকে প্রধানত পাঁচ প্রকার বলে মত প্রকাশ করেছেন। তাঁর মতে, অব্যয় পদ পূর্বে বসে পূর্বপদের অর্থের প্রাধান্য বোঝালে অব্যয়ীভাব, দ্বিতীয়াদি বিভক্তি লোপ পেয়ে পরপদের অর্থের প্রাধান্য পেলে তৎপুরুষ, উভয় পদের অর্থের প্রাধান্য পেলে বদু, সমস্যমান পদ দুটির কোনোটির অর্থ না বুঝিয়ে অন্য পদের অর্থ প্রাধান্য ঘটলে বহুব্রীহি এবং বিশেষণ বা বিশেষ্য পদ পূর্বে থেকে বিশেষ্য বা বিশেষণের সমাস হয়ে পরপদের অর্থ প্রধান হলে তা কর্মধারয় সমাস হবে।
আবার সমাস বিশ্লেষণ করে সমস্যমান পদ দুটির বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য অনুসারে সমাসকে নিম্ন লিখিত পাঁচ ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন—
(ক) উভয় পদই বিশেষ্য : দ্বন্দ্ব সমাস।
(খ) পূর্বপদ কারক-সম্পর্কজাত বিশেষ্য : তৎপুরুষ সমাস।
(গ) পূর্বপদ এবং পরপদ বিশেষ্য বা বিশেষণ : বহুব্রীহি, কর্মধারয় সমাস।
(ঘ) পূর্বপদ অব্যয় : অব্যয়ীভাব সমাস।
(ঙ) পূর্বপদ সংখ্যাবাচক বিশেষণ : দ্বিগু
সূত্র : সমাসের শ্রেণিবিভাগ | সমাসের শ্রেণিবিভাগে বিভিন্ন মতান্তর | ভাষা ও শিক্ষা
আরও দেখুন: